রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দুবলাবাড়ীয়া গ্রামে বিধবা নারী ও এতিম সন্তাদের জমি জবরদখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ বাড়ী বর্তমান নিজ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রী শাহিমা বেগম।
তিনি বলেন, ২০০১ সালে আমার স্বামী মারা যান। আমি আমার এক মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে চরম অসুবিধায় পরি। আমার স্বামী দেবর, ভাসুর, ননদ মিলে ৬ ভাই ২ বোন। স্বামীর মৃত্যুর পর থেকে পরিবারের অন্যান্য সদস্যগণ আমার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা জবর দখলের পাঁয়তারায় লিপ্ত হয়। আমি একা বিধবা অসহায় মহিলা মানুষ হওয়ার সুবাদে আমার উপর বিভিন্ন প্রকার মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন। অসহনীয় যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পেতে ২০০১ সালেই সন্তানদের নিয়ে দক্ষিণবাড়ী আমার ভাইয়ের বাড়ীতে চলে আসি। ছেলে মেয়েদের অতি কষ্টে মানুষ করে ছেলেকে প্রবাসে পাঠাই এবং মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেই। আমি চলে আসার পর আমার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে জবর দখল করতে আমার ভাসুর, দেবর, ননদ মিলে বসত ভিটার ঘর ভেঙ্গে আনতে বাধ্য করে। আমার ঘর সরানোর পর আমার স্বামীর ভিটা সম্প্রতি দখলে নিয়ে অবৈধভাবে ছাপড়া ঘর উত্তোলন করে বেড়া দিয়ে রেখেছে আব্দুর রহিম।
আমার স্বামী আব্দুর রহমানের পৈত্রিক সম্পত্তি রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলাধীন নবাবপুর ইউনিয়নের ৯নং ইন্দুরদী মৌজার দুবলাবাড়ী গ্রামে। ১৭৩নং খতিয়ানে ৮৩১,৮৩২,৮৩৩,৮৩৪, ,৮৩৫,৮৩৬,৮৩৭,৮৩৮,৮৩৯ ৮৪৩ ও ৯৯৩ মোট ১১ টি দাগে ৩ একর ৬২ শতাংশ জমি রয়েছে। এরমধ্েয ৮৩৪ ভিটা ২৩ শতাংশ ও ৮৩৫ বাড়ী ৩৬ শতাংশ। বাদ বাঁকি মাটিয়াল ও নাল জমি। গত ১৪ জুন ২০২৩ ইং তারিখে গোপনে আবু তাহেরের ছেলে আব্দুর রহিম আমার ননদ ফিরোজা বেগম স্বামী ওসমান এর নিকট থেকে মোট ১১ দাগে ১২ শতাংশ জমি ২৮৪৬ নং কবলা দলিল করে। ২১ জুন ২০২৩ ইং তারিখে ৭০৩৬৭৫৪ নং নামজারী আবেদন করেন। নামজারী কেস নং ৪,৩৫৯ (ওঢ-১)/২০২২ – ২৩। নামজারী খতিয়ান নাম্বার ১০৩৭। ফিরোজার নিকট থেকে ১২ শতাংশ জমি ক্রয় করেই আমার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা জোরপূর্বক দখল করে নেয় আব্দুর রহিম। আমার ননদ ফিরোজা বাড়ীর দাগ থেকে জমি পাবে ২ শতাংশের একটু বেশি। অথচ রহিম আমার স্বামীর ভিটা বাড়ী দখল করে ঘর উত্তোলন করেছে। আমি আমার এতিম ছেলে মেয়ে নিয়ে রয়েছি চরম বিপাকে।
আমার ভিটায় যেদিন ছাপড়া ঘর উত্তোলন করতে যায়, আমি সংবাদ পেয়ে মেয়েকে নিয়ে সেখানে গেলে রহিম, আবুল হোসেন, ফিরোজা বেগম, হারুন, ওয়াহিদ, আবু তাহের, লিটু, জামাল, মিরাজ, তুলি, বুলি, বর্সা ও সিরাজসহ তাদের সংঘবদ্ধদল আমাদের উপর চড়াও হয়ে। অকথ্য ভাষা প্রয়োগসহ মারতে আসলে প্রাণ ভয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে আসি। যেহেতু ফিরোজা মেয়ে সে সামাজিকভাবে নাল জমি পাবে। বাড়ীতে বসবাসের জন্য ছেলেরাই পেয়ে থাকে। অথচ আব্দুর রহিম গোপনে ফিরোজার নিকট থেকে লিখে নিয়েই নামজারীর অনলাইন আবেদন করেছেন।
আমি আপনাদের মাধ্যমে আমার এতিম সন্তানেরা সঠিকভাবে তাদের পিতার ওয়ারিশ মতো পৈত্রিক সম্পদ ফিরে পায় তার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করছি।