রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার চামটা আদর্শ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিবুল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির অন্য দুজন হলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পারমিস সুলতানা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম।
জানা গেছে, শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরে বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলীসহ স্থানীয় ১২ জন এলাকাবাসীর স্বাক্ষরে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়। অভিযোগে তারা উল্লেখ করেন, ১৯৯৯ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ২০২২ সালের জুলাই মাসে এ বিদ্যালয় এমপিও ভুক্ত হয়। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসেবে মোহাম্মদ আলী দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সাল হতে ২০২২ সালের ৬ জুলাই এমপিও ভুক্তির আগ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন সন্ধ্যা বিশ্বাস। ২০১২ সালের ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা বিশ্বাসের স্বাক্ষরিত কাগজপত্রে সহকারী শিক্ষক বিভিন্ন বিষয়ে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আভা রানী ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক হওয়ায় ওই পদটিতে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়নি। কিন্তু এরই মধ্যে দেড় বছর আগে রাতারাতি প্রধান শিক্ষক হিসেবে সরোজ কুমার বসুকে বর্তমান সভাপতি নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস নিয়োগ প্রদান করেন। সরোজ কুমার বসু স্বাস্থ্য বিভাগের যক্ষা প্রকল্পে কর্মরত ছিল। এছাড়া ব্যাকডেটে নাম সর্বস্ব পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আভা রানীকে ইংরেজির পরিবর্তে অন্য বিষয়ে এবং সনজিত কুমার রায়কে ইংরেজি বিষয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়। সনজিত কুমার রায় বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকা অবস্থায় ম্যানিজিং কমিটির দাতা সদস্য কীভাবে হলেন সে প্রশ্ন তোলা হয় অভিযোেেগ। ২০০৪ সালে ১৭ এপ্রিল থেকে শান্তি রানি মন্ডল শরীর চর্চা শিক্ষক থাকলেও বর্তমান সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক ওই পদে চন্দ্র কান্ত মন্ডলকে নিয়োগ দেখিয়েছেন।
বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক সরোজ কুমার বসু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সঠিক নয়। সনজিৎ কুমার রায়ের নিয়োগ হয়েছিল ২০০৪ সালে। একসময় সে ইউপি মেম্বার ছিল। বিভিন্ন সময় সে স্কুলে সহযোগিতা করেছে। চন্দ্রকান্ত মন্ডলকে তারা নিয়োগ দেননি। তিনি দবি করেন, মোহাম্মদ আলী কখনই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন না। এখন সে স্কুলে নেই। ১৯৯৯ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠা হলেও মূল কার্যক্রম শুরু হয় ২০০০ সালে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র বিশ্বাসও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির সদস্য পারমীস সুলতানা জানান, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।