রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পৃথক তিনটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় চারজন আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি এসব হত্যারহস্যও উদ্ঘাটন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার জেলা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানায়। এ তিনটি হত্যাকান্ড হলো প্রবাসী আলামিন, চরমপন্থী নেতা সুশীল সরকার ও শহীদ মোল্লা।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৬ এপ্রিল গোয়ালন্দ উপজেলার রাখালগাছি ট্রলার ঘাটে প্রবাসী আল আমিনকে কুপিয়ে জখমের পর নদীর মধ্যে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা। পরদিন সকালে আল আমিন এর লাশ নদীতে পাওয়া যায়। আসামীরা আল আমিনের কাছে তিন হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না পেয়ে আসামীরা পরিকল্পনা মোতাবেক এই হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। এ হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে গত রুবেল মন্ডল (২০) ও মোঃ শাকিল সরদার (২৪)কে গ্রেফতার করা হয়। তারা পাবনার আমিনপুর থানার গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা।
অপরদিকে ২০২৪ সালের ১৩ জুলাই তারিখে গোয়ালন্দ উপজেলার পশ্চিম উজানচর মাতুব্বরপাড়া গ্রামের হবি মোল্লার মেহগনি বাগানের মধ্যে শহীদ মোল্লা (৪৬)কে অজ্ঞাতনামা আসামীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। মৃত শহীদ মোল্লা সর্বহারা গ্রুপের সদস্য ছিল। তার বাড়ি পাবনা জেলার আমিনপুর থানা এলাকায়। তার বিরুদ্ধে ৩ টি হত্যা মামলাসহ ৫ টি মামলা চলমান। নদী কেন্দ্রিক চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। এই ঘটনায় গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা হয়।
মামলাটি পুলিশ নিবিড়ভাবে তদন্ত করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোয়ালন্দঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে হত্যায় জড়িত অভিযোগে খাইরুল মন্ডল (৪৬)কে গ্রেফতা করা হয়। সে পাবনার আমিনপুর থানার ঢালারচর ইউনিয়নের আইনুদ্দিন মন্ডলের ছেলে। এর আগে এ ঘটনায় আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। তারা হলো শাকিল খান (২৫) ও হাসিবুল হাসান।
একই বছরের ২২ সেপ্টেম্বর তারিখ স্ন্ধ্যা ছয়টার দিকে গোয়ালন্দ উপজেলার ছোট ভাকলা ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড কাটাখালী বাজারের তিন রাস্তার মোড় সংলগ্ন চায়ের দোকানের সামনে বেঞ্চে বসে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাতনামা আসামীরা অতর্কিত ভাবে সুশীলের গলার ডান পাশে থুতনির নিচে ও গলায় ধারালো অস্ত্র দ্বারা কুপিয়ে ও বুকের বাম পাশে পাজরের নিচে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়। এ হত্যার সাথে জড়িত তদন্তে প্রাপ্ত আসামী রুবেল শেখ (২৭)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে গোয়ালন্দ উপজেলার রাখালগাছি গ্রামের তোফসের আলী শেখের ছেলে। গত ৪ মে তারিখে মানিকগঞ্জ জেলার শিবলায় থানাধীন পাটুরিয়া ঘাটের মাছ বাজার হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে এই মামলার ঘটনায় সর্বহারা দলের সদস্য ও চরমপন্থী তোফাজ্জেল শেখ তোফা (৩৮), লোকমান শেখ (৩৫), আশিকুল শেখ ওরফে ভাষান শেখ ও জনি মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।