রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষক, তারা দুজনেই বর্তমানে আমেরিকায় বসবাস করছেন।
এর মধ্যে একজন ২ দিনের ছুটি নিয়ে, অন্যজন কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই বছরের পর বছর অনুপস্থিত রয়েছেন। ফলে শিক্ষক সংকটে বিপাকে পড়েছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় পদ শূণ্য করে শিক্ষক পদায়নের দাবি তাদের।
শিক্ষকদ্বয় হচ্ছেন খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা, অপরজন একই ইউনিয়নের দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন। সুমাইয়া খাতুন ২০২০ সালের ১৭ মার্চের পর থেকে ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। আর ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসের ৮ এবং ৯ তারিখ দুই দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে যাননি রোজিনা খাতুন।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমাইয়া সুলতানা ২০১৬ সালের ১৮ জানুয়ারি চাকরিতে যোগদান করেন। অপরদিকে একই ইউনিয়নের দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন ২০১৬ সালের ৩ আগস্ট চাকরিতে যোগদান করেন। অনুপস্থিতের মাস থেকেই তাদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। উভয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
খালিয়া মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত আছেন। পরিবার সূত্রে জানতে পেরেছি তিনি আমেরিকা আছেন, তিনি আর চাকরি করবেন না। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে, পদ শূণ্য হওয়ার অপেক্ষা মাত্র।
অন্যদিকে, দেলুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মেহেরুজ্জামান বলেন, ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে ২ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে আর বিদ্যালয়ে আসে নাই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রোজিনা খাতুন। পরবর্তীতে জানতে পারি তিনি আমেরিকা গেছেন। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অফিসকে অবগত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে বিদ্যালয় দুটির একাধিক শিক্ষক বলেন, চাকরি থেকে অব্যাহতি না দিয়ে কর্মস্থলে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকা অন্যায়। শুধু বিদ্যালয়ই নয়, এটা শিক্ষার্থীদেরও ক্ষতি করা। অব্যাহতি নিলে পদ শূন্য সাপেক্ষে শিক্ষক পাওয়া যায়, কিন্তু বিধিমোতাবেক বরখাস্ত হতে তো দীর্ঘমেয়াদী বিষয়। শুধু চাকরি থেকে বরখাস্ত নয়, সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আশরাফুল হক জানান, ছুটি ছাড়াই সুমাইয়া সুলতানা এবং রোজিনা খাতুন নামে দু’জন শিক্ষক দীর্ঘদিন যাবত কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন। এরই মধ্যে একাধিক তদন্তও হয়েছে। জানতে পেরেছি তারা আমেরিকা রয়েছেন। খুব শীঘ্রই পদ দুটি শূন্য ঘোষণা করা হবে এবং শিক্ষক পদায়নের ব্যবস্থা করা হবে বলেও তিনি জানান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী জানান, সহকারী শিক্ষক সুমাইয়ার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বিভাগীয় মামলা হয়েছে।