রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে পদ্মার মোড় নামক এলাকায় ময়লার স্তুপ যেন ছোট ছোট টিলা। মহাসড়কের একপাশে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার রাস্তা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। ফলে ওই স্থানের সামনে মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। দুর্গন্ধে চলাচলরত মানুষের জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
জানা গেছে, গোয়ালন্দ পৌরসভার স্থায়ী ডাম্পিং ব্যবস্থার কাজ শেষ না হওয়ায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে পদ্মার মোড় এলাকায় পৌরসভার সব আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ, বাতাস, মাটি ও পানি দূষিত হচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। এ মহাসড়কে যাতায়াতকারী, ব্যবসায়ী ও স্থানীয়রা এবং স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন যানবহনে চলাচলরত লোকজন ময়লাযুক্ত স্থানে আসার আগেই নাক-মুখ ঢেকে পাড় হচ্ছেন। বেশ কয়েকজন পথচারী চলাচলের সময় রুমাল অথবা নিজের গায়ের কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকছেন।
দৌলতদিয়া বেপারী পাড়ার বাসিন্দা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সুমন শেখ বলেন, প্রতিদিন ব্যবসায়ী কাজ ও অন্যান্য প্রয়োজনে এই মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার জন্য ময়লার স্থানে আসার আগেই নাক, মুখ আটকিয়ে যেতে হয়। বর্তমানে এখান দিয়ে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে পড়েছে। পৌর কর্তৃপক্ষের এদিকে নজর দেয়া খুবই জরুরী ।
রিক্সাচালক মো. মঞ্জু মোল্লা বলেন, মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঘাটে অন্তত ৮-১০ বার ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মাঝে মধ্যে চলাচলের সময় দুর্গন্ধে বমি চলে আসে। পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানটি পরিস্কারের জোর দাবী জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছাকৃত বেশ কয়েকজন পথচারী বলেন, প্রতিদিন গোয়ালন্দ বাজার, বাসস্ট্যান্ড, পৌর জামতলা বাজার থেকে পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা রাতে এবং খুব ভোরে ময়লাগুলো মহাসড়কে এনে ফেলে। তারা বলেন, ময়লাস্তুপের মাইল দেড়েক পরেই গোয়ালন্দ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী এ মহসড়ক ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিনিয়ত স্কুলে যাতায়াতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এসব শিক্ষার্থীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলায় বাতাসের মাধ্যমে বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়ায়। শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা, এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি থাকে চলাচলরত মানুষের।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মো. নাহিদুর রহমান বলেন, পৌরসভার ময়লা ফেলার ডাম্পিং স্টেশন এর কাজ ধীরগতি হওয়ার কারণটি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ভালো বলতে পারবেন। আমরা এক দু’মাস পরপর এস্কেভেটর দিয়ে পরিস্কার করে থাকি। ময়লার স্তুপের কথা আমি শুনেছি পৌরসভা থেকে ২-১ দিনের মধ্যে আবার পরিস্কার করে জায়গাটি পরিচ্ছন্ন করার ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ডাম্পিং স্টেশনের কাজের ধীরগতির বিষয়টি নিয়ে উদ্ধর্তন কতৃপক্ষকে জানানো হবে।