বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। দেশের অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজ করে তাদের জীবীকা নির্বাহ করে। দেশ আধুনিকতার ছোঁয়া পাওয়ার পাশাপাশি কৃষিতে আধুনিক হচ্ছে কৃষক। চলছে উফশী আউশ ধানের মৌসুম। গোয়ালন্দ উপজেলায় উফশী আউশ ধান কাটার ধুম পড়েছে।
উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তোরাপ শেখের পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মাঠ জুড়ে আউশ ধানের ফলন। ধান কাটা শুরু করেছে কৃষকরা। এবছর আউশ ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিটি শীষে অনেক ধান হয়েছে। আবহাওয়া ধান চাষের অনুকূল পরিবেশ থাকায় ফলনও হয়েছে প্রচুর। আশা করা হচ্ছে এবছর আউশ ধান চাষে লাভবান হবে কৃষক। প্রতি বিঘায় কমপক্ষে ২০ থেকে ২৫ মণ ধান পাওয়া যাবে।
তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা কৃষিতে পুরস্কারপ্রাপ্ত কৃষক হুমায়ন আহমেদ জানান, এবছর ২০ বিঘা জমিতে ঢাকা ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে ব্রিডা সীড এনে ব্রি ধান ৪৮ ও ৯৮ জাতের ধান রোপণ করেছি। ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এজাতটা মূলত ধানের বীজ হিসেবে সংগ্রহ করা হবে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এ দুটি জাত বাংলাদেশ ব্যাপী বীজ হিসেবে বাজারজাত করা হবে। আশা করি এই বীজ কৃষক ক্ষেতে রোপণ করলে আগামী বছর আরও ভালো ফলন পাওয়া যাবে। তিনি আরো বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার আবহাওয়া অনুকূল এবং নিয়মিত বৃষ্টি থাকায় ধানের ক্ষেতে তেমন পানি দিতে হয়নি। এক্ষেত্রে খরচ অনেকটা কম হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে যে পরিমাণ ধান হয়েছে তাতে এবার বিগত বছরের তুলনায় অনেক লাভবান হবে কৃষক। এবারের ধান ক্ষেতে পোকার আক্রমণ দেখা যায়নি। প্রতিটি শীষে ধান হয়েছে অনেক। সত্যি কথা বলতে কি এবছর আউশ ধানের বীজ সংগ্রহ করার জন্য মনস্থির করেছি। বীজ সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে এই বীজ থেকেই আগামী বছর আরও বেশি পরিমাণ জমিতে ব্রিডার সীড দিয়ে ব্রী ধান রোপণ করবো। ক্ষেত থেকে ধান কর্তনের কাজ চলছে তারপরে ধান সংগ্রহ করে বীজের জন্য প্রসেসিং করা হবে।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে গোয়ালন্দ উপজেলায় ২৯০ হেক্টর জমিতে উফশী আউশ ধান আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১৫০ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ৪৮, ১৩০ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ৯৮ এবং ১০ হেক্টর জমিতে ব্রি ধান ১৯ রোপণ করা হয়। বর্তমান জাতওয়ারী বিঘা প্রতি (ব্রি ধান ৪৮)-১৫ মন, (ব্রি ধান ৯৮)-১৪ মন এবং (ব্রি ধান ১৯)-১৩ মন ফলন পাওয়া যাবে। এ ধান থেকে বিঘা প্রতি ৫৫০ কেজি বীজ পাওয়া সম্ভব।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. রায়হানুল ইসলাম এবিষয়ে কিছু বলতে রাজী হননি।