রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মহাসড়ক সম্প্রসারণের দোহাই দিয়ে শতবর্ষী দুটি কড়ই গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও শুরু হয়েছে তোলপাড়। সকলেই গাছগুলোকে রক্ষা করে মহাসড়ক সম্প্রসারনের কাজ করার দাবি জানান।
বুধবার দুপুরের দিকে স্থানীয় কিছু যুবক শতবর্ষী গাছটির চারদিক ব্যান্ডেজ দিয়ে জড়িয়ে তাতে লাল রং লাগিয়ে রক্তাক্ত অবস্থার সৃষ্টি করেন। সেখানে লিখে দেন “আমাকে বাঁচান”। ইতিমধ্যে গাছটির কয়েকটি বড় ডাল কেটে ফেলা হয়েছে। এ সময় সেখানে স্হানীয় সাংবাদিক, ব্যাবসায়ী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষকসহ অনেকেই জড়ো হন।
গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্হানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ বলেন, এখানে গাছগুলোকে রক্ষা করেই মহাসড়ক সম্প্রসারনের জন্য যথেষ্ট ফাঁকা জায়গা রয়েছে। উন্নয়ন কাজ যেমন জরুরি, তার চেয়েও বেশী জরুরি পরিবেশ বান্ধব গাছগুলোকে রক্ষা করা।
স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিশালাকার গাছগুলো এলাকার সাধারন মানুষ ও দোকানদার, দূর-দূরান্তের যাত্রী ও ফুটপাতের মানুষদের বছরের পর বছর ধরে ছায়া দিয়ে আসছে। তপ্ত রোদে, গরমে মানুষ গাছগুলোর নিচে বসে একটু হাফ ছেড়ে নিশ্বাস নেয়। বিশ্বের কোন সভ্য দেশে এভাবে অতি উপকারী গাছপালা কেটে কোন উন্নয়ন কাজ করে না।
সাংবাদিক সিরাজুল ইসলাম ও শামীম শেখ বলেন, গাছগুলোর নিচে মাঝেমধ্যেই রাজনৈতিক সভা -সমাবেশ হয়। অনেকেই এর নিচে বসে ছোটখাট ব্যাবসা করে থাকেন। এগুলো কেটে ফেলা হলে গোটা বাসস্ট্যান্ড এলাকা খা খা করবে। আমদের এ গাছগুলো রক্ষা করা দরকার।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, গাছ দুটি এলাকার জন্য খুবই জরুরি। তবে মহাসড়কের সম্প্রসারনের জন্য টেন্ডারের মাধ্যমে বৈধভাবেই এগুলো কাটা হচ্ছে। জনসাধারনের দাবির প্রেক্ষিতে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সাময়িকভাবে গাছ কাটা বন্ধ করে দিয়েছি। এছাড়া বিষয়টি নিয়ে বনবিভাগ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের সাথে আলোচনা করব।
গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মোস্তফা মুন্সি বলেন, আমি জনসাধারনের দাবির সাথে একমত। গাছগুলো রক্ষা করে উন্নয়ন কাজ করা গেলে খুব ভাল হয়।