কৃষি মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। প্রতি বছর দেশে ৩ কোটি ৩৭ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়। আগে ভুট্টা উৎপাদন খুব একটা হতো না। এখন দেশে প্রতি বছর ৬০ লাখ টন ভুট্টার উৎপাদন হয়। দেশে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার কমেছে। মেয়েরা শিক্ষায় এগিয়ে গেছে বহুগুণ। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আয়োজনে রাজবাড়ী পৌরসভা মিলনায়তনে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি ও বিপণন বিষয়ক মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, রমজানের সময় জিনিসপত্রের দাম বাড়লে মানুষ সমালোচনা করে। মিডিয়াও ঝাঁপিয়ে পড়ে। আবার দাম কমলে উৎপাদনকারী কৃষকরা অসন্তুষ্ট হয়। বিষয়টি নিয়ে উভয় সংকটে পড়তে হয়। কৃষি উৎপাদন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের কৃষি কর্মকর্তাদের নতুন নতুন প্রযুক্তির কারণে দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। দারিদ্র, খাদ্য নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য সবকিছুর সাথে খাদ্য ও কৃষির নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপকল্প-২০২১ উপস্থাপন করা হয়েছিল। সেখানে দারিদ্র অর্ধেকে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। দারিদ্র এখন ২০ ভাগে নেমে এসেছে। এটি সরকারের এক বড় সাফল্য। প্রতি বছর দেশে ২৫ লাখ নতুন শিশুর জন্ম হয়। এদিকে কৃষিজমিও ধীরে ধীরে কমছে। এমন পরিাস্থিতিতে খাদ্য নিরাপত্তা একটা বড় চ্যালেঞ্জ। সেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা এগিয়ে চলেছি। কৃষি উৎপাদন ক্রমশ বৃদ্ধি করে চলেছি।
মন্ত্রী আরও বলেন, রমজানের কথা চিন্তা করে পেঁয়াজ আমদানী করছে সরকার। এজন্যই পেঁয়াজের দাম কম। বিষয়টি নিয়ে চিন্তার কোনো কারণ নেই। মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের সমস্যা হলো এটা ক্ষেত থেকে তুলে বিক্রি করতে হয়। ঘরে রাখা যায়না। যেকারণে পেঁয়াজ মৌসুমে দাম কম হয়। আবার আশি^ন কার্তিক মাস এলে পেঁয়াজ আমদানী করতে হয়। ভারত, চীন, বার্মা এসব দেশে দৌড়াতে হয়। গত বছর পেঁয়াজ উৎপাদন বেশি হওয়ায় আমদানী বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরে দাম বেড়ে যাওয়ায় মিডিয়া ঝাঁপিয়ে পড়লো। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন পেঁয়াজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।
বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কোথাও কোনো অভাব নেই। অথচ বিএনপি এসব বিষয় নিয়ে মিথ্যাচার করছে। বিএনপি আমলে দেশে মঙ্গায় মানুষ মারা গেছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অন্যদের মাঝে বক্তৃতা করেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী, রাজবাড়ী-২ আসনের সংসদ সদস্য জিল্লুল হাকিম, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সালমা চৌধুরী রুমা, খোদেজা নাসরীন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বেনজীর আলম, রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক আবু কায়সার খান, রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শহীদ নুর আকবর প্রমুখ।