রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা ধান আধুনিক যন্ত্র দিয়ে কর্তন করা শুরু হয়েছে। এতে ব্যাবহার করা হয়েছে কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিন। এবং এই অঞ্চলের কৃষকরা মনে করে এটা তাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ।
উপজেলার দেবগ্রাম ও ছোট ভাকলা ইউনিয়ন এলাকায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা ৫০ একর জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। খুব সহজেই হাতের ছোঁয়া ছাড়া কম্বাইন হারভেস্টারের সাহায্যে ধান কেটে কৃষকেরা ফসল ঘরে তুলছেন। এতে শ্রমিক-সংকটসহ নানা প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। ধানের উৎপাদন খরচও কমেছে অনেকটা।
গত রবিবার বিকেলে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কার্যক্রম উদ্বোধন করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা মুন্সি।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খোকন উজ্জামান, উপজেলা প্রকৌশলী বজলুর রহমান, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা ড. শাহ মো. ইউসুপ আলী, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান, উপজেলা উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুলফিকার মিয়া প্রমুখ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, কৃষিতে যন্ত্রের ব্যবহার সহজ করতে ৫০ একর জমি একত্র করে সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করা হয়েছিল। চলতি মৌসুমের ২২শে জানুয়ারী আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ করা হয়। এর আগে বিশেষ ট্রেতে চারা তৈরি করা হয়। রোপণকৃত ধান হারভেস্টার মেশিনে কর্তন করে কৃষকরা তা ঘরে তুলছেন। তিনি আরও বলেন, এই পদ্ধতিতে শ্রমিক-সংকট ও নানা প্রতিবন্ধকতা দূর হয়েছে। কমেছে উৎপাদন খরচও। এ প্রকল্পের কৃষকদের জন্য বীজ ধান, চারা তৈরি, রোপণ, সার এবং ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষকেরা শুধু সেচের পানি ও চাষের টাকা খরচ করেছেন।
ওই এলাকার সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করা কৃষক ইদ্রীস আলী শেখ বলেন, আমরা বিঘা প্রতি ২৫/৩০ মন ধান পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য অনেক কিছু করেছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, সমলয় পদ্ধতিতে বিস্তীর্ণ জমি একত্র করে একই সময়ে একই সঙ্গে আধুনিক যন্ত্রের মাধ্যমে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়। ট্রে ও পলিথিনে বিশেষ পদ্ধতিতে তৈরি করা হয় বীজতলা। চারা তৈরি হতে সময় লাগে প্রায় ২২/২৪ দিন। সেখান থেকেই বীজ নিয়ে বপন করা হয় খেতে। চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের ৭০ জন কৃষকের ৫০ একর জমিতে এমন সমলয় পদ্ধতিতে ধানের চাষাবাদ করা হয়েছিল।
এ কর্মসূচির আওতায় জমিতে যন্ত্রের মাধ্যমে ধানের চারা রোপণ থেকে কর্তন পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া শেষ হবে। এতে উৎপাদন খরচ কমার পাশাপাশি ধান চাষে লাভবান হবেন কৃষকরা।