রাজবাড়ীতে ভালো হয়েছে ধনিয়ার আবাদ। যে কারণে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। জেলার বিভিন্ন ক্ষেতে শোভা পাচ্ছে ধনিয়া। কৃষি বিভাগও আশা করছে চলতি মৌসুমে রাজবাড়ী জেলায় ধনিয়ার বাম্পার ফলন হবে । এ বছর রাজবাড়ীতে ১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে ধনিয়ার আবাদ হয়েছে। যা গত অর্থ বছরে ছিল ১৫৩৬ হেক্টর।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, রাজবাড়ী সদর উপজেলায় ৭৭০ হেক্টর, গোয়ালন্দ উপজেলায় ৩৪২ হেক্টর, পাংশা উপজেলায় ৩৩ হেক্টর, কালুখালী উপজেলায় ৮৫ হেক্টর এবং বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৫০ হেক্টর জমিতে ধনিয়ার আবাদ করেছেন চাষিরা। এ বছর রাজবাড়ী জেলায় ১ হাজার ৬৫৬ মেট্রেক টন ধনিয়া উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা গত অর্থ বছরে ছিল ১৭০০ মেট্রিক টন।
ধনিয়া চাষাবাদে কঠোর পরিশ্রম করছে কৃষক। এক বিঘা জমিতে ৩০ থেকে ৩৫ মন ধনিয়া হয়। ৩০ হাজার টাকা খরচ হলেও বিক্রি করা যায় দেড় লাখ টাকায়। ধনিয়া ৪০ দিনের ফসল। ৪০ দিনে এর চাষ করে বিক্রি করা যায়। এক জমিতে কয়েক বার ধনিয়া চাষ করা যায়। এক জমিতে বিভিন্নভাবে বছরে চার বার রবি শস্য চাষ করা যায়। এক বিঘা জমিতে ধনিয়া চাষ করে কৃষক যে লাভ পেয়ে থাকেন অন্য কোনো ফসলে এত ভালো লাভ তারা পান না। রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, একরের পর একর জমিতে শুধু ধনিয়ার চাষ হচ্ছে। এ অঞ্চলের অধিকাংশ চাষি উচ্চ ফলনশীল জাতের ধনিয়ার চাষাবাদ করছেন।
ধনিয়া চাষীরা বলেন, ২০ শতাংশে ৩ মণ ধনিয়ার ফলন আশা করছেন তারা। গত বছর বাজারে প্রতি কেজি ধনিয়া ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলেন। এবছর ভালো দাম পাবেন বলে আশা তাদের। তারা জানান, ধনিয়া চাষ করে অনেক চাষি লাভবান হয়েছেন। ধনিয়া স্বল্প সময়ের ফসল। বাজারে ধনিয়ার চাহিদা অনেক বেশি তাই এর জন্য ভালো দাম পেয়ে থাকেন কৃষকরা।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী মো. জাহিদুর রহমান বলেন, রাজবাড়ী জেলা ধনিয়া চাষে বিখ্যাত। আমরা নিয়মিত এ অঞ্চলের চাষিদের ধনিয়া চাষাবাদে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। মাঠ পর্যায়ে প্রতিটি চাষিদের খোঁজ খবর রাখি। এ বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ধনিয়ার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছি।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. রফিকুল ইসলাম জানান, রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলা একটা কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা। এ উপজেলায় মোট আবাদী জমির পরিমাণ ১৭ হাজার ৫৯৪ হেক্টর। বালিয়াকান্দি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৮৫ হেক্টর জমিতে ধনিয়ার চাষাবাদ হয়েছে। বালিয়াকান্দিতে কৃষকেরা উচ্চ ফলনশীল জাতের ধনিয়ার চাষাবাদ করেন। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও মাঠ পর্যায়ে উপ- সহকারী কৃষি কর্মকর্তাসহ আমরা সার্বক্ষণিকভাবে কৃষকদেরকে নতুন প্রযুক্তি যার ফলন বেশি সে বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি। ধনিয়ার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা নিবিড়ভাবে কাজ করছি। এবছর রাজবাড়ীতে ১ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে ধনিয়ার আবাদ হয়েছে।