“দুর্নীতি আর সাম্প্রদায়িকতা, নির্মূল করবে বীর জনতা” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদ ১-৭ মার্চ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ০৭ দিনব্যাপী “বাংলাদেশ পথনাটক উৎসব- ২০২২” এর আয়োজন করেছে। সারা দেশ থেকে আগত বিভিন্ন নাট্যদলের চল্লিশটি পথনাটক প্রদর্শিত হয়েছে। উক্ত উৎসবে রাজবাড়ী স্বদেশ নাট্যাঙ্গনের পরিবেশনা “হৃদয়ে রক্তক্ষরণ” নাটকটি গত ০৬ মার্চ প্রদর্শিত হয়েছে। প্রদর্শনী কালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়টোর ফেডারেশনের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য অনন্ত হীরা, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গিয়াস, উৎসব আহবায়ক মোহাম্মদ শানোয়াজ সহ কার্যনির্বাহী পরিষদের সম্পাদক ও সদস্যগণ। নাটক প্র্রদর্শনী শেষ হতে নাট্যাঙ্গন ঢাকা ও ঢাকার বাইরে চারটি নাটকের আমন্ত্রণ পেয়েছে।
নাটকের রচয়িতা অজয় দাস তালুকদার ও নির্দেশনায় ছিলেন উচ্ছ্বাস কুমার ঘোষ। অভিনয় শিল্পী হিসেবে ছিলেন – অনিক দাস উত্তম, উচ্ছ্বাস কুমার ঘোষ, নাজমুল হাসান জিহাদ, শারমিন খাতুন, রেজোয়ান হোসেন, মোঃ সাগর ও ইশারা খাতুন। আবহ সংগীত- শোহার্ত্য আলম, দোতারা বাবু। নেপথ্যে সিরাজুল ইসলাম ও যাকারিয়া খান জনি। নাটক সম্পর্কে জানতে চাইলে নাট্যকার অজয় দাস তালুকদার বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙ্গালী জাতির গৌরবময় অধ্যায়ে আছে অনেক রক্তঝরা ইতিহাস। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে মুক্তিযোদ্ধা একদল আশ্রয় গ্রহণ করে যশোরের শ্যামনগরে। মুক্তিযোদ্ধারা ভুলবশত আশ্রিত হয় এক রাজাকারের বাড়ি। তারা জীবনে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হয় সেই রাতেই। আশ্চর্যজনক, সেই রাজাকারের একমাত্র কন্যার বীরত্ব ও দেশপ্রেমে জীবন রক্ষা পায় মুক্তিযোদ্ধাদের। রাজাকারের কন্যার দেশপ্রেমে এই জনপদের এক অনন্য ইতিহাস। পাক বাহিনীর গুলিতে শহীদ হয় সেই কন্যা। এই রক্ত ইতিহাসের বিজয় পতাকার হৃদয় রক্তক্ষরণ।
সংগঠনের সভাপতি মাসুদুজ্জামান ফিরোজ বলেন, ২০১৩ সাল থেকে স্বদেশ নাট্যাঙ্গন, রাজবাড়ী দেশীয় লোকজ ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধের উপরে একাধিক কাজ করে চলেছেন এটি তার ব্যতিক্রম নয়। আমরা এই নাটকের ৮টি ও বেশি প্রদর্শনী করেছি রাজবাড়ী জেলা শহর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে। নাটকের রচয়িতা তার নিপুণ দক্ষতায় ও সত্য ঘটনা অবলম্বনে শিল্প ও সাহিত্যের মান পরিমাপ করে অনন্য একটি পথনাটক তৈরি করেছেন এবং নিদের্শক তার গুণগত মান অক্ষুন্ন রেখে তা মঞ্চে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। তাই আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করি। একই সাথে উক্ত নাটকে যে সকল অভিনয় শিল্পী মুক্তিযুদ্ধের লালিত স্বপ্ন কে বুকে ধারণ করে কাজ করেছেন, দর্শকের মাঝে তার অভিনয় শিল্প দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছেন তাদের প্রতি অনেক ভালোবাসা ও স্নেহ প্রকাশ করি। সাথে সেই সাথে আমাদের আমন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি ও উৎসব আহ্বায়ক এর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে।