দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ শুভ উদ্বোধন। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় এই নৌরুটের গুরুত্ব কমে যাবে এমনি আশংকা করছেন দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় পারের সাধারণ মানুষ। তবে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ বলছেন এই নৌরুটের ফেরি কমানো হবে না বরং বৃদ্ধি করা হবে।
দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার সাধারণ মানুষের রাজধানী সাথে যোগাযোগের প্রধান নৌপথ দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট। দক্ষিণ-পশ্চিঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের কাছে এই নৌরুট গুরুত্ব বহন করে এসেছে এযাবৎ। কিন্ত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে এই নৌরুটের গুরুত্ব কমে যাবে বলে আশংকা করছেন ঘাট সংশ্লিষ্টরা।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় ফেরি ও লঞ্চ ঘাট এলাকা সরেজমিন ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে যানবাহনের সংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে। যানবাহন চালক এবং যাত্রীরা সহজে গন্তব্যস্থানে যাওয়ার জন্য পদ্মা সেতু ব্যবহার করবে। তবে এই নৌরুটে দৌলতদিয়া ঘাটে বন্দর হলে আমদানি-রপ্তানী বৃদ্ধি পাবে।
দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য উজ্জল হোসেন বাবু বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া দুর্ভোগ কমবে। তবে ঘাট সংশ্লিষ্টদের রক্ষা এবং উন্নয়ন করতে হলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট আধুনিকায়ন করতে হবে। নারায়ণগঞ্জ-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম থেকে স্বল্প খরচে দক্ষিণাঞ্চলে সহজে মালামাল নেওয়ার জন্য দৌলতদিয়া বন্দরের কোন বিকল্প নেই। সুতরাং দৌলতদিয়া ঘাটের আধুনিকায়নের কাজ শুরু করতে হবে।
নজরুল ইসলাম বাবু নামের এক ব্যক্তি বলেন, পদ্মা সেতু শুরু হলেও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে কোন প্রভাব পরবে না। তবে ফেরি গুলো সচল রাখতে হবে। ফেরি সংখ্যা কমে গেলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের গুরুত্ব কমে যাবে।
পন্যবাহী ট্রাক চালক হাসমত সরদার জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের উভয় পারে যানজট না থাকলে অনেকে এই নৌরুট ব্যবহার করবে। তবে যানজট থাকলে সহজে যাওয়ার জন্য পদ্মা সেতু ব্যবহার করবে। এই নৌরুট সচল রাখতে হবে ফেরি কমানো যাবে না। বরং বৃদ্ধি করতে হবে।
দৌলতদিয়া শ্রমিক নেতা নুরুল ইসলাম নুরাল জানান, দৌলতদিয়া ঘাট আধুনিকায়ন করার কোন বিকল্প নেই। দৌলতদিয়া ঘাট আধুনিকায়ন হলে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের গুরুত্ব আরোও কয়েক গুন বৃদ্ধি পাবে।
এই শ্রমিক নেতা আরোও বলেন, স্বল্প ব্যয় এবং নিরাপদে মালামাল পরিবহন করতে নৌ ও রেল পথের বিকল্প নেই। সেই হিসেবে রাজধানী-চট্টগ্রাম-চাঁদপুর সহ বিভিন্ন জেলার মালামাল দক্ষিণ-পশ্চঞ্চলের স্বল্প ব্যয়ে নেওয়ার জন্য নৌপথ ব্যবহার করবে।
বাংলাদেশ অভ্যান্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা বন্দরের উপপরিচালক শাহ্ খালেদ নেওয়াজ জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরি কমানোর কোন সম্ভবনা নেই। বরং এই নৌরুটের ফেরি আরোও বৃদ্ধি করা হবে। ঈদে এই নৌরুটে ১২টি রোরো (বড়), ৬টি ইউটিলিটি (ছোট), ২টি ড্রাম ও ১টি কে-টাইপ সহ মোট ২২টি ফেরি চলাচল করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ব্যবহার করে প্রতিদিন প্রায় ৮হাজার বিভিন্ন প্রকার যানবাহন নদী পারাপার হয়। কিন্ত এই নৌরুটে চাহিদা ৮হাজারের অধিক যানবাহন। যে কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় পারে প্রতিনিয়ত যানবাহন ফেরি পারের অপেক্ষায় থাকে। পদ্মা সেতু উদ্বোধন হওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া উভয় ফেরি ঘাট যানজট মুক্ত হবে। তবে যানবাহনের সংখ্যা কমবে না। সুতরাং ফেরির সংখ্যা কমানোর কোন সম্ভবনা নেই।