রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ খবর:
পদ্মা নদী থেকে যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার বাফুফে সভাপতিকে সম্মাননা স্মারক দিয়েছে গোয়ালন্দ ফুটবল একডেমী বাফুফে’র এক তারকা সনদপত্র পেল গোয়ালন্দ ফুটবল একাডেমী স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের আলোচনা মহিলা পরিষদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘দক্ষ সংগঠক গড়ে তুলি, সংগঠনকে সংহত করি’ গোয়ালন্দ সাংবাদিক ইউনিয়নের আত্মপ্রকাশ ব্যবসায়ীদের নিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজ করলেন হাটের ইজারাদার গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন সভাপতি আজু, সম্পাদক শহিদুল রতন ক্লিনিকে সিজারের পর প্রসূতির মৃত্যু বাজার ব্যবসায়ীদের সাথে সাবেক এমপি খৈয়মের মতবিনিময়

পাখির অভয়ারণ্য বেতকা-রাখালগাছি চরাঞ্চল

মো. সাজ্জাদ হোসেন, গোয়ালন্দ ॥
  • Update Time : শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৫৮ Time View

প্রকৃতির অপার সম্ভানাময় দেশ বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পথে-ঘাটে, দিগন্ত জুড়ে ফসলের মাঠে যেদিকেই তাকানো যায় সেদিকেই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য চোখে পড়ে। তেমনি বেতকা ও রাখালগাছির সৌন্দর্য দেখার মতো। হাজার হাজার পাখির বসবাস সেখানে। দলবেঁধে বসে আছে নদীর পাড়ে আবার কখনো যন্ত্রচালিত ট্রলারের শব্দে উড়ে যাচ্ছে আকাশ পানে। এক কথায় বলা যায় পাখির মুক্ত বিচরণের নিরাপদ স্থানও বেতকা ও রাখালগাছি।

সরেজমিনে গিয়ে দলবদ্ধ পাখির কিচিরমিচির শব্দ, নদীর মাজ বরাবর পানকৌড়ির ডুবোডুবির দৃশ্য চোখে পড়ে। দলবেঁধে পাখিগুলো এক স্থান থেকে আরেক স্থানে মনের আনন্দে উড়ে বেড়াচ্ছে। কোনো বাধা বিপত্তি ছাড়াই মুক্ত আকাশে বিচরণ করছে তারা। গ্রাম দুটি চারপাশে নদীর মধ্যে যেনো জেগে উঠা একটি দ্বীপ। সেখানকার মানুষের প্রধান পেশা কৃষি কাজ ও মৎস্য শিকার। নদীর বুকে মাছ ধরেই অনেকে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে। এলাকাটি বছরের বেশিরভাগ সময় পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বর্ষাকালে চারিদিকে শুধু পানি আর পানি। তাদের কৃষি পণ্য বহন ও যাতায়াতের বাহন নৌকা ও ঘোড়ার গাড়ি। সেখানকার মানুষের শহরে যাতায়াতের রয়েছে ধরাবাধা নিয়মকানুন। একটি নির্দিষ্ট সময়ে তাদের নদী পথে চলাচল করতে হয়। তবে গো-খাদ্য ও পাখির অভয়ারণ্েযর উৎকৃষ্ট স্থানও বলা হয়ে থাকে বেতকা-রাখালগাছি চরাঞ্চলকে।

বেতকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের বেশিরভাগ মানুষ নদীর সাথে যুদ্ধ করে তাদের জীবন অতিবাহিত করে। ঠিক তেমনি দীর্ঘ যুগের পর যুগ নদীর সাথে যুদ্ধ করেই বেঁচে আছে একটি জনগোষ্ঠী। আর এরা হচ্ছে বেতকা ও রাখালগাছি বসবাসরত জনগোষ্ঠী। পাখিদের অভয়ারণ্য চোখে পড়ার মতো গ্রাম বেতকা-রাখালগাছি। নদীর কূল ঘেষে বিচরণ করছে কয়েক প্রজাতির পাখি। নদীর দু-কূল জুড়েই চোখে পড়ে বিভিন্ন প্রজাতির বক, পানকৌড়ি, ডাহুক ও বন পাতিহাস। এ যেনো পাখির স্বর্গরাজ্য।

বেতকা ও রাখালগাছি চরের বাসিন্দা আক্কাছ কাজী, জসিম উদ্দিন মন্ডল, মো. কাশেম মন্ডল, আলম মৃধা, মোহন প্রামানিক বলেন, এহন নদীতে তেমন পানি নাই। তই পাখির আনাগোনা আছে মেলা। এহানে পাখিরা মনের আনন্দে ভয়-ডর ছাড়া ঘুরে বেড়ায়। এহন আর কয়ডা পঙ্খী আছে! ঠান্ডার দিন আইলে মেলা কুটুম পাখি মানে (অতিথি পাখি) আসে এহানে। ঠান্ডার দিন মেলা পাখি দেখা যায় এই নদীর বুকে। সত্যি কথা বলতে কি পাখিদের পাশাপাশি গরু, ঘোড়া, মহিষ ও ছাগলের খাওনের অভাব নাই আমাদের চরে। পাখিরা মনের আনন্দে নদীর এপাড় থেকে ওই পাড়ে ঘুরে বেড়ায়। ঠান্ডার দিন পাখির মেলা বসে আমাদের গাঙ্গে। তারা আরও বলেন, আমাদের এহানে পাখিদের উড়াউড়িতে কোনো বাধা নেই। কেউ পাখি ধরেও না আবার তাড়িয়েও দেয় না।

কাতার প্রবাসী কেএম সোহেল মাহমুদ বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর দেশের বাইরে থাকার পর শেখরের সন্ধানে বাপ-দাদার জন্মস্থান বেতকা-রাখালগাছি গিয়েছিলাম। শহরের কোলাহল থেকে গ্রামের সৌন্দর্য উপভোগের ইচ্ছা ছিলো অনেক দিনের। এবার দেশে আসার পরে গোয়ালন্দ উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চল বেতকা-রাখালগাছি যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে না গেলে বুঝতাম না গ্রামের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক দৃশ্য এতো মনোরম। পাখির কিচিরমিচির শব্দ, পানকৌড়ির ডুবোডুবির দৃশ্য আর লম্বা লম্বা গলা নিয়ে গুটি গুটি পায়ে সাদা বকের মাছ শিকারের দৃশ্য। এ যেন পাখপাখালির স্বর্গরাজ্য। সবচেয়ে বেশি ভালোলাগার বিষয় হচ্ছে সেখানে পাখিদের মুক্ত বিচরণে কোনো প্রকার বাধা বিপত্তি নেই। মনের আনন্দেই পাখিগুলো উড়ে বেড়ায় সেখানে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com