রাজবাড়ীতে জেলা পর্যায়ের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র রাজবাড়ী জেলা সদর হাসপাতাল। প্রতিদিন শত শত মানুষ ছোট-বড় বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা নিতে আসেন এ হাসপাতালে। বেশ কয়েকমাস যাবত এ হাসপাতালের আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তি পোহাচ্ছেন হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা।
মেশিনটি মেরামত করা হলেও সনোলজিস্ট এর অভাবে এখনো শুরু হয়নি এ সেবা। বাধ্য হয়ে রোগীদের পরীক্ষাটি করাতে হচ্ছে বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে। যেখানে তাদের গুনতে হচ্ছে হাসপাতালের তুলনায় অতিরিক্ত ৫ গুণ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আসা রোগীরা হাসপাতালের বহির্বিভাগের চিকিৎসকের পরামর্শে আসছেন আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর জন্য। তবে এসেই দেখছেন রুমটি তালাবদ্ধ রয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে পরীক্ষাটি করাতে যাচ্ছেন আশেপাশের কোনো ক্লিনিক বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। দরিদ্র পরিবারের মধ্যে অনেকেই বলছেন প্রায় ৫ গুণ বেশি টাকায় পরীক্ষা করিয়ে পরে ঔষধ চালাবো কীভাবে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, স্বাভাবিক সময়ে গড়ে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী এ হাসপাতাল থেকে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা সেবা নিয়েছে। তবে চলতি বছরের পুরো সময় ধরেই বন্ধ রয়েছে এখানকার আল্ট্রাসনোগ্রাম সেবা। বেশ কয়েকমাস যাবত আল্ট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি বিকল হয়ে ছিল। গত বছরের শেষের দিকে একবার মেশিনটি মেরামত করা হয়েছে। মাত্র কিছুদিন চলে আবার বিকল হয়ে পড়েছিল মেশিনটি। বেশ কয়েকমাস পরে এখন মেশিনটি পুনরায় মেরামত করা হলেও সনোলজিস্ট বা এ সংক্রান্ত চিকিৎসকের অভাবে সেবাটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
পেটে ব্যাথার চিকিৎসা নিতে আসা জান্নাতুল খাদিজা বলেন, আমি পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালে এসেছি। চিকিৎসক আমাকে আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে পরামর্শ দিয়েছেন। এখানে এসে দেখি আল্ট্রা রুমটি তালাবদ্ধ। কাউন্টারে জিজ্ঞাসা করায় তারা জানালো এখানে সেবাটি বন্ধ রয়েছে। পরে বাধ্য হয়ে পেটে ব্যাথা নিয়ে হাসপাতালের বাইরে গিয়ে একটি ক্লিনিক থেকে পরীক্ষাটি করিয়ে এলাম।
দিনমজুর অধীর দাস বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে এসেছি। ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম করাতে বলেছেন। এখানে এসে দেখি রুমটা বন্ধ। পরে একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে ৫শ টাকা দিয়ে পরীক্ষাটি করাতে হলো, শুনেছি হাসপাতালে পরীক্ষাটা করাতে মাত্র ১শ ১০ টাকা লাগতো। এতটাকা দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে, পরে আবার ঔষধ কিনে চিকিৎসা চালানো বর্তমান সময়ে আমাদের জন্য কষ্টকর।
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. জিয়াউল আহসান বলেন, হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি মেরামত করা হয়েছে। তবে সেবাটি এখনও বন্ধ রয়েছে সনোলজিস্ট চিকিৎসক সংকটের কারণে । আমরা এটা চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছি।