রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর:
অন্ডথলির রোগ ভুগছেন অনেক পুরুষ -ডা. রাজীব দে সরকার গোয়ালন্দে দুরন্ত ক্রিকেট একাদশ অর্জিত ট্রফি প্রদর্শনী পাংশায় যুবদল নেতাকে লক্ষ্য করে গুলি, প্রতিবাদে বিক্ষোভ রাজবাড়ীতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার ১ রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা বাস্তবায়নে কালুখালীতে বিএনপির জনসমাবেশ রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মিজ সুলতানা আক্তার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ রাজবাড়ী জেলার সদর উপজেলার খানখানাপুর বাজার এলাকার আব্দুল গণির পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করেন মা যে তথ্য দেবে সেই তথ্যের উপরই জন্ম নিবন্ধন করতে হবে কেকেএস ও ফ্রিডম ফান্ডের আয়োজনে সুবিধাবঞ্চিত শিশু ও তাদের মায়েদের জন্ম নিবন্ধন নিশ্চিতকরণে অ্যডভোকেসি সভা পাংশায় যুবদল নেতা ফরহাদের উপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ সোনাপুর বাজারে ব্যবসায়ীকে মারপিটের প্রতিবাদে সমাবেশ ইয়াবাসহ গ্রেফতার মাদক ব্যবসায়ী

যুদ্ধকালীন মেডিকেল ক্যাম্প

নেহাল আহমেদ ॥
  • Update Time : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮২ Time View

মুক্তিযুদ্ধের সময় সারাদেশে ডাক্তারদের একটি গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা ছিলো। সরাসরি যুদ্ধ হয়তো অনেকেই করেন নাই কিন্তু যারা যুদ্ধ করেছেন, আহত হয়েছেন তাদের চিকিৎসা দেবার জন্য দেশের অনেক স্থানেই গড়ে উঠেছিলো মেডিকেল ক্যাম্প।

মুক্তিযুদ্ধের সময় আহতদের জটিল ও সমন্বিত চিকিৎসাগুলো দেওয়া হতো মূলত ভারতীয় কোনো হাসপাতালে। জরুরী প্রয়োজনে দেশের মধ্যে গড়ে ওঠা এই অস্থায়ী ক্যাম্প গুলো সেই গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা পালন করেছিলো। মুক্তিযুদ্ধে প্রাণ হারানোর সঙ্গে যোগ হয় শত শত মানুষের গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনাও, যাঁদের হাসপাতালে নিয়ে সেবা দেওয়ার সুযোগ ছিল না। তখন এগিয়ে এসেছিলেন পল্লি চিকিৎসক, কম্পাউন্ডার বা খুব সাধারণ মানুষ। এমন অসংখ্য সহমর্মিতার গল্পই মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা।

রাজবাড়ী জেলার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে মেডিক্যাল ক্যাম্পে দায়িত্ব নেন ডা গোলাম মোস্তফা। তার ভুমিকা ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। মুক্তিযুদ্ধের চিকিৎসা ইতিহাস’ এক অমূল্য দলিল। স্বাধীনতার ৫২ বছর ধরে মুক্তিযুদ্ধের বহু স্তরের ইতিহাস নিয়ে আলোচনা, গবেষণা চলছে। সবচেয়ে কম আলোচিত মুক্তিযুদ্ধকালীন চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা।

যুদ্ধের ৫২ বছর হয়ে গেল এ পর্যন্ত এই সসব ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি। শ্রদ্ধা জানানো হয়নি জীবনের মায়া ত্যাগ করে যারা সেবা দিয়েছেন সেই সব মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপুর্ণ একটা প্রতিষ্ঠান অযতেœ অসচেতনায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাজবাড়ী যুদ্ধকালীন আহত কমান্ডার বাকাউল আবুল হাসেম এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, তখন অনেক জায়গায় যুদ্ধ হচ্ছে। আমি যুদ্ধকালীন কমান্ডার হিসাবে আমার সঙ্গীদের নিরাপক্তার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হাসপাকালের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। সিদ্বান্ত নেই রামকান্তপুর আমার ক্যাম্পের পাশে একটি মেডিক্যাল ক্যাম্প স্থাপন করবো। সিদ্বান্ত মোতাবেক তৎকালীন সিভিল সার্জন হুমায়ন কবির এবং ডা. গোলাম মোস্তফা এগিয়ে আসলেন। হাসপাতালে সেবা দেয়া দুরুহ হওয়ার কারনে প্রায় লোক চক্ষুর আড়ালে মাটিপাড়া স্কুলের একটি ঘরে মেডিক্যাল ক্যাম্পটি স্থাপন করা হয়। ডাক্তার হিসাবে গোলাম মোস্তফা দায়িত্ব নিয়ে প্রতিদিন আহত মুক্তি যোদ্ধাদের চিকিৎসা দিতে থাকেন। ডা. মোস্তফা সবচেয়ে বড় অপরেশনটা করেন ইলিয়াস আলীর। তার মাথার মধ্যে গুলি লেগে এখানেই চিকিৎসা করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে জার্মানীতে নেয়া হয়।

রাজবাড়ী জেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের মাটি পাড়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জড়িত এক মাত্র মেডিকেল ক্যাম্পটি স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে সংরক্ষণ করা যেতে পারে বলে অনেকেই মতামত দিয়েছেন। এই স্বার্থ সেবা হাসপাতালটি এখন বেথুলিয়া সরকারি প্রাথমিক হিসাবে আছে।

প্রদক্ষদর্শী হোসেন মৃধা এখন তার বয়স ৭৮। তার স্মৃতি চারণে বলেন এই বেথুলিয়া গ্রাম তখন ঝোপ ঝাঁড়ে ভরা ছিলো। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে বিহারীদের আনোগোনা ছিলো। কোন মুক্তিযোদ্ধা ভয়ে সেখানে যেতে পারতো না। মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দেওয়া হতো গোপনে। বেথুলিয়া স্কুলটিতে সেবা দেয়া হতো। আমার বয়স তখন ২৫ বছর। আমরা গ্রামের অনেক মানুষ ডাক্তারদের সাহায্য করতাম। প্রতিদিন কেউ না কেই আহত হয়ে এই হাসপাতালে আসতো।

(লেখক: কবি ও সাংবাদিক)

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com