রাজবাড়ীতে ‘নারী-কন্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতামুক্ত বিশ্ব গড়ি’ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে রাজবাড়ী জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জাতীয় মহিলা সংস্থা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মহুহা শারমিন ফাতেমার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজবাড়ীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা পুলিশ সুপার মোছা. শামিমা পারভীন, সিভিল সার্জন ডা. ইব্রাহিম টিটন, স্থানীয় সরকার উপ-পরিচালক মল্লিকা দে, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারিয়া হক, জাতীয় মহিলা সংস্থার জেলা কর্মকর্তা মো. আবু জাফর। স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. আজমীর হোসেন।
বক্তারা বলেন, কন্যা শিশুর জন্য একটি নিরাপদ বিশ্ব গড়তে হলে প্রথমে আমাদের নিজের ঘর নিরাপদ করতে হবে। এখনও শিশুদের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ গড়ে তুলতে পারিনি। যুগ যুগ ধরে নারীর প্রতি সহিংসতা চলে আসছে। গত তিন মাসে রাজবাড়ীতে ৩০টি নারী নির্যাতন মামলা হয়েছে। এছাড়া ছয় জন নারী হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছে। যৌনকর্মীকেও তার পারিশ্রমিক মেটানো নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। নারীরা ঘরে ও ঘরের বাইরে এখনও নিরাপদ নয়। নারীরা সব থেকে বেশি সাইবার আক্রমণের শিকার। নারীরা পারিবারিক ও সামাজিকভাবেও নিয়মিত হয়রানী হয়ে থাকে। তাই সমাজ ও দেশকে এগিয়ে নিতে হলে নারী ও পুরুষদের কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করতে হবে। একে অপরকে সহযোগীতা ও সম্মানের চোখে দেখতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কাজে অবদান রাখায় ৮ জনকে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। জেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠরা হলেন অর্থনৈতিক সাফল্যে বালিয়াকান্দির স্বপ্না রানী ঘোষ, শিক্ষা ও চাকুরি ক্ষেত্রে সাফল্যে সদর উপজেলার মোছা. রিনা পারভীন, সমাজ উন্নয়নে অবদানে গোয়ালন্দের মঞ্জুয়ারা কাদরী, সফল জননী সদর উপজেলার রহিমা বেগম ও নির্যাতনের বিভীষিকা হতে উত্তরণে পাংশার পারুল আক্তার। রাজবাড়ী সদর উপজেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠরা হলেন অর্থনৈতিক সাফল্যে মাফিয়া বেগম, সমাজ উন্নয়নে অবদানে রোকেয়া বেগম মিনু ও নির্যাতনের বিভীষিকা হতে উত্তরণে নুরজাহান খাতুন। এর আগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে পান্না চত্বর ঘুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে এসে শেষ হয়।