রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর হাটে মাত্রাতিরিক্ত ও নিয়ম বহির্ভূত খাজনা আদায়ের প্রতিবাদে বালিয়াকান্দি থানা ও সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বহরপুর উত্তরপাড়ার এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী বহরপুর হাটটি দীর্ঘদিন একশ্রেণির মহল অতিরিক্ত দামে ক্রয় করে খাজনার পরিমান এমন করেছিলেন যার কারণে সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতারা অস্বস্তিতে পড়ে হাটে মালামাল আনা বন্ধ করে দেয়। হাট ইজারাদারগণ এই বছর হাট ইজারা গ্রহণ থেকে বিরত থাকলে সরকারি খাস আাদায়ের চলে যায় হাটটি। এরপর বহরপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সোবহান এর অধিনে প্রতি সপ্তাহে বিএনপি’র একটি গ্রুপ নামমাত্র টাকায় ইজারা নিয়ে খাজনা আদায় করে আসছে। হাটের ক্রেতা বিক্রেতাদের অভিযোগ আগের তুলনায় খাস আদায়ে আরও বেশি খাজনা নেওয়া হয়। এমন কি গ্রামের বাড়ী অথবা মাঠ থেকে ফসল বিক্রি করলেও চাঁদাবাজদের মতো জোরপূর্বক তার খাজনা আদায় করছে।
মঙ্গলবার বহরপুর উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদ বিশ্বাসের ছেলে কৃষক রবিউল বিশ্বাস তার ক্ষেত থেকে গেন্ডারী আখ বিক্রি করেন। সারাদিন মাঠ থেকে কেটে পরিস্কার করে বিকালে বহরপুর কলেজ মোড়ের পাশে ট্রাকে ভর্তি করেন। ভর্তি শেষে ট্রাক ছেড়ে যাওয়ার আগ মুহুর্তে রাত আনুমানিক ৮টার দিকে হাট ইজারা নেওয়া বহরপুর গ্রামের রুবেল আক্তার সুমন ১০/১৫ জন লোক নিয়ে গিয়ে খাজনা দাবী করেন। মাঠ থেকে বিক্রির পণ্যে খাজনা আছে কিনা কৃষকরা জানতে চাইলে সুমন হাট থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্যে বিক্রি হলেই তার খাজনা নেওয়া সরকারি আইন আছে বলে জানান। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি)’র কথা বলবে বলে কাউকে ফোন দিয়ে ক্রেতার কাছে ধরিয়ে দেন। অপরপ্রান্ত থেকে পরিচয় দেন তিনি বহরপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কর্মকর্তা। এসময় এমন বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যায়। এরপর কৃষকের কাছ থেকে জোরপূর্বক ৪ হাজার ৬ শত টাকা চাঁদা নিয়ে চলে যায়। এবিষয়ে ঐ রাতেই এলাকার সকল কৃষক একত্র হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় এবং বালিয়াকান্দি অবস্থিত সেনাবাহিনী ক্যাম্প লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
হাট বাজারে আসা অনেক ক্রেতা বিক্রেতার সাথে কথা হলে তারা জানান, দীর্ঘদিন অতিরিক্ত খাজনার কারণে হাটে মালামাল আনা কমে গিয়েছিল। চলতি বছর সরকারি খাস আদায়ে চলে গেলে সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে একটি গ্রুপ সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতাদের কাছ থেকে মাত্রাতিরিক্ত ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে খাজনা আদায় করছে। এতে হাটের পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রান চায় ক্রেতা বিক্রেতারা।