নিখোঁজের প্রায় একমাস পর পুলিশের সহায়তায় বাড়ি ফিরেছে শিশু কাউছার (১২)। গত ১৮ সোমবার রাত ১২ টার দিকে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা হতে গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া কাউসার ঢাকার মিরপুর ২ এর ৬০ ফিট রোড ছাপড়া মসজিদ এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা মোঃ মনু মিয়া ও সালাম বেগমের বড় ছেলে। মঙ্গলবার রাত ১০ টার দিকে গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার থানা হতে কাউসারকে তার মায়ের হাতে তুলে দেন।
এ সময় কাউসারের মা সালমা বেগম জানান, তিনি বাসা বাড়িতে কাজ করেন। তার স্বামী গার্মেন্টসে গাড়ি চালকের চাকরি করেন। তাদের দুই ছেলে। কিন্তু তারা কাজের চাপে ছেলেদের খুব একটা খেয়াল রাখতে পারেন না। কাউসারকে একটা মাদ্রাসায় ভর্তি করেছিলাম।কিন্তু বেশিদিন পড়েনি।গত দুই বছর ধরে সে বাড়িতে থাকতেই চায় না।এর মধ্যে বেশ কয়েকবার এভাবে সে বাড়ি হতে বের হয়ে চট্রগ্রাম, খুলনা,বগুড়া, বরিশাল, নারায়ণগন্জসহ কয়েকটি জায়গায় চলে যায়। সেখান থেকে পুলিশ আমাদেরকে খবর দিলে তাকে গিয়ে নিয়ে আসি। ওকে নিয়ে আমরা খুব সমস্যার মধ্যে রয়েছি। সর্বশেষ মাস খানেক আগে বাড়ি হতে বের হয়। অনেক খোঁজ করেও ওকে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে গোয়ালন্দ থানা পুলিশের সহায়তায় ফিরে পেলাম। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শিশু কাউছার জানায়, বাড়িতে তার ভালো লাগে না। সে কাজ করতে চায়। তাই বাইরে চলে যায়। এভাবে মাস খানেক আগে বের হয়ে ঢাকার এক এলাকায় ছিল। সেখানে একদল যুবকের সাথে থেকে যাত্রীদের ব্যাগ টেনে নিজের খরচ চালাত। কিন্তু সেখানেও ভালো না লাগায় শ্যামলী পরিবহনের একটি বাসে চড়ে দৌলতদিয়া ঘাটে চলে আসি। তবে এভাবে সে আর বাড়ি হতে বের হবে না বলে অঙ্গীকার করে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বপন কুমার মজুমদার বলেন, সোমবার দিনগত রাত ১২ টার দিকে দৌলতদিয়ার ৫ নং ফেরিঘাট এলাকায় শিশু কাউছার কান্নাকাটি করছিল। এ সময় টহল পুলিশের দায়িত্বে থাকা থানার এসআই শাহিন তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর আমরা তার কাছ থেকে তার ঠিকানা জেনে মিরপুর থানা পুলিশের মাধ্যমে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি। তার মা সালমা বেগম এখানে আসলে আমরা কাউসারকে তার মায়ের হাতে হস্তান্তর করি। এ সময় আমরা তাকে প্রয়োজনীয় মোটিভেশন দিলে সে আর কখনো বাড়ি হতে পালাবে না বলে অঙ্গীকার করে। সেই সাথে সে এলাকার একটি মোটর সাইকেল গ্যারেজে কাজ শিখে ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাড়াবে বলে জানিয়েছে।
ওসি আশংকা প্রকাশ করে বলেন, শিশুটি কোন পাচারকারী চক্র বা অন্য কোন খারাপ লোকের হাতে পড়লে তার বড় ধরণের ক্ষতি হতে পারত।
তিনি বলেন, শিশুদেরকে সময় দিতে হবে। তাদেরকে ভালবাসা ও মায়া-মমতায় জড়িয়ে রাখতে হবে। তাহলে তারা পরিবার হতে বিচ্ছিন্ন হওয়ার কথা চিন্তা করবেনা।