বালুবাহী ও মাটি ভর্তি ট্রাক চলাচলের কারণে রাজবাড়ী জেলার মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক গুলো এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। হালকা বৃষ্টিতে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে মটরসাইকেল।
রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলায় প্রায় শতাধিক অনুমতি-বিনা অনুমতিতে ইট-ভাটা চলছে। এসকল ইট-ভাঁটা গুলো মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক ঘেষে গড়ে উঠেছে। ইট-ভাটা গুলোতে অবাধে মাটি নেওয়ার কারণে মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়ক দিয়ে এখন চলাচলের অনুপযোগি হয়ে উঠেছে। সারাবছর ধুলা-বালিতে এই সড়ক দিয়ে স্বাভাবিক চলাচল করা অসম্ভব হয়ে পরে। আবার একটু বৃষ্টিতে ঘটে দুর্ঘটনা। গত শনিবার দুপুরে (রাজবাড়ী-ল-১১-৪৮৮) নাম্বারের এক মটরসাইকেল চালক রাজবাড়ী শহর থেকে গোয়ালন্দ বাজারে আসার পথে খানখানাপুর এলাকায় পরে যায়। এসময় মটরসাইকেলে থাকা দুইজন ব্যক্তিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
আহত মটর সাইকেল চালকের সাথে কথা বলে জানা যায়, একটু বৃষ্টিতে এই সড়কে চলাচল করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, সড়কে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তবে এই রকম নিশ্চিত দুর্ঘটনা শুধু ইট ভাটাতে মাটি নেওয়ার কারণে হয়।
আমিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, বৃষ্টি না থাকলে ধুলা। বৃষ্টি হলে কাঁদা। তাহলে সাধারন মানুষ ও যানবাহন গুলো চলাচল করবে কিভাবে। তিনি বলেন, মহাসড়ক ও আঞ্চলিক সড়কগুলোর দুই পাশে শতাধিক ইট ভাঁটা গড়ে উঠেছে। শাকিল মোল্লা নামের এক মটরসাইকেল চালক বলেন, এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার বিভিন্ন প্রকার যানবাহন চলাচল করে। এই সড়কের পাশে গড়ে উঠেছে ইট-ভাটাগুলো। মাটিতে মহাসড়ক গুলো স্বাভাবিক চলাচল করা অসম্ভব হয়ে গেছে। বৃষ্টিতে ঘটছে দুর্ঘটনা।
উজ্জল হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, অফিস করার কারণে প্রতিদিন ৫০ কিলোমিটার মটরসাইকেলে চলাচল করতে হয়। তবে সারাবছর ধুলা-বালিতে দুর্ভোগ হয়। আবার বৃষ্টিতে চলাচল করা সম্ভব হয় না। এটা নিয়ন্ত্রনে আনা প্রয়োজন।
যাত্রীবাহী বাস রয়েল পরিবহনের দায়িত্বরত কর্মকর্তা মো. রফিক মুন্সী বলেন, খানখানাপুর এলাকায় মহাসড়কের পাশে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠেছে একাধিক ইট-ভাটি। বৃষ্টিতে এই সড়কে যানবাহন চলাচল করা সম্ভব হয় না। ধীর গতিতে গাড়ি চালাতে হচ্ছে। একটু গতিতে চালাতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটবে।
রাজবাড়ী সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওয়াজিস রহমান বিশ্বাস বলেন, এব্যাপারে আমি আইন শৃংখলা মিটিংয়ে উপস্থাপন করেছি। জেলা সমন্বয় মিটিংয়ে উপস্থাপন করেছি। এই বিষয়টি নিয়ে শুধু আমি নয় বিভিন্ন উপজেলার চেয়ারম্যানগণ উপস্থাপন করেছেন। আমি ইট ভাটার মালিক সমিতির চিঠি দিয়েছি। তবুও কেন বন্ধ হচ্ছে না? তিনি আরোও বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে অবশ্যই ইটভাটার মালিকদের এমন কাজ বন্ধ করতে হবে।