রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নবনির্মিত এক মসজিদকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি শত বছরের পুরোনা গ্রামীণ পথ বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে করে মুসুল্লীদের ওই মসজিদে যাতায়াতসহ স্বাভাবিক চলাচলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের চরবারকি পাড়া গ্রামে ‘মখদুম মোহাম্মদ আরোয়াহ্ জামে মসজিদ’ নামের ওই মসজিদ নির্মাণকে কেন্দ্র করে পথটি বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয় মো. তিতুমীর মিয়া ও মো. পারভেজ মিয়ার পরিবার।
জানা যায়, মরহুম আব্দুল ওহাব মিয়া নামের এক শিক্ষকের পুত্র সন্তানের নামে ওই মসজিদটি স্থাপন করা হয়। মরহুম আব্দুল ওহাব মিয়া তার ভাই ইসলাম মিয়ার কাছ থেকে তার স্ত্রী’র নামে একই দাগে হতে ইতিপূর্বে ৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। আব্দুল ওহাব মিয়ার মৃত্যুর পর তার ভাতিজাগণ (ইসলামের ছেলে) তার সম্পত্তির মালিক হন এবং ওহাব মিয়ার স্ত্রীর মৃত্যুর পর তার (স্ত্রীর) ভাইগণ তার সম্পত্তির মালিক হন। ওহাব মিয়ার স্ত্রীর ভাইয়েরা মরহুম একমাত্র ভাগিনার নামে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ওই ৪ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। এরপর স্থানীয়রা ওয়াকফকৃত জমির মধ্যে কবর সংলগ্ন স্থানে মসজিদ ঘর নির্মাণ করেন। কিন্তু আব্দুল ওহাবের ভাতিজারা দাবি করেন, ওয়াকফ সম্পত্তিতে মসজিদ নির্মাণ না করে ওয়ারিশ সূত্রে চাচার কাছ থেকে পাওয়া তাদের জায়গায় মসজিদ ঘর নির্মাণ করা হয়েছে।
স্থানীয় অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ জানান, দীর্ঘদিনের যাতায়াতের পথে হঠাৎ বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকিয়ে দেয়ায় তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। মসজিদে নামাজ আদায়ের জন্য এখন তাদেরকে অনেকটা পথ ঘুরে অথবা বাঁশের বেড়া টপকিয়ে যেতে হচ্ছে। কেউ কেউ এই অসুবিধার জন্য মসজিদে এসে নামাজ আদায় করতে পারছেন না।
স্থানীয় ফারুক মন্ডল, মো. সোহেলসহ আরো অনেকেই জানান, গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি বন্ধ করায় পাশ্ববর্তী দু’টি স্কুলে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের চরম সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া এলাকাবাসীর স্বাভাবিক চলাচলও এক প্রকার বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। আমরা ওই বাঁশের বেড়া খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।
অভিযুক্তদের মধ্যে মো. পারভেজ মিয়া জানান, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের পরামর্শ উপেক্ষা করে মসজিদের নামে ওয়াকফ করা জমিতে মসজিদঘর নির্মাণ না করে, জোরপূর্বক তার চাচাতো ভাই তিতুমীর মিয়ার জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া বিবাদমান জমির বাইরে তাদের নিজস্ব অন্য জায়গা-জমির নিরাপত্তার স্বার্থে তারা ওই বাঁশের বেড়া দিয়েছেন। তাদের জায়গার রক্ষনাবেক্ষনের অধিকার তাদের অবশ্যই রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন জানান, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে দ্রুত সময়ের মধ্যে যাতায়াতের পথটি উন্মুক্ত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।