দেশের সর্বপ্রথম কিডনি প্রতিস্থাপনে বিনামুল্যে কিডনি পেয়েও দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে গোয়ালন্দের মেয়ে শামিমার।
শামিমা আক্তার(৩৪), গোয়ালন্দ পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড বিপেন রায়ের পাড়ার বাসিন্দা প্রয়াত সেনা সদস্য সালেহ্ আহম্মেদ একমাত্র মেয়ে। শামিমা দীর্ঘ পাঁচ বছর যাবৎ কিডনি রোগে ভুগছিলেন। নিয়মিত কিডনি ডায়ালাইসিস নিয়ে বেঁচে আছেন। শামিমার দীর্ঘ এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে শামিমার পরিবার। রোগের শুরুতে ভারতের চেন্নায়ে চিকিৎসা শেষে ৪ বছর আগে ঢাকা মিরপুর-২ কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালে ডায়ালাইসিস চলার সময় গোয়ালন্দের কিছু সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও মানবিক কজন মানুষ প্রায় ১ লক্ষ ২০ টাকার মতো শামিমার চিকিৎসায় হাত বাড়িয়ে দিলেও তাতে শামিমার চিকিৎসা খরচ মেটাতে না পেরে শামিমার পরিবার তাদের সহায়-সম্বল বলতে জমি-জমা বিক্রি করে চিকিৎসা চালিয়ে গেছেন। দীর্ঘদিন চিকিৎসা চালাতে তাদের বসত বাড়ি পর্যন্ত ব্যাংকের কাছে বন্ধক রেখে আজ তারা একেবারেই নিঃস্ব। প্রতি সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস আর একটা রক্তের ইনজেকশন লাগত শামিমার শরীরে। সব মিলিয়ে কম করে হলেও সপ্তাহে ৫-৭ হাজার টাকা খরচ লাগতো । মাসে ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হতো। দীর্ঘ পাঁচ বছর এভাবেই খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছিল শামিমার পরিবার, ঠিক সেই মুহূর্তে শামিমার বেঁচে থাকার সুখবর পায় পরিবারটি। গতমাসের ১৮ জানুয়ারি-২৩ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দিবাগত রাতে বিনামুল্যে সারাহ্ ইসলামের দানের কিডনি দিয়ে শামিমার অপারেশন সম্পন্ন হয়। অপারেশন থেকে শুরু করে বেড ভাড়া, অপারেশন খরচ, মেডিসিন, পরীক্ষা-নিরিক্ষা সব খরচ বহন করছিলো হাসপাতাল কতৃপক্ষ কিন্তু কিছু মেডিসিন ও টেস্ট হাসপাতালে না থাকার কারণে বাইরে থেকে ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। এতে বেকায়দায় পরেছে পরিবারটি। এই মুহূর্তে অসহায় পরিবারের পাশে বিত্তবান মানুষদের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
এবিষয়ে শামিমার বড় ভাই শাহজাদা আহম্মেদ বলেন, আমার বোন দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ কিডনি রোগে ভুগছিলেন। বোনের চিকিৎসা করাতে গিয়ে আমরা আজ নিঃস্ব। মানুষের সহযোগিতা, সম্পদ বিক্রি, নিজেদের শেষ সম্বল ভিটা বাড়িটি ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখতে হয়েছে। বিনামূল্যে কিডনি পেয়েও বোনের চিকিৎসা নিয়ে চিন্তিত। অপারেশন পরবর্তী সময় পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিনামুল্যে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। আমার বোনকে দু-একদিনের মধ্যে হসপিটাল থেকে ছাড়পত্র দিবে তখন আমাদের আগামী ৬ মাস পর্যন্ত ফলোআপের জন্য হাসপাতালের নিকটে যেকোনো একটা ভাড়া বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে বলেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আর ৬ মাস চিকিৎসা খরচ বাবদ প্রায় তিন লক্ষ টাকা লাগবে। এতটাকা আমাদের পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই মুহূর্তে কোনো হৃদয়বান ব্যাক্তি, কোনো দাতা সংস্থা অথবা কোন সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে তাহলে আমাদের অনেক উপকার হতো ও আমার বোনের ভালোভাবে চিকিৎসা করাতে পারতাম।