রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাট পয়েন্টে পদ্মা নদীর ভাঙন ঝুঁকিতে কয়েকটি গ্রাম, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদ্রাসাসহ লঞ্চ ও ফেরি ঘাট। ফলে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে পদ্মা নদী তীরবর্তী বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা ঘুরে জানা গেছে, প্রতি বছর বর্ষা এলেই পদ্মার পেটে চলে যায় তিন ফসলী জমিসহ লঞ্চ ও ফেরিঘাট। দৌলতদিয়া ১,২ ও ৭ নং ফেরিঘাট এবং লঞ্চে ঘাট এলাকায় সরাসরি নদী ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। প্রতি বছরে নদী ভাঙ্গনে অনাবাদি জমি, ফাসলী জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে শতশত পরিবারের বসতভিটা। নদী ভাঙ্গন শুরু হলে ভাঙন প্রতিরোধে তড়িঘরি করে কিছু বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হয়। তাতে তেমন কোন উপকারে আসে না।
ফেরিঘাট পাড়ের মুদি দোকানদার মো. সাহিন শেখ জানান, এর আগে আমার দোকান ভাঙনের মুখে পড়েছিলো। কোনো মতে দোকানটি এখনো আছে। এবার আগে ভাগেই ভাঙন শুরু হয়েছে। এবার আর দোকান রক্ষা করা সম্ভব হবে না। নদী শাসন করা হতো তাহলে আমাদের দোকান ঘর নদী গর্ভে যেত না। যেসকল জমির মৌজা নদী গর্ভে চলে গেছে সেগুলো হলো ছোট গোয়ালন্দ, বড় গোয়ালন্দ, বড় সিঙ্গা, বড় বিল, কুশাহাটা আংলিক, বিশ্বনাথপুর, বন বাউল, পানুর, ধোপাগাতি, দক্ষিণ ধোপাগাতি, উত্তর ধোপাগাতি, ইসলাম সিজমপুর, বেথুরী, ঢল্লা পাড়া, ডাকাত পাড়া, বেপারী পাড়া, জয়পুর, দেউলি, কাউয়ালজানী।
ঘাট এলাকার বাসিন্দা গফুর খান জানান, আমার ১০ বিঘা ফসলী জমিসহ বসতঘর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। যখন পদ্মা নদীর ভাঙ্গন শুরু হয় তখনই দেখি কিছু জিও ব্যাগ ফেলে পদ্মা নদীর পাড় দিয়ে। এতে নদী ভাঙ্গন ঠেকে না। নদীর পাড়ে জিও ব্যাগ থাকে নিচ দিয়ে স্রোতে মাটি ভেঙে গিয়ে ভাঙ্গন চলতেই থাকে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশন বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মো. সালাউদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া ঘাট এলাকা নদী ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। বর্তমানে ৭ টি ফেরিঘাটের মধ্যে ৩ টি ফেরি ঘাট সচল রয়েছে। সচল ঘাটগুলো হলো ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ফেরিঘাট। নদীতে আরো পানি বাড়লে ৬ নং ফেরি ঘাট টি আমরা চালু করতে পারবো। ৩ টি ঘাট দিয়ে বর্তমান যানবাহন ফেরিতে ওঠা-নামা করছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নাহিদুর রহমান জানান, আমাদের সরাসরি নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করার তেমন বরাদ্দ নেই। আমরা নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে চাহিদা দিয়ে থাকি পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পকে । তারা ওই ভাবেই নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করার চেষ্টা করেন।