কৃষক পর্যায়ে উন্নত মানের ডাল, তেল ও মসলা বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিতরণ (৩য় পর্যায়) প্রকল্পের আওতায় ২০২১- ২০২২ অর্থ বছরে রাজবাড়ী জেলার সেরা কৃষি উদ্যোক্তা ও বীজ বিক্রেতা নির্বাচিত হয়েছেন গোয়ালন্দের হুমায়ুন আহমেদ (৩৯)। তিনি উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের তোরাপ শেখের পাড়ার আব্দুল হকের ছেলে। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এসএম সহিদ নুর আকবর তার কার্যালয় হতে আনুষ্ঠানিকভাবে হুমায়ুনের হাতে উপহার ও ক্রেষ্ট তুলে দেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, হুমায়ুন আহমেদ একজন সফল ও তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি ১ একর জমিতে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ৫ হাজার কেজি এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ৫ হাজার ৬০০ কেজি বারি-১ জাতের রসুন উৎপাদন ও সংরক্ষণ করেন। যা পরবর্তীতে তিনি বীজ হিসেবে বিপণন করেন। এছাড়া ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে তিনি ১ একর জমিতে বারি-১৭ জাতের সরিষা চাষ করে ৬’শ কেজি এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ২ একর জমিতে বারি-১৪ ও বারি-১৭ জাতের সরিষা আবাদ করে ১ হাজার ২৫০ কেজির ফলন পান। যার পুরোটাই তিনি বীজ হিসেবে সংরক্ষণ ও পরবর্তীতে বিপণন করেন। পাশাপাশি তিনি ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে ১ একর জমিতে বারি-৪ জাতের তিল চাষ করে ৬’শ কেজি এবং ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে ২ একর জমিতে ৯’শ কেজি খেসারি বীজ উৎপাদন করেন। উন্নত জাতের এ ডাল ও তেলবীজ উৎপাদন গোয়ালন্দ উপজেলার মধ্যে সর্বোচ্চ হওয়ায় তাকে সেরা কৃষক হিসেবে মনোনীত করে রাজবাড়ীতে পাঠানো হয়।
কৃষি উদ্যোক্তা হুমায়ুন আহমেদ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগিতায় তিনি ডাল, তেল,ধান,পেয়াজ সহ বিভিন্ন জাতের বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ কাজে মনোনিবেশ করেন। তার উৎপাদিত বীজ স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর আশপাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সরবরাহ করে আসছেন। এর মাধ্যমে তিনি বেশ লাভবান হচ্ছেন। গোয়ালন্দ বাজারে তার নিজেরও একটা বীজের দোকান রয়েছে। কৃষকেরা এখান থেকে সহজেই উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করে চাষাবাদ করছেন এবং লাভবান হচ্ছেন।
তিনি আরো জানান, ২০১৭ সালে নিজস্ব ২ একর জমি নিয়ে তিনি বীজ উৎপাদনের এ কাজে মনোনিবেশ করেন। ৫ বছরে তার এখন প্রকল্পভুক্ত জমির পরিমান প্রায় ২০ একর। এর মধ্যে লিজের জমি ১০ একর। বাকি ১০ একর নিজস্ব। প্রকল্পের মধ্যে বীজ উৎপাদন ছাড়াও তিনি পোল্ট্রি ও ডেইরি খামার গড়ে তুলেছেন।
সেরা কৃষি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজ জেলায় সেরা নির্বাচিত হয়ে আমি অনেক আনন্দিত ও গর্বিত।
এ প্রসঙ্গে গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. খোকন উজ্জামান বলেন, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে কৃষক পর্যায়ে যুগোপযোগী জাত যা সম্প্রসারণের লক্ষে কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করা এবং সেই উন্নত জাতের বীজ সংরক্ষণ করে পরবতী বছরে কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করা। সেই দিক দিয়ে কৃষক হুমায়ুন আহমেদ একজন ভালো মানের তরুণ ও সফল উদ্যোক্তা।