ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মার মোড় নামক এলাকায় ময়লার স্তুপে ছোট ছোট টিলার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মহাসড়কের একপাশ প্রায় হাফ কিলোমিটার রাস্তা ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এতে যাতায়াত করা দুষ্কর হয়ে পরেছে। ভাগাড়ের দুপাশে রয়েছে দুটি ইটের ভাটা। ভাটায় প্রায় শ’ দুয়েক শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে। কাজের তাগিদে এ মহাসড়ক ব্যবহার করে থাকেন তারা। দুর্গন্ধে তাদের জীবনসহ চলাচলরত জনজীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন যানবহনে চলাচলরত লোকজন ময়লাযুক্ত স্থানে আসার আগেই নাক-মুখ ঢেকে পার হচ্ছে। বেশ কয়েকজন পথচারি চলাচলের সময় রুমাল অথবা নিজের গায়ের কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকছেন। বেপারী পাড়ার বাসিন্দা মো. শাহিন শেখ গোয়ালন্দ বাজার থেকে ফেরার পথে বাড়ি যাওয়ার সময় গন্ধে মুখ ঢেকে অতি কষ্টে বলেন, এরাস্তা দিয়ে চলাচল করাই মুশকিল হয়ে পরেছে। আস্তে আস্তে ময়লার পরিমাণ বেড়েই চলছে। দুর্গন্ধে এ সড়ক দিয়ে চলাচল করাই কষ্ট। রিক্সা চালক মো. মঞ্জু মোল্লা বলেন, এই মহাসড়ক দিয়ে প্রতিদিন ঘাটে অন্তত ৬/৭ বার ভাড়া নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মাঝে মধ্যে চলাচলের সময় দুর্গন্ধে নাক এঁটে আসে। দিনে দিনে ময়লার পরিমাণ বেড়েই চলছে। মহাসড়কের এই স্থানটি পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত। যেহেতু স্থানটি পৌরসভার আয়ত্বের মধ্যে সেহেতু পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে স্থানটি পরিস্কারের জোর দাবি জানাচ্ছি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুজন পথচারী বলেন, প্রতিদিন গোয়ালন্দ বাজার, গোয়ালন্দ বাসস্ট্যান্ড বাজার এবং পৌর জামতলা বাজার থেকে পৌরসভার পরিচ্ছন্নকর্মীরা রাতে এবং খুব ভোরে ময়লাগুলো মহাসড়কে এনে ফেলে। এতে করে এলাকার পরিবেশ দূষণসহ চলাচলরত রিক্সা, অটোরিকশা ও মাহেন্দ্র চালকসহ যাত্রীরা অসুস্থ্য হয়ে পরছে। অনেকেই বলেন, ময়লাস্তুপের মাইল দেড়েক পরেই সরকারি ওয়াজেদ চৌধুরী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ রয়েছে। প্রতিদিন শতশত শিক্ষার্থী এ মহাসড়ক ব্যবহার করে থাকেন। প্রতিনিয়ত স্কুলে যাতায়াতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এসব শিক্ষার্থীরা। দ্রুতই এর অবসান চান চলাচলরত পথচারী, রিক্সা চালক, মাহেন্দ্র চালক এবং ইট ভাটার শ্রমিকরা।
গোয়ালন্দ পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোশারফ হোসেন কুটিন বলেন, আমাদের পৌরসভার নির্দিষ্ট কোনো ময়লার ভাগাড় না থাকায় পরিচ্ছন্ন কর্মীরা বাধ্য হয়েই বিভিন্ন বাজারের ময়লাগুলো এখানে ফেলছে। আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন আমাদের এসব ময়লা আবর্জনা ফেলার জন্য উজানচর নতুন পাড়ায় একটি ভালোমানের ময়লার ভাগাড় তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। কাজ শেষ হলেই এসব ময়লা সেখানে স্থানান্তরিত করা হবে।
গোয়ালন্দ পৌরসভার প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জ্যোতিশ্বর পাল বলেন, ময়লা ফেলানোর বিষয়টি আমি শুনেছি, খোঁজখবর নিয়ে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।