রাজবাড়ীতে ডায়রিয়া পরিস্থিতির ক্রমশঃ অবনতি হয়েছে। হাসপাতালের ভেতরে জায়গার সঙ্কুলান না হওয়ায় বাইরে বেড পেতে অনেক রোগীকে থাকতে হয়েছে। ডায়রিয়ার কারণ অনুসন্ধানে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জন। জানা যায়, সারাদেশের মত রাজবাড়ীতে হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ফলে রোগীর চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ডাক্তার, নার্সসহ অন্যান্যরা। হাসপাতালে সিট না থাকায় বারান্দায়, গাছের নিচে বসে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে অনেকের। আসমত আলী নামের এক ব্যক্তি বলেন, হাসপাতালের ডাক্তারদের আন্তরিকতা রয়েছে। তবে জায়গা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। বারান্দায় পা রাখার জায়গা নেই। তাই অনেকে গাছের নিচে চলে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নার্স জানা, জায়গার চেয়ে রোগী বেশি। এর পর প্রত্যেক রোগীর সাথে একাধিক নারী-পুরুষ রয়েছে। যে কারণে বারান্দায় পা রাখার কোন জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে অনেক রোগী বাইরে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছে। অনেক রোগী ছাড়পত্র নিয়ে চলে যাচ্ছে। রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর জলিল বলেন, হাসপাতালে সিট নেই। বারান্দায় জায়গা নেই। বাধ্য হয়ে হাসপাতাল এলাকায় গাছের নিচে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি কখনও দেখি নাই কোন দিন। রাতে আমার পরিবারের ডাইরিয়া রোগে আক্রান্ত দুইজনকে নিয়ে এসেছি। কিন্ত এসে কোন ডাক্তার পাচ্ছি না। শুধু নার্স রয়েছে। হাসপাতালে জায়গা না পাওয়ায় বাধ্য হয়ে গাছের নিচে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে কোন প্রকার ঔষুধ দিচ্ছে না। বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে শিশু, নারী ও পুরুষসহ মোট ১৬২ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। এবং ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ী ফিরেছে আরও অর্ধশাতাধিক রোগী। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ শেখ মোহাম্মদ আব্দুল হান্নান বলেন, রাজবাড়ীতে গত কয়েকদিন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তিনি জানান, ডায়রিয়া রোগীর বেড রয়েছে মাত্র ১২টি। সেখানে রোগি ভর্তি হয়ে ১৬২ জন। বাধ্য হয়ে বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গাছের নিচে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অনেক রোগীর পরিবার বারান্দায় প্রচন্ড গরমের কারণে ইচ্ছাকৃত ভাবে গাছের নিচে চিকিৎসা নিচ্ছে।