আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবের দিন, পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর দিন। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে তৎকালীন ইপিআর ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে সূচনা হয় মহান মুক্তিযুদ্ধের। জাতির পিতার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে জয়লাভ করে আমরা অর্জন করি পরম কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
ঐতিহাসিক এ দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে; যাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তি পাগল বাংলার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে ছিনিয়ে এনেছিলেন স্বাধীনতার লাল সূর্য। সশ্রদ্ধ চিত্তে স্মরণ করি স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লক্ষ শহিদ এবং দুই লক্ষ নির্যাতিতা মা-বোনকে; যাঁদের সর্বোচ্চ ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা। আরও স্মরণ করছি ১৫ আগস্টের সকল শহিদ ও জাতীয় চার নেতাকে। সশ্রদ্ধ সালাম জানাই সে সব অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিকামী জনতার প্রতি, যারা দেশমাতৃকার জন্য জীবন বাজি রেখে লড়েছেন এবং বুকের তাজা রক্ত দিয়ে বাংলার মাটিকে হানাদারমুক্ত করেছেন। যারা স্বজন হারিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন তাদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর সমবেদনা। আজকের এ দিনে রাজবাড়ী জেলার সকল শহিদ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা।
অনেক রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির মহত্তম অর্জন। এ অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার চেতনাকে ধারণ করতে হবে এবং প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দিতে হবে। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মহান স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশ গড়া। সে লক্ষ্য অর্জনে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাণিজ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, নারীর ক্ষমতায়ন, যুব ও ক্রীড়া ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে আমাদের সফল অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। সারা বিশ্ব আজ বাংলাদেশকে সম্মানের চোখে দেখে। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উন্নীত হওয়ার চূড়ান্ত সুপারিশ জাতিসংঘ কর্তৃক প্রাপ্ত হওয়ায় আমাদের সম্মান আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব সভায় সমাদৃত। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অর্জন বিশ্ববাসীর নিকট এক বিস্ময়। রূপকল্প ২০৪১ এবং ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা বিনির্মাণে সকলে সম্মিলিত ভাবে কাজ করব। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এ হোক আমাদের অঙ্গীকার।
মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর এ মাহেন্দ্রক্ষণে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২২ এ রাজবাড়ীবাসীসহ সমগ্র দেশবাসীর সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করছি।
জয়বাংলা।
বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।
আবু কায়সার খান
জেলা প্রশাসক
রাজবাড়ী