রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলায় সোহেল মোল্লা ওরফে কসিম (৩৮) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছে। গতকাল সোমবার সকালে তিনি মধুখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় তিনি মারা যান। তিনি রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার খোদ্দ মেগচামী গ্রামের বাসিন্দা। সোহেলের বাবার নাম নবিয়াল মোল্লা।
গোয়েন্দা পুলিশ ও নিহতের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলামিন মোল্লা নামে এক কিশোর মিজানুর রহমানে মুরগীর খামারে কাজ করতো। ৬ সেপ্টেম্বর রাতে খামার থেকে আলামিন নিখোঁজ হয়। আলামিনের বাড়ি বালিয়াকান্দির খোদ্দ মেগচামী গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আকিদুল মোল্লা। নিখোঁজের ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর আলামিনের বাবা বালিয়াকান্দি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেন। ১৫ নভেম্বর তিনি রাজবাড়ী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে। ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মেগচামী ইউনিয়নের বিলসিংহনাথ বিলের একটি ধান খেত থেকে গত বুধবার দুপুরে একটি মরদেহের কংকাল উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া কংকাল নিখোঁজ যুবক আলামিন মোল্লার বলে দাবি পরিবারের স্বজনদের।
আলামিনের মুঠোফোনটি ব্যবহার করছিলেন সোহেল। রোববার সন্ধ্যায় সোহেলের বাড়িতে যায় সিআইডি পুলিশ। তিনি বাড়িতে ছিলেন না। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহেল ঈদগাহ মাঠে একটি দোকানে বসে আছে। সিআইডি পুলিশ দোকানে গিয়ে সোহেলকে তা জানতে চায়। এসময় সোহেল সেখান থেকে সটকে পড়ে। পরে তিনি মধুখালী উপজেলার চরমেগচামী গ্রামে তাঁর ফুফু বাড়িতে রাতে আশ্রয় নেয়। সকালে অসুস্থবোধ করছিলেন। তাকে মুধখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার সময় তিনি মারা যান। পরে মরদেহটি তাঁর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
সোহেল মোল্লার ফুফাতো ভাই হাসিবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, রাতে তিনি আমাদের বাড়িতে আছেন। তখন তাঁর চোখে মুখে চিন্তার ছাপ ছিল। অন্য মনস্ক ছিলেন। তেমন একটা কথা বলেন নাই। তবে মোটর সাইকেল পুলিশের কাছে তা জানিয়েছেন। সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় তিনি মারা যান।
সিআইডি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিল্লুল রহমান সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি দেখা যায়, সোহেল মোল্লা নামে এক ব্যক্তি মুঠোফোনটি ব্যবহার করছেন। রোববার সন্ধ্যায় সোহেলের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। তিনি তখন বাড়িতে ছিলেন না। খোঁজ নিয়ে ঈদগাহ মাঠে গেলে সোহেল পালিয়ে যায়। তাঁর ব্যবহৃত মোটরবাইকটি সেখানেই থেকে যায়। পরে পুলিশ ও সোহেলের এক আত্মীয় (শ্যালক আ. মতিন) ফোন করে সোহেলকে আসতে বলেন। কিন্তু সোহেল সেখানে আর আসেনি। পরে বালিয়াকান্দি থানায় যোগাযোগ করে মোটরসাইকেলটি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সকালে জানতে পারি তিনি মারা গেছেন।
বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে সোহেলের বাড়ি থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। কিভাবে মারা গেছে তা জানি না। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি দুপুরে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।