সনজিৎ কুমার দাস, বালিয়াকান্দি ॥
ভোজ্য তেলের চাহিদা পূরণে উচ্চ ফলনশীল রকেট সরিষা আবাদ করে লাভবান হয়েছে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার কৃষকেরা।
জামালপুর ইউনিয়নের গোসাই গোবিন্দপুর গ্রামের শহীদ কাজী, বাবু সেখসহ বেশ কয়েক জন কৃষকের মধ্যে জাকির সেখ জানান, রবি মৌসুমে অন্য ফসলের চেয়ে বিগত দুই বছর হলো রকেট সরিষা আবাদ করে অনেক লাভবান হয়েছি। গত বছর উপসহকারী কৃষি অফিসার মো. আকরাম হোসেনের পরামর্শে এক একর ১১ শতাংশ জমিতে রকেট সরিষার আবাদ করি। এর আবাদ সাধারণ সরিষার মতই। তবে এ গাছ হতে গছের দূরত্ব ৮-১০ ইঞ্চি এবং সারি হতে সারির দূরত্ব ১০-১২ ইঞ্চি দিতে হয়। এই সরিষার গাছগুলোর ৮/৯ ফুট লম্বা হয়। প্রতি একরে বীজ লাগে ১ কেজি। একর প্রতিফলন ১৮/২০ মন। আমার সরিষার ক্ষেত দেখতে আসে বিভিন্ন এলাকার কৃষকেরা। অনেকে আবাদে ঝুঁকে পড়েছে। এবছর বপন মৌসূমে প্রতি কেজি সরিষা ২শ টাকা দরে বিক্রি করেছি। এবারও এক একর জমিতে সরিষার আবাদ করেছি। সবেমাত্র সরিষা কাটা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় বীজ ব্যবসায়িরা অগ্রিম চাহিদা দিয়েছে। বর্তমান মণ প্রতি বাজার মূল্য ৪ হাজার টাকা। এর গাছগুলো জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা যায়।
উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ আকরাম হোসেন জানায়, বগুড়া জেলায় রকেট সরিষার আবাদ দেখে গত বছর ৩ কেজি বীজ ১৮শত টাকা দিয়ে ক্রয় করে ৩ জন চাষীকে আবাদে উৎসাহিত করি। এবছর বপন মৌসূমে অন্তত ১৫/১৬ জেলায় কুড়িয়ার যোগে কৃষকের কাছে বীজ পৌছে দিয়েছি। এ সরিষার গাছের বিশেষ ধর্ম হলো গাছগুলো সোজা ও শক্ত। সহজে হেলে পড়ে না। জলাবব্ধতা ছাড়া সকল মাটিতে এর আবাদ করা যায়। জীবনকাল ১১০ দিন। গাছ লম্বার কারনে মাটিতে বোরনের পরিমান বেশী দিতে হয়। এবছর ২০ হেক্টর জমিতে রকেট সরিষার আবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জনাব মো. আনোয়ার হোসেন বলেন এবছর বালিয়াকন্দি উপজেলায় ৩৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। সম্প্রতি রকেট জাতের সরিষা প্রায় সব ইউনিয়নে চাষ হয়েছে। এই জাতের সরিষার উচ্চতা এবং বৃদ্ধি দেখে এলাকার কৃষকেরা অনেক অগ্রহী হয়েছে। আগামীতে এই জাতে সরিষা চাষ বাড়বে বলে আমরা আশা করছি।