রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন

আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনা প্রবাহ স্মরণে রেখেই পেশ করছি রাজনৈতিক দার্শনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমীপে- খোলা চিঠি

বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিয়া মিয়া
  • Update Time : শুক্রবার, ৫ আগস্ট, ২০২২
  • ১০১ Time View

বাংলা মায়ের আদরিনী কন্যা, নতুন বাংলার রূপচ্ছবি, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পরম শ্রদ্ধেয় বড় আপা, সোনার বাংলা গড়ার জাতির জনকের স্বপ্ন সুন্দরের সোনালী আভায় সাজিয়ে দেবার নব কৌশল ¯্রষ্টা, মেগা প্রকল্প পরিকল্পনার উদ্ভাবক, স্বনির্ভর রাষ্ট্র গঠনের বিশ^ রাষ্ট্র দর্শন ¯্রষ্টা, আজকের বাংলার ঠিকানা, সততা এবং নির্ভীকতার প্রতীক, দেশপ্রেমিক, জাতিত্ববোধ সম্পন্ন জাতিগোষ্টির সর্বজন শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্র নায়ক, সবার শেষ ভরসার কেন্দ্রস্থল, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আমার মুক্তিযোদ্ধার চেতনা স্পর্শিত শ্রদ্ধাবনত অভিবাদন গ্রহণ করুন। আগষ্ট মর্মান্তিক বেদনাবিদুর বেদি পাশে দাঁড়ানো আমিও আপনার এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ভাই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি এমন এক সময় কথা বলছি যখন আমার দৃষ্টিতে স্বাধীন বাংলার প্রাচীর বেষ্টনীতে মঞ্চস্থ হতে চলেছে মহান স্বাধীনতা নাটকের শেষ অংকের শেষ দৃশ্য। এই দৃশ্যে অভিনয় হতে চলেছে বাংলার বুকে এখনও প্রদক্ষিণরত পরাজিত পাকিস্তানী প্রেতাত্মার সাথে মহান স্বাধীনতার জাতীয় ইতিহাসের শেষ বোঝাপড়ার শেষ দৃশ্য। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর রক্ত ¯্রােতের উপর পরাজিত পাকিস্তানী ষড়যন্ত্র এখনও চেপে বসে আছে সেই দুর্গন্ধময় ইতিহাসের পরিসমাপ্তি ঘটাতে হবে এই নাটকের শেষ অংকের শেষ দৃশ্যের শেষ শব্দের মধ্য দিয়ে। এই রাজনৈতিক মহাসমরে দিগন্ত প্রান্তে মুক্তিকামী জনতার মহাসমর নায়ক হতে হবে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলার নির্ভীক বীর যোদ্ধা শেখ হাসিনা স্বয়ং আপনাকেই। ইতিহাসের যুগসন্ধিক্ষনে সংঘাত সর্বযুগে সর্বকালেই অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫০ বছর পার করে আমরাও আজ সেই বোঝাপড়ার শেষ সীমান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। আমাদের বোঝা উচিৎ স্বাধীনতার সূর্য সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা, দেশপ্রেমিক বীর জনতা দেখুন, মহান স্বাধীনতার লাল সবুজের পতাকা আমাদের আহ্বান জানাচ্ছে। পাওয়া না পাওয়ার দুঃখ বেদনার সব হিসাব নিকাশ পিছনে রেখে ষড়যন্ত্রের চেতনা গৃহে বন্দী মহান স্বাধীনতাকে আসুন আমরা মুক্ত আকাশের মুক্ত বিহঙ্গ রূপে মুক্ত করি। তারপর আমরা সময়ের বুকে বসে পাওয়া না পাওয়ার হিসাব করবো। আমাদের চেতনার চোখ খুলে দেখতে হবে, মহান স্বাধীনতার অগ্রগতির যাত্রাপথ রুদ্ধ করতে, জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্ত বিষধর সাপগুলো চতুর্দিক থেকে ফনা তুলে দাঁড়িয়েছে। আমরা যদি আমাদের ঠিকানাকে বাঁচাতে ব্যর্থ হই- কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের অবস্থান? সেই মহা সত্যকে ভাববার এখনই সময়।

এই পরিসরে আমি শুধু আজকের রাজনৈতিক যুদ্ধের মূল প্রেক্ষাপট নিয়ে, আমার জ্ঞানের সীমা পরিসরে বসে, আলোকপাত করে লেখা শেষ করব। তবে বলে রাখি, পদ্মা সেতুর আনন্দ মঞ্চে আমি কিন্তু আজও বসতে পারি নাই। কারণ ঐ আনন্দ মঞ্চের দূরপ্রান্তে আমি দেখতে পাচ্ছি আর একটি মঞ্চে জ¦লছে অনেক প্রশ্নের লেলিহান শিখা।

আমি সেই দৃশ্যপট অবলোকন করেই আপনাদের কাছে প্রশ্ন রাখছি, আমাদের হাতের পদ্মা সেতুর আনন্দ মশাল দিয়ে ঐ রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের দুর্বিত্তিক লেলিহান শিখাটিকে আমরা পদ্মার শ্মশান ঘাটে দাহ করতে পারবো কি? যদি পারি তখন পদ্মার বুকে ঠিকরে পরা শরতি জ্যোৎ¯œার মতো ডানা মেলে পদ্মা সেতু আমাদের তার মুক্ত মঞ্চে ডাকবে। সেই দিন আপনাদের সাথে ঐ আনন্দ মঞ্চে প্রাণ খুলে বসতে পারবেন যেমন সেতু জননী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আর আমিও যেখানেই থাকি প্রাণভরে উপভোগ করতে পারবো- পদ্মা সেতুর মুক্ত মনের বিজয় গানের সুর ধ্বনি।

বার বার একটি প্রশ্ন আমার চিন্তাকে আলোড়িত করছে। পদ্মা সেতু বাংলাদেশ নামক একটা দেশের যাতায়াত ব্যবস্থার প্রয়োজনে তৈরী একটা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দেশের রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক এবং ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান জড়িয়ে পড়লো কেন? অন্য দিকে রাজনৈতিক জীবনের সর্বাত্মক ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা সেতুর জননী এই প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে নিরব বিপ্লব ঘটালেন কেন? আবার দেখলাম এবং শুনলাম, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেতু উদ্বোধন কালে এক কঠিন রহস্য জনক বক্তব্য উপস্থাপন করলেন। তিনি বল্লেন, “পদ্মা সেতু বিরোধীদের প্রতি আমার কোন অভিযোগ নাই। তবে ভুল থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করবে এটাই আমার প্রত্যাশা।” আরও এক রহস্য জনক ঘটনা দৃষ্টিগোচর হলো। আমেরিকা এবং জাপান পদ্মা সেতু থেকে বাংলাদেশকে চোর বানিয়ে তাদের বিশ^ব্যাংক, জাইকা থেকে টাকা প্রত্যাহার করলো, আবার তারা পদ্মা সেতু নির্মাণে কৃতকার্য হওয়ায় বাংলাদেশ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানালেন কেন? কিন্তু বিএনপি এবং ডঃ ইউনুস নামের এক উদ্ভট তাত্ত্বিক মুখও খুললেন না, মাথাও ঘুরালেন না কেন? সেতু উদ্বোধনের আগে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আরও একটি রহস্যজনক বক্তব্য উপস্থাপন করে বলেছিলেন” আমি যাতে সেতু উদ্বোধন করতে না পারি তার জন্যে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে”। সেতু নির্মাণে কেন এই বিরোধিতা, সেতু নির্মাণে কেনই বা জীবনান্ত প্রচেষ্টা, সেতু উদ্বোধনে কেন ষড়যন্ত্র, কারা ভুল করছে, কোন ভুল থেকে তাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে, যে মুরব্বিরা পদ্মা সেতু নির্মাণে ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করলেন তারা আবার তাকে অভিনন্দনই বা জানালেন কেন? অন্য দিকে পদ্মা পাড়ের ২১ জেলাসহ সমগ্র বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে পদ্মা সেতুর বাঁধভাঙ্গা ঢেউ সমগ্র পৃথিবীর উন্নয়ন বঞ্চিত মানুষ গুলোকে আনন্দে আত্মহারা করে তুলল কেন? ইত্যাদি প্রশ্নগুলো মাথায় নিয়ে পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠান পর্যবেক্ষণ শেষ করলাম। এই পদ্মা সেতু এতটাই নিরব বিপ্লব ঘটিয়েছে যে, পূর্বে এ নিয়ে গভীর ভাবে কোন চিন্তা করবারই সুযোগ পাই নাই।

সমস্যাগুলো চিন্তার পুঁতলিতে বেধে ইতিহাস পাড়ায় ঢুকলাম। প্রথমেই চিন্তার কুঠরিতে ধাক্কা দিল। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় বহু দলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি গ্রহণযোগ্য নিয়ম। এই ব্যবস্থার সুষ্ঠু ধারা হলো, দেশ উন্নয়নে সব দল কর্মসূচি নিয়ে জনতার কাছে যাবে। জনতার সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত দল রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসবে। ক্ষমতাসীন দল জনতার কাছে দেওয়া প্রতিশ্রুতি পালন করবেন। বিরোধী দল জনতার পক্ষ থেকে সরকারের প্রতিশ্রুতি পালনে বাধ্য করবেন এবং আরও উন্নতমানের দেশ গঠনমূলক কর্মসূচি দিয়ে ক্ষমতায় যাবার চিন্তা করবেন। আমাদের নামীয় বিরোধীদল এবং উদ্ভট তাত্ত্বিক ডঃ ইউনুছ তা না করে পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে সরাসরি বিরোধিতা করলেন কেন? আর একটি শাসন ব্যবস্থা পৃথিবীতে আছে, সেটার নাম মানবতা বিরোধী জংলী সামরিক শাসন। আমি বাংলাদেশের ইতিহাস পাড়ায় হাটতে গিয়ে দেখলাম, বাংলাদেশের বন্দী জীবন কেটেছে ১২০০ শত বৎসর।

সর্বশেষ আমরা বন্দী হয়েছিলাম পাকিস্তান নামক জংলী রাষ্ট্রের হাতে। সেখানে জন্ম লগ্ন থেকেই আমাদের হাটতে হলো রক্তাত্ব পথে। মুক্তির পথ পাড়ি দিতে আমাদের হাঁটতে হলো ২১ শে ফেব্রুয়ারীর ভাষা আন্দোলন ৬২-র শিক্ষা রিপোর্ট বিরোধী, ৬৬-র ৬ দফা, ৬৯-র গণঅভ্যুত্থান এবং ৭০ এর নির্বাচন আদাই করেও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতির সর্বশেষ ২৩ বৎসরের পাকিস্তানী জংলী শাসন থেকে মুক্তি ছিনিয়ে আনতে হলো। এই সর্বশেষ ২৩ বৎসরের রাজনৈতিক লড়াইয়ে আমরা নেতৃত্বে পেয়েছিলাম এক জীবন্ত বাঘকে। ইতিহাসে যার নাম লেখা হয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। স্বাধীন বাংলাদেশে আমরা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে সেই মুজিব নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করলাম। কিন্তু যাত্রাপথের ঊষা লগ্নেই বিপরীতমূখী দুটি ধারার সংঘাত শুরু হলো। যার প্রথম পর্বের শেষ পরিণতি এসে দাঁড়ালো ১৫ই আগষ্ট।

একটা ধারা মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠা মহান স্বাধীনতার স্বপ্নে ঘেরা, অন্যটি পাকিস্তানের জংলী শাসনের স্পর্শে গড়া স্বাধীন চিন্তা বিবর্জিত জংলী ধারা। এর মধ্যে ছিল পাকিস্তানী জংলী সেনাবাহিনীর বাঙালি সদস্য, আর পরাধীন চিন্তা জড়িত বেসামরিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠি। স্বাধীনতা যুদ্ধ বিরোধী জামাত, মুসলিম লীগ, রাজাকার, আলবদর আলসামস এবং স্বাধীনতা যুদ্ধ মুহুর্তের লুট-পাট, হত্যা, নারী ধর্ষণ প্রভৃতি ঘৃণিত কাজের সঙ্গে জড়িত জনতার একটা অংশ যারা এই দেশেই ছিল। পরবর্তী ঘটনা প্রবাহে প্রমাণিত ঐ স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানী জংলী চিন্তার সহযোগী জন অংশের নেতৃত্বে দাঁড়িয়ে ছিল খুনি মোস্তাক এবং পাকিস্তানী জংলী শাসন অনুসারি নিষ্ঠুর শাসক মেজর জিয়া। এই খুনি মোস্তাক এবং নিষ্ঠুর জংলী শাসক মেজর জিয়াকে তার একটু পরিচয় জেনে নেই।

খুনি মোস্তাক হলো বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারি বঙ্গবন্ধুর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সে প্রস্তাব দিয়েছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানের কনফেডারেশন করে যুদ্ধ থামিয়ে দেওয়া হউক। সে ছিল তখন প্রবাসী সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর ফলে তাকে মন্ত্রী সভা থেকে বাদ দেওয়া হয়। পাকিস্তানী সেনা বাহিনী পিলখানা এবং রাজারবাগ পুলিশ লাইন আক্রমনের পর বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে রাত্র ১২টা বেজে ২৬শে মার্চ হয়ে যায়। কিন্তু ২৫ তারিখেই চট্টগ্রামের বাঙালি সশস্ত্র বাহিনী এবং জনতা চট্টগ্রাম দখল করে নেয়। সেই মুহুর্তে জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তান সেনা ক্যাম্পে।
চট্টগ্রাম তখন মুক্তিবাহিনীর দখলে। সেই অবস্থায় কোন বিশ^াসে মেজর জিয়ার মত একজন বাঙালি মেজরকে পাকিস্তানী জাহাজের অস্ত্র খালাসে পাঠানো হলো। অস্ত্র আনতে তার সঙ্গে পাকিস্তানী সৈনিক ছিল কিনা ? যদি থেকে থাকে তাহলে জিয়া যখন অস্ত্র খালাস না করে চলে আসলেন, তখন ওরা মেজর জিয়াকে গুলি করল না কেন ? মেজর জিয়াই বা ওদের হত্যা করলেন না কেন? তারপর জিয়া যখন অস্ত্র খালাসের অতবড় সুযোগ পেলেন তখন সেখানে জাহাজ পাহাড়ায় থাকা কয়েকজন পাকিস্তানী সেনা সদস্যকে মেরে জাহাজের অস্ত্র নিয়ে চট্টগ্রামে একটা মুক্তিবাহিনী গড়ে তুললো না কেন ? যেমনি বাহিনী গড়ে ছিলেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকি। জিয়া সম্বন্ধে এই ঘটনাগুলো রহস্যে ঘেরা ইতিহাস। এগুলো বিচার না করে জিয়াকে যুদ্ধে জড়ানো এবং জিয়ার হাতে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে সেনাবাহিনীকে যুদ্ধে নামার আহ্বান জানাতে মাইক্রোফোন দেওয়া ছিল মহাভুল। হাজারও প্রশ্নের আবর্তে ঘেরা সেই জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যা পরবর্তী যখন ক্ষমতা দখল করলেন সেই মুহুর্তে মোস্তাক আবারও প্রস্তাব দিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানের কনফেডারেশন করা হউক।

জিয়া সেই বিষয়ে হ্যাঁ না কিছুই না বলে ভিন্ন পথ ধরলেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হয়ে পার্লামেন্ট গঠন করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের বিচার না করা, মোস্তাকের জারি করা নির্দেশ বিল আকারে পার্লামেন্ট থেকে পাশ করিয়ে নিলো। সমস্ত স্বাধীনতা বিরোধীদের মধ্য থেকে নেতৃত্ব নিয়ে মন্ত্রী সভা গঠন করলেন। তিনি সর্বাধিক নিকৃষ্ট যে রাজনৈতিক কৌশলী ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন তাহলো বাঙালি জাতীয়তাবাদকে বিলুপ্ত করে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী তথ্য হাজির করা। মেজর জিয়ার সর্বাধিক ঘৃণিত রাজনৈতিক কৌশল ছিল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলে দুর্ভিক্ষ অবস্থার সৃষ্টি করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মাধ্যমে পাকিস্তানী ভাল ছিল কথাটা মানুষের চিন্তায় প্রবেশ করানো। এই কায়দায় পাকিস্তান ভেঙ্গে শেখ মুজিব ভুল করেছেন প্রমাণ করে তিনি হতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের জাতির জনক। তার এই চিন্তা বাস্তবায়ন করতে যেয়ে তিনি নিষ্ঠুর খুনের পথ বেছে নিয়েছিলেন। জেলহত্যা, তারপর সামরিক ক্যু ঘটায়ে কর্ণেল তাহেরসহ ৪৪০০ শত মুক্তিযোদ্ধা সিনা সদস্যকে ফাঁসীর কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা, ক্যুর মধ্যে ফেলে বিমান বাহিনীর সদস্যসহ প্রায় ৮০০০ হাজারের উপরে সমস্ত বাহিনীর মুক্তিযোদ্ধা সেনা সদস্যকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। মূল উদ্দেশ্য ছিল সর্বস্তর থেকে মুক্তিযোদ্ধা শূন্য করা।

জিয়া জাতির জনক হলে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে হবে, পাকিস্তানীরা সেটা চায় নাই। তারা চেয়েছে বাংলাদেশকে পাকিস্তানের অঙ্গরাষ্ট্র বানাতে। তারা আর একটা চিন্তা মাথায় এনেছিল। শেখ মুজিব হত্যা রাজনৈতিক নেতৃত্ব সহ সেনা সদস্য হত্যার বিরুদ্ধে এক সময় আন্দোলন সৃষ্টি হবে এবং সেই আন্দোলনে জিয়াকে ক্ষমতায় টিকায়ে রাখা সম্ভব হবে না। ফলে রাজনীতির গতি পথ পরিবর্তনের প্রয়োজনে তারা জিয়াকে একই জংলী সামরিক কায়দায় হত্যা করল এবং ক্ষমতায় নিয়ে আসল পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হুসাইন মহম্মদ এরশাদ কে।

কে এই হুসাইন মহম্মদ এরশাদ। তার রহস্যাবৃত্ত চেহারাকে কয়জন চেনেন আমার জানা নাই। এই এরশাদ সাহেব ক্ষমতায় আসলেন সেই পাকিস্তানী জংলী সামরিক আইনের পথ ধরে। মূল ক্ষমতায় পদার্পণের আগেই তিনি মেজর জেনারেল মঞ্জুরের কাঁদে জিয়া হত্যার দায় চাপিয়ে সেনাবাহিনী থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের শূন্য করতে গুলি এবং ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে আরো কিছু মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করার পর ক্ষমতা হাতে নিলেন। তারপর এরশাদ সাহেব তৎকালীন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নিঁখুতভাবে তার অবস্থানটাকে সাজিয়ে নিতে জিয়ার পরিকল্পনা ঠিক রাখলেন। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স বাতিল করলেন না। অর্থনীতিতে কোন রকম বেঁচে থাকার কৌশল অবলম্বন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে একটা সাংবিধানিক পরিবর্তন আনলেন। তিনি ৩০ লক্ষ্য শহীদি রক্তের অর্জন ধর্ম নিরপেক্ষতা বাদ দিয়ে সেই পাকিস্তানী চিন্তা টেনে আনার গভীর ষড়যন্ত্রে রাষ্ট্র ধর্ম করলেন ইসলাম। উদ্দেশ্য এক সময় বাংলাদেশকে পাকিস্তানের কনফেডারেশন করবার চিন্তা মানুষের চিন্তায় ঢুকানো।

তার এই কৌশল বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি বাংলাদেশের জনতার ধর্মীয় সরল বিশ^াসকে রাজনৈতিক পুঁজি হিসাবে ব্যবহারের জন্যে দুটি ধাপ্পাবাজি পথ অবলম্বন করেছিলেন। প্রথমতঃ তিনি সমস্ত ধর্ম ব্যবসায়ী পীরের আস্তানায় প্রবেশ করলেন। দ্বিতীয় পথ নিলেন নামাজ পড়ার স্বপ্ন দেখা। হঠাৎ করে তিনি স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন এবং প্রচার শুরু করলেন। সপ্তাহে অথবা মাসে আল্লাহ স্বপ্ন দেখাচ্ছে অমুক অমুক মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য। আর তিনি সেই মসজিদে ছুটে যাচ্ছেন। এরশাদের এই ধর্মীয় ধাপ্পাবাজিতে ধর্মবিশ^াসী সরলপ্রাণ মানুষেরা মনে করেছিলেন এরশাদ আল্লাহর ওহি প্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। এটা যে তার ধর্মীয় ধাপ্পাবাজি ছিল সেটার প্রমাণ হলো- তার ক্ষমতা চলে যাবার পর নামাজ পড়ার স্বপ্ন দেখাও বন্ধ হয়ে গেল। ক্ষমতাচ্যূতের পর আর কোন দিন স্বপ্ন দেখে নামাজ পড়তে গিয়েছেন বলে আমার জানা নাই। এই হুসাইন মহম্মদ এরশাদের মূল পরিচয় হলো স্বাধীনতা যুদ্ধ মুহুর্তে তিনি ছিলেন পাকিস্তানে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে তার কোন সম্পর্ক ছিল না। তিনি তখন ছিলেন লেঃ কর্ণেল। সেই সময় মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে যারা বাংলাদেশকে সমর্থন দিয়েছিলেন তাদের বিচারের জন্যে পাকিস্তানী জান্তা সরকার একটা জুডিশিয়াল ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। হুসাইন মহম্মদ এরশাদ সেই বাঙালি নিধন ট্রাইব্যুনালের সদস্য ছিলেন। সেখান থেকেই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ বিরোধী পাকিস্তানী ষড়যন্ত্রের সাথে সংযুক্ত হয়েছিলেন, ক্ষমতায় আসা এবং ক্ষমতায় এসে নেওয়া তার প্রশাসনিক কৌশল থেকেই সেটা দিনের আলোর মতই পরিস্কার হয়ে উঠেছে। এরশাদ ধীরে ধীরে বাংলাদেশের সব অর্জন মুছে ফেলে বাংলাদেশকে ইসলামিক প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরের স্বপ্ন দেখে ছিলেন।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর এই সংকটাপন্ন ঘটনা প্রবাহ সীমান্তের ওপাড়ে অবস্থান করে, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সুক্ষ্ম ধারায় চেতনার গভীর স্পর্শে বিচার বিশ্লেষণ করে, বাংলাদেশকে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ভাবে সাজিয়ে জাতীয় ইতিহাসের পুনর্জীবিত করার যে সুকঠিন এবং অপ্রতিরোধ্য পরিকল্পনা তৈরি করেছিলেন সেটাই হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শন।

রাজনৈতিক বাধার প্রাচীর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোড ম্যাপ বাস্তবায়নের পথে বিজ্ঞানের সৃজনশীল চিন্তা বাস্তবায়ন বিশ^বাসীকে অভিভূত করেছে বলেই, বিশ^জনমত তার রাষ্ট্র কৌশলকে রাষ্ট্র দর্শন হিসাবে গ্রহণ করেছে। দ্বিতীয় বিশ^ যুদ্ধের পর পুঁজিবাদী বিশে^র নয়া সা¤্রাজ্যবাদী শোষণের বিরুদ্ধে আত্ম-সচেতন জাতিসত্ত্বা গঠনে আত্মনির্ভর অর্থনীতি কিভাবে গড়ে তুলতে হয় পদ্মা সেতুই তার জীবন্ত সাক্ষী। কথিত আছে ডাকাত কোন ঘরে ডাকাতি করলে তার কিছু নিদর্শন রেখে যায় যা থেকে সে পরবর্তীতে ধরা পরে। পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধচারণ করে যেভাবে বাংলাদেশের বিএনপি এবং ডঃ ইউনুস জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নের পশ্চাৎ পদ চিন্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে তেমনি অন্য দিকে একই ভাবে মানবতার মুখোশধারি আমেরিকা জাপান তাদের অমানবিক ঘৃণিত অর্থনৈতিক বিশ^ শোষণের উলঙ্গ প্রকাশ ঘটিয়েছে। তবে আমি তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি যে, এই তিন অপশক্তি পদ্মা সেতু নিয়ে এই অপকর্ম না করলে ঘোষিত-নির্যাতিত বিশ^ তাদের জাতীয় মুক্তির পথের দেখা এত তাড়াতাড়ি পেতেন কিনা সন্দেহ। আগামীতে দেশীয় রাজনৈতিক চক্রান্তের বেড়াজাল ভাঙতে পাড়লে আমরা বিশ^ জনমতের কাছে দাবি করতে পারবো বিশ^ মানবিক শান্তির পথ প্রদর্শক হিসাবে রাষ্ট্র দর্শনে ডক্টরেট এবং বিশ^ শান্তির নোবেল পুরস্কার শেখ হাসিনাকে প্রদান করা হউক।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দর্শনের মধ্যে আমি বিশেষ করে ৪টি শিক্ষা পেয়েছি;
১। স্বনির্ভর জাতি গঠনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলা।
২। জাতিগত শোষকের কাছে মানবতার বক্তব্য একটা মূল্যহীন আবেগ মাত্র।
৩। দেশ প্রেমিক নেতৃত্ব ছাড়া স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলা অসম্ভব।
৪। স্বনির্ভর অর্থনীতি ছাড়া আত্মনির্ভর জাতি গঠন অলীক চিন্তা মাত্র-

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যার পর জিয়াউর রহমানের প্রথম সৃষ্টি পাকিস্তানই ভাল ছিল। তার সাথে যুক্ত হয়ে ছিল এরশাদ সাহেবের ধাপ্পাবাজি ইসলাম করণ নীতি। এখন দুই চক্রান্ত এক হয়ে পথ হারায়ে ফেলেছে।

তার বিপরীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা পাকিস্তানী শোষণের রাজনৈতিক কৌশল পায়ের জুতার তলে ফেলে বাংলাদেশের সুন্দর জাতীয় জীবন গঠনের সর্বাঙ্গীন সুন্দর এক মহা পরিকল্পনা হাতে নিয়ে জাতির সামনে দাঁড়িয়েছেন। তাঁর হাতে আগষ্ট ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে বাংলার জাতীয় ইতিহাস রক্ষার মানচিত্র। বাঙালীর বাংলা জাতিসত্ত্বাকে উন্নয়নের কোন পাহাড় চূড়ায় অবস্থান করাতে চান, তা তিনি জানিয়ে দিয়েছেন জাতির নিজস্ব টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আজ সামনা সামনি দুই বিপরীতমুখী শক্তি দন্ডায়মান। একটি পাকিস্তানী দুর্গন্ধময় পশ্চাতপদ অর্থনৈতিক কৌশল হাতে অপরটি পাকিস্তানী বেড়াজাল ভেঙ্গে স্বাধীনতার মুল লক্ষ্য সুখী সুন্দর জীবন গঠনের লক্ষ্য নিয়ে। যেখানে জাতি হবে স্বনির্ভর সুন্দর জীবনের অধিকারী।

প্রথমটির সাথে আছে পাকিস্তানের এবং নব সা¤্রাজ্যবাদী শোষকের মদদে চালিত বিএনপি, জামাত, মুসলিম লীগ প্রভৃতি স্বাধীনতা বিরোধী এবং স্বাধীনতা বিরোধী ঘৃণিত গোষ্ঠীর রক্ষক, অন্যদিকে দাঁড়িয়েছেন মহান স্বাধীনতার গৌরব উজ্জল ইতিহাস সংরক্ষণে উন্নত জাতীয় জীবন গঠনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক ১৪ দলীয় ঐক্যজোট সরকার। যার নেতৃত্বে আছেন জাতীয় ইতিহাসের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সুযোগ্য কন্যা আজকের বিশ^ মানবিক রাষ্ট্র গঠনের দিক দর্শক, দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশপ্রেমিক ১৪ দলীয় সর্বজনাব আমির হোসেন আমু, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন প্রমুখ ১৪ দলীয় নেতৃবৃন্দ। ৫০ বছরের স্বাধীনতার ইতিহাসে এবারই প্রথম জাতির সর্বস্তরের জনশক্তি নব সাজে সাজছে। জনতার সম্মিলিত শক্তি এবার স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের রাজনৈতিক ভাবে বিষদাঁত উপরে দেবে। আমি বিশ^াস করি মহান স্বাধীনতার মূলমন্ত্রে উদ্বুদ্ধ সর্বস্তরের জনশক্তি ৭০ এর মতো করে লিখবে ২০২৪ সালের ইতিহাসের নব সংস্করণ। ৭০ এর নির্বাচন পাকিস্তানকে মুছে বাঙালী জাতিকে উপহার দিয়েছিল বাংলার স্বাধীনতা, ২০২৪ সালের নির্বাচন মুছে দেবে পাকিস্তানের প্রেতাত্বাচালিত পাকিস্তান মার্কা রাজনীতির শেষ চিহ্ন। উন্নয়নের রোড ম্যাপে যোগ হয়ে ১৫ই আগষ্টে ঝড়া জাতির জনকের বুকের রক্ত কণিকা একদিকে জাতিকে আত্মসচেতন করে তুলবে। অন্যদিকে নির্যাতিত বিশ^জাতি সত্ত্বার মুক্তির পথ প্রদর্শক শেখ হাসিনার কর্মশক্তির অনুপ্রেরণা যোগাবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দেশের উন্নয়নে আপনার রোড ম্যাপই চূড়ান্ত। দেশে শুধু পানি সমস্যা সমাধানের লাগসই প্রযুক্তির শূন্যতা বিরাজমান। আপনি সেটা পেতে উদগ্রীব হয়ে আছেন। আমার আত্মবিশ^াস খুব শীঘ্রই আমি শূন্যস্থান পূরণ করবো। তাঁর আগে আপনার কাছে আমি সবিনয়ে একটি অনুরোধ জানাচ্ছি। ভারত পানির সমস্যা মেটাতে নদীর উজানমুখে বাঁধ সৃষ্টিতে হাত দিয়েছে। সেই কারণেই আমাদের পানি সমস্যা সমাধানে নদীর ভাটিতে বাঁধ সৃষ্টির কোন বিকল্প নাই। তিস্তা ব্যারেজ শতভাগ সঠিক একটি প্রতিষ্ঠান। আপনার পদ্মা ব্যারেজ নির্মানের পদক্ষেপও ছিল শত ভাগ সঠিক পদক্ষেপ। নদীর ব্যারেজে পানি ধরে রাখার সমস্যা প্রধানত ভারতীয় বাঁধ নয়, সমস্যা আমাদের অভ্যন্তরীণ। এই সমস্যার পথ আমি খুজে পেয়েছি। আমি আশা করছি খুব শীঘ্রই সেটা আপনার হাতে পৌঁছাব। আপনার কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ আমাদের আন্তর্জাতিক নদীর ভাটি প্রান্তে যেহেতু বাঁধ দিতেই হবে, সেই কারণে আমাদের আন্তর্জাতিক নদীগুলোর ভাটি মুখে ব্রিজ তৈরী না করে, ব্যারেজ তৈরী করলে একই সঙ্গে আমরা পানি সংরক্ষণ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা দুটিই সমভাবে সম্পন্ন করতে পারবো। বিষয়টি অনুগ্রহ করে চিন্তা করতে বিশেষভাবে সবিনয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।

পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক আলোচনা, অনেক মূল্যায়ন হয়েছে। আমি আমার মূল্যায়ন আমার স্বভাব সুলভ কবিতার ভাষার মাধ্যমেই সমাপ্তি টানবো-

মাথা তোল মাগো
¬
পদ্মা সেতুর রূপ রং দেখে
শেষ হবে নাকো চেনা
হৃদয়ে যার স্বাধীন বাংলা
আভরণে হাসিনা।

পদ্মা সেতু নহে কো শুধুই
ইট পাথরের বেড়া
দেশ প্রেমেরে স্বর্ণালী রঙে
সে ইট পাথর মোড়া।

৩০ লক্ষ শহীদি রক্তে
গড়া যে বাংলাদেশ
যে বাংলা রক্ষায় জাতির জনকের
সব হলো নিঃশেষ।

জাতির জনকের জীবন নিয়েও
ক্ষান্ত হয়নি যারা
বাংলা নিয়ে এখনও ষড়যন্ত্রে
লিপ্ত রয়েছে তারা।

উন্নয়ন না করে পেছনে ফেলে
জাতীয় অর্থনীতি
পাকিস্তানই ভাল মনে ভাবানো
দেশবিরোধী কূটনীতি।

যা ছিল ঐ ধূর্ত জিয়ার
কূটনৈতিক খেলা
সব গুড়িয়ে পদ্মা সেতু
উড়িয়েছে নুতন ভেলা।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ওদের
ধরিয়েছে মৃত্যু কাঁপন
উন্নয়ন জোয়ারে জিয়া এরশাদকে
করে দিয়েছে দাফন।

নির্ঘুম ছিল শহীদি আত্মা
হাজারো প্রশ্ন তার
কেন হাসে না সোনার বাংলা
হৃদয় ভরা হাহাকার।

আমরা শুনিনি জল ভরা চোখে
শহীদের কান্না
মাতৃমনের হৃদয় কর্ণে
শুনেছিল হাসিনা।

সোনার বাংলাকে কঙ্কাল বানানো
ষড়যন্ত্রের জাল
ছিন্নভিন্ন পদ্মায় ডোবাতে
সেতু উড়িয়েছে পাল।

শেখ হাসিনা রতœ তুমি
মনিহার বাংলার
স্বপ্নপূরণে তাই দিলে জাতিরে
পদ্মা সেতু উপহার।

তোমার দর্শনের আলোয় আজিকে
স্তম্ভিত বিশ^
ছুটছে সবাই পথ খুঁজে পেতে
বিশে^ যত আছে নিঃস্ব।

অন্তর চোখে চেয়ে দেখো ওই
লাখো শহীদের মুখ
জাতির জনকও হাসছে এবার
ভুলে যেয়ে সব দুখ।

মাথা তোল- মাথা তোল মাগো
প্রিয় জন্ম ভূমি
দেখুক বিশ^ ধন্য হবো
তোমার কদম চুমি।
এবার শুরু হবে নুতন বাংলায়
নিয়ে নব উদ্দাম
বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত সেই
মুক্তির সংগ্রাম।

জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু
চিরজীবি হও বাংলা তুমি
হাজার বছরের শৃঙ্খল ভাঙ্গা
আমার জন্মভূমি।

সবার প্রতি রইল আমার
সালাম, প্রণাম এবং শুভেচ্ছা।

লেখক : বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন মিয়া
সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য
রাজবাড়ী-২।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান
পাংশা, রাজবাড়ী।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com