রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

চাকরির কথা বলে আরমানকে পাঠানো হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ॥ মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়ে আছেন রাশিয়ার হাসপাতালে

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : শনিবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ২১ Time View

চকলেট ফ্যাক্টরিতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার কুষ্টিয়াডাঙ্গী গ্রামের আরমান মন্ডলকে (১৮) রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পাঠায় দালাল চক্র। সেখানে স্থলমাইন বিস্ফোরণে মারাত্মক আহত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

আরমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় শোকের মাতম। মা ফাহিমা বেগমসহ পরিবারের সদস্যরা আহাজারি করছেন। এসময় মুঠোফোনে আরমান জানান, রিক্রুটিং এজেন্সি ‘ড্রিম হোম ট্রাভেলস’ তাদের সঙ্গে চুক্তি করে। এরপর তাকে ও আরও ১০ জন তরুণকে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরবে পাঠানো হয়। সেখানে এক মাস অবস্থানের পর তাদের রাশিয়ান এক চক্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর তাদের এক মাসব্যাপী কমান্ডো প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এসময় দুইজন কৌশলে দেশে ফিরতে পারলেও বাকি আটজনকে মারধর করে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়।

আরমান বলেন, আমরা বারবার বোঝানোর চেষ্টা করেছি যে আমরা কর্মী ভিসায় এসেছি। যুদ্ধে অংশ নিতে চাই না। কিন্তু তারা আমাদের জোরপূর্বক সামরিক পোশাক পরিয়ে হাতে অস্ত্র ও গোলাবারুদ তুলে দেয়। কিয়েভে ড্রোন হামলা ও স্থলমাইন বিস্ফোরণের সময় আমার সামনে জিপে থাকা আটজনই মারা যান। আমি পেছনে মোটরসাইকেলে থাকায় বেঁচে যাই। এখন আমি দেশে ফিরতে চাই। পাসপোর্ট অনুযায়ী আরমানের জন্ম ২০০২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। যুদ্ধের জন্য তাকে যে সৈনিক নম্বর দেওয়া হয়েছিল (অ৫-১৯৭০৫৯)। তার একটি ছবিও পাওয়া গেছে।

হাতে তসবিহ নিয়ে বুকের কাছে ছেলের ছবি ধরে আহাজারি করতে থাকা আরমানের মা ফাহিমা বেগম বলেন, প্রতিবেশী মৃত ফটিক মন্ডলের জামাতা মঞ্জুরুল খান দুই বছর আগে রোমানিয়া পাঠানোর কথা বলে ৬০ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু সে টালবাহানা করতে থাকে। পরে রাশিয়ার চকলেট ফ্যাক্টরিতে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে ৮ লাখ টাকা নেয়। তিন মাস আগে প্রথমে সৌদি আরবে পাঠায়। সেখানে ওমরাহ করানোর পর কাতার হয়ে দেড় মাস আগে রাশিয়ায় পাঠানো হয়। পরে সেখানে সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হয়। এক মাস প্রশিক্ষণের পর তাকে যুদ্ধে পাঠানো হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম, আরমানের চাচা আতিয়ার রহমান, চাচী রাফেজা বেগম ও দাদি রাবেয়া বেগম বলেন, আমরা আমাদের আরমানকে ফেরত চাই। সেই সঙ্গে প্রতারকদের শাস্তি চাই।

মাঝবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com