রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামপুর বিলের তিন ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। ফলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা বুধবার জেলা কৃষি কর্মকর্তা, সহকারী কমিশনার (ভূমি)র কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগকারী লোকমান, রশিদ, আলমগীর ঢালী ও আইয়ুব আলীসহ স্থানীয়রা জানান, রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের রামপুর বিলের জমি ব্যক্তি মালিকানাধীন হলেও এর একপাশে সরকারি একটি খাল রয়েছে। এই খাল দিয়ে রামপুর ও কল্যাণপুর বিলের পানি নিষ্কাশন হতো। কিন্তু সিদ্দিক ও হায়দার নামে দুজন ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিলের মুখের সরকারি খাল বন্ধ করে দেন এবং সেখানে দুটি পুকুর খনন করেন। পুকুর খননের ফলে পানি বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে রামপুর ও কল্যাণপুর বিলের শত শত কৃষকের জমি পানিতে ডুবে ফসল নষ্ট হচ্ছে। কৃষকরা জানান, এর আগেও তারা এই বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছিলেন, কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্তমানে ওই চক্রটি ফের ফসলি জমি কেটে মাটি ইটভাটায় বিক্রি করছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পুকুর সংস্কারের আবেদন দিলেও তারা মূলত নতুন করে ফসলি জমি কেটে পুকুর তৈরি করছে।
মাঠপর্যায়ে গিয়ে দেখা যায়, ভেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। চারপাশে ধান রোপণের জন্য জমি প্রস্তুত করা হয়েছে, কিন্তু মাঝখানে মাটি কেটে বিশাল গর্ত তৈরি করা হচ্ছে। ভেকু চালক শাহীন জানান, মাটি ব্যবসায়ী এনামুল এই জমির মাটি কিনেছেন, তাই তারা কাটার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।
অভিযুক্ত মো. সিদ্দিক সেখ ও হায়দার আলী সেখকে খুঁজতে গেলে স্থানীয়রা জানান, সাংবাদিকদের আগমনের খবর পেয়ে তারা পালিয়ে গেছেন। তাদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জনি খান জানান, একটি অভিযোগের অনুলিপি পেয়েছি। ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার বিষয়টি সত্য। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি)-কে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের হন্তক্ষেপ প্রয়োজন।