‘‘ক্লিন এনার্জি : টেকসই ভবিষ্যৎ” এই শ্লোগানে রাজবাড়ী প্রধান সড়কে প্রেস ক্লাবের সামনে রবিবার সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), ইয়্যুথ এনগেজ এন্ড সাপোর্ট গ্রুপ (ইয়েস), রাজবাড়ী অ্যাকটিভ সিটিজেন গ্রুপ (এসিজি)-এর আয়োজনে একটি মানবববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সনাক, ইয়েস এসিসি সদস্যগণসহ বিভিন্ন পেশার শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশগ্রহন করেন।
ইন্টারন্যাশনাল ক্লিন এনার্জি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক সভাপতি প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান। তিনি বলেন আমাদের ক্লীন এনার্জির ব্যবহার ব্যবহার বাড়াতে হবে। আমাদেরকে বায়োগ্যাস, সৌরশক্তি, জলবিদ্যুৎ ব্যবহার করে পরিবেশ দূষণ রোধ করতে হবে, জীবাস্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাতে হবে। দিবসের ধারণাপত্র পাঠ করেন সনাক সদস্য কমল কান্তি সরকার।
এছাড়াও দিবসের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন শের ই বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক রেজাউল করিম, সাংবাদিক জাহাঙ্গীর হোসেন, রাজবাড়ী সরকারি কলেজ এর শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান প্রমূখ। বক্তারা তাদের বক্তব্যে জীবাশ্ম জ্বালানির উপর চাপ কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। সৌরশক্তি, বায়োগ্যাসের মতো নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে জনসাধারণকে উৎসাহিত করতে সরকারের আরো কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে হবে। মানববন্ধনে ক্লিন এনার্জি হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি একটি আশার আলো হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যা টেকসই ভবিষ্যতের পথে উত্তরণে অন্যতম অনুঘটক হিসাবে কাজ করছে। সৌরশক্তি, বায়ুশক্তি, জলবিদ্যুৎ এবং ভূতাপীয় শক্তির মতো নবায়নযোগ্য উৎস থেকে প্রাপ্ত জ্বালানি আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে এবং বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রভাব কমাতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানির রূপান্তর সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রথমবার টিআইবি এ দিবসটি উদযাপন করছে। দিবসটিকে সামনে রেখে টিআইবি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে বহুমুখী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এসময় আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্ন জ্বালানি দিবস টি উপলক্ষ্যে জ্বালানি খাতে সুশাসন নিশ্চিতসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির রূপান্তরে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে টিআইবি সংশিষ্ট অংশীজনের বিবেচনার জন্য বেশ কিছু সুপারিশ প্রস্তাব করে।
কার মধ্যে রয়েছে অধিকতর জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর বিদ্যমান জ্বালানি মহাপরিকল্পনা ‘ইন্টিগ্রেটেড এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার মাস্টার প্ল্যান (আইইপিএমপি-২০২৩)’ অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে এবং জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার হ্রাস এবং জ্বালানি মিশ্রণে নবানয়নযোগ্য জ্বালানির পরিমাণ বৃদ্ধি- এমন মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে নতুন একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি ও কার্যকর করতে হবে। এক্ষেত্রে-
স্বার্থের দ্বন্দমুক্ত বাংলাদেশি বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে এবং নাগরিক সমাজের মতামতের ভিত্তিতে জাতীয় নীতি ও আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভর প্রকল্পে অর্থায়ন না করাসহ এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বন্ধে সময়াবদ্ধ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।
একটি সুনির্দিষ্ট সময়াবদ্ধ রোডম্যাপসহ কৌশলগতভাবে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে উত্তরণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
মহাপরিকল্পনায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং জীবন-জীবিকা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে একটি স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি সময়াবদ্ধ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।
সম্ভাবনা যাচাই সাপেক্ষে উৎস ভেদে (সৌর, বায়ু ও জলবিদ্যুৎ, ওয়েস্ট টু এনার্জি) নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে।
২০৪০ সালের মধ্যে মোট জ্বালানির ৪০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে শতভাগ জ্বালানি নবায়নযোগ্য উৎস থেকে উৎপাদনের একটি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
জ্বালানি খাতে নীতি করায়ত্ত বন্ধ এবং স্বাথের দ্বন্দ প্রতিরোধসহ এ খাত সংশিষ্ট সিদ্ধান্ত গ্রহণ-প্রক্রিয়ায় জাবাবদিহি নিশ্চিতে সংশিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি স্বাধীন তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে। ইত্যাদি।