সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:১৩ অপরাহ্ন

ঘন কুয়াশায় ফেরী লঞ্চ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে চলে ট্রলার

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : রবিবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৫
  • ২৫ Time View

ঘনকুয়াশার কারণে পদ্মা নদীতে ফেরী ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকলেও ঝ্ুঁকি নিয়ে চলে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। তবে এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান।

জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুট ব্যবহার করেই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী পদ্মা নদী পার হয়ে রাজধানীর ঢাকায় যায়। সাথে যাত্রীবাহী বাস, পন্যবাহী ট্রাক সহ বিভিন্ন ছোট বড় যানবাহন পারাপার হয়। শীত মৌসুমে তীব্র কুয়াশার কারণে মাঝেমধ্যেই ফেরী ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকে। এতে চালক ও যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ বাড়ে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে অবৈধভাবে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপার করছে। ঘন কুয়াশায় ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধের পরও প্রকাশ্যে ফেরী ঘাটের পন্টুন থেকেই যাত্রী উঠানামা ও নদী পারাপার করা হচ্ছে। এতে ঝুঁকি বাড়ছে যাত্রীদের। ফেরী ঘাটের পন্টুনে ও নদীতে নৌ-পুলিশের উপস্থিতি না থাকায় কুয়াশায় যেকোন সময় নদীতে প্রাণঘাতির মতো বড় ধরণের দুর্ঘটনারও আশংকা করছেন অনেকে। এছাড়াও মহাসড়কে পুলিশের নিয়মিত টহল না থাকায় প্রতিনিয়ত রাতে ও কুয়াশার মধ্যে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ছেন যাত্রী সহ চালকরা। এতে ঘাট এলাকায় চালক ও যাত্রীদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। আর যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ ঘন কুয়াশার মধ্যে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার চলাচল বন্ধ করবে এমন প্রত্যাশা সাধারণ যাত্রী ও চালক সহ সচেতনমহলের।

ঘনকুয়াশায় ফেরী ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার পরেও ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে নদী পারাপারে জন্য যাত্রী প্রতি ভাড়া নেয়া হচ্ছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। কোন কোন সময় ২০০ টাকার অধিকও ট্রলার ভাড়া নেওয়ার অভিযোগও করেছেন যাত্রীরা। এতে যাত্রীদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে এবং জীবণের ঝুঁকিও বাড়ছে।

শনিবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দৌলতদিয়া ঘাটের ৭ টি ফেরী ঘাটের মধ্যে ৩ টি ঘাট সচল রয়েছে। এর মধ্যে ৩, ৪ ও ৭ নম্বর ফেরীঘাট চালু আছে। ঘুন কুয়াশার মধ্যে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত ৩ টা থেকে ফেরী চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। একইসাথে লঞ্চ চলাচলও এসময় বন্ধ থাকে। কুয়াশা কেটে গেলে পুনরায় সকাল ৭ টার পর থেকে দৌলতদিয়া- পাটুরিয়া নৌরুটে ফেরী ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হয়। তবে একটানা ৪ ঘন্টা ফেরী চলাচল বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ বাড়ে। এ সুযোগে শনিবার ভোর সকালে তীব্র কুয়াশার মধ্যে ফেরীঘাটের ৩, ৪ ও ৭ নম্বর পন্টুন থেকে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে করে যাত্রী পারাপার করতে দেখা গেছে। ঘনকুয়াশার মধ্যে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপারেও ছিলো বড় ধরণের প্রাণঘাতীর ঝুঁকি। তবে ফেরির পন্টুন ব্যবহার করে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে যাত্রী পারাপার করলেও ফেরিঘাট বিআইডব্লিউটিসিরও কোন ধরণের নিষেধাজ্ঞা ছিলো না। শুক্রবার ঘনকুয়াশার কারণে টানা ৯ ঘন্টা বন্ধ ছিলো ফেরী ও লঞ্চ চলাচল। তবে দেখা গেছে এর মধ্যেই অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করে যাত্রীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলে ঘাটের অসাধু চক্রের সিন্ডিকেট তারা দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটের পন্টুন থেকে যাত্রীদের পাটুরিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এসময় ঘাটের ৩ টি ফেরীর ঘাটের পন্টুনই একই রকম চিত্র দেখা গেছে।

নাফিজ নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, এখানে প্রচুর কুয়াশা। এখানে অবৈধভাবে অনেক ট্রলার চলাচল করছে। এখানে উচিত ছিলো নৌ পুলিশের থাকা। এগুলো পাহাড়া দেয়া। কিন্তুু এখানে কোন সময় এরা পাহাড়া দিয়ে থাকে না। উচিত ছিলো কুয়াশার মধ্যে নৌ পুলিশের ঘাটে থাকা। আমরা চাই যে এখানে যাতে নৌ পুলিশ থাকে এবং আমাদের নিরাপত্তা থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রলার চালক বলেন, আমরা কী যাত্রীদের জোর করে নিচ্ছি। যাত্রীরাই তো যেতে চাচ্ছে। এখানে আমাদের অপরাধ কী? আমরা ঘাটের সবাই কে ম্যানেজ করেই যাত্রী পারাপার করছি।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন জানান, সময়ের চেয়ে জীবনের মূল্য অনেক বেশি। এজন্য সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিষয়টি উধ্বর্তন মহলে অবহিত করা হবে বলেও জানান তিনি।

ফরিদপুর অঞ্চলের নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এবিষয়টি আমার নলেজে নেই। আর মানুষের প্রয়োজনে অনেক সময় আইন মানতে চায় না। আপনি বলেছেন আমি এবিষয়টি কথা বলে দেখি। ঘাটে আমরা পারি না আমাদের সক্ষমতা কম লোকবল কম। এখানে জেলা পুলিশ আছে, থানা আছে। আমরাও আছি। তবে বিষয়টি আমি দেখবো। ঘাটে নৌ-পুলিশের দায়িত্ব পালন উপস্থিতি অবশ্যই প্রয়োজন আছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদুর রহমান জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা মিটিং করেছি সেখানে নৌপুলিশ ও উপরে থানা পুলিশ নিয়মিত টহলে আছে। আর যাতে ঝুঁকিপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হলে যেনো নৌ-যান চলাচল বন্ধ রাখে এরকম ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা আছে। এরকম যদি চলে থাকে আমরা খবর পেলে আবারো নৌ-পুলিশকে বলে দেবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com