রাজবাড়ীতে ভালো হয়েছে ফুলকপির ফলন। এজন্য হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। তেমনই একজন রাজবাড়ীর সুলতানপুর ইউনিয়নের শাইলকাঠি গ্রামের কৃষক আমজাদ মীর (৫২)। চলতি মৌসুমে তিনি ৮০ শতাংশ জমিতে আবাদ করেছেন আগাম জাতের ফুলকপি। বাজারে অধিক দাম পাওয়ায় হাসি ফুটেছে তার মুখে।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রাজবাড়ী জেলার ৫ উপজেলায় মোট আবাদি জমি ৭৯ হাজার ১৬৩ হেক্টর। এর মধ্যে চলতি মৌসুমে জেলায় ৪৫০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে। যার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর ৪৪৫ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদে উৎপাদন হয়েছিল ১০ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন। যা প্রতি হেক্টরে ২২ থেকে ২৫ টন। রাজবাড়ী জেলা সদরে ১০০, গোয়ালন্দে ৪০, পাংশা উপজেলায় ৭৫, কালুখালীতে ৫০ এবং বালিয়াকান্দি উপজেলায় ১৮০ হেক্টর জমিতে ফুলকপির আবাদ হয়েছে।
কৃষক আমজাদ মীর জানান, চলতি মৌসুমে ৮০ শতাংশ জমিতে আগাম উচ্চফলনশীল জাতের ফুলকপি চাষ করি। ইতোমধ্যে অর্ধেক খেতের আগাম ফুলকপি বিক্রি করেছি। বাকি ৪০ শতাংশের কপি এখনও বিক্রির অপেক্ষায়। ৮০ শতাংশ জমিতে ফুলকপির আবাদে আমার সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। শুরুতে বাজার ভালো থাকায় প্রায় ১ লাখ টাকার মতো বিক্রি করেছি। বাকী ফসল মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকার ফুলকপি বিক্রির আশা।
কুদ্দুস শেখ বলেন, আমি এ বছর ৩০ শতাংশ জমিতে উচ্চ ফলনশীল আগাম জাতের ফুলকপি আবাদ করছি। ২০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। প্রায় ৮০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হবে।
একজন সবজি বিক্রেতা জানান, এখন কাঁচা সবজি বাজারে ফুলকপি খুচরা প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১ মাস আগে প্রথম প্রথম ১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। যেসব কৃষকেরা আগাম চাষ করেছিল তারা অধিক লাভবান হয়েছেন।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সুলতানপুর ইউনিয়নের শাইলকাঠি গ্রামের কৃষকেরা আগাম ফুলকপি চাষ করে বাম্পার ফলন আশা করছেন। বাজার মূল্য ভালো পাওয়াতে তারা আনন্দিত। কৃষকদের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করছি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জনি খান জানান, আমাদের পরামর্শ ও সহযোগিতার কারণে প্রতিবছর ফুলকপির আবাদ বাড়ছে। তবে ভালো দাম পাওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করছি। ফুলকপি চাষে উৎপাদন খরচ কম ও বেশি লাভ হওয়ায় কৃষকেরা দিন দিন আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি কৃষি বিভাগ ভালো বীজ দেওয়াসহ পরিদর্শন করে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে আসছে।