দক্ষিণ বঙ্গের প্রবেশদ্বারখ্যাত রাজবাড়ী-মানিকগঞ্জ জেলার ব্যস্ততম নৌরুট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাট হয়ে দক্ষিণ বঙ্গের ২১ জেলার মানুষ বাড়ি ফিরছে প্রিয়জনদের সাথে ঈদ করতে। এ নৌরুটে এবার কোনো প্রকার ভোগান্তি না থাকায় স্বস্তিতে ঘাট পার হচ্ছে পরিবহন ও সাধারণ যাত্রিরা।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে যাত্রীদের উপচে পড়া ভীড় দেখা গেছে। সরেজমিনে দৌলতদিয়া ৭ নং ফেরিঘাটসহ অন্যান্য ঘাট ঘুরে দেখা যায়, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ফেরিঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরি ও লঞ্চে যাত্রী ছিল চোখে পরার মতো। যাত্রীরা নৌপরিবহন থেকে নেমে তাদের গন্তব্যে যাওয়ার জন্য সুবিধা মত ও পছন্দের যেকোনো পরিবহনে নির্বিঘেœ বাড়ির পথে রওয়ানা দিচ্ছে। অপরদিকে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আগত পরিবহন কোনো রকম যানজট ছাড়াই নির্বিঘেœ ফেরিতে উঠে ঢাকার পথে রওয়ানা দিচ্ছে। ঘাটে আগত যাত্রীদের নিরাপত্তা দিতে সার্বক্ষণিক কাজ করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, থানা পুলিশ, নৌপুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
দৌলতদিয়া ৭নং ফেরিঘাটে, ঢাকা হতে আগত ঝিনাইদহগামী মানিক সরদার নামে এক যাত্রী বলেন, সকালে গাবতলী থেকে সেলফি পরিবহনে রওয়ানা দিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে ফেরিতে উঠে দৌলতদিয়া ঘাটে নেমেছি। বিগত বছরগুলোতে যানজট থাকলেও গত ঈদ এবং এবারের ঈদেও স্বস্তিতেই বাড়িতে ফিরতে পারছি। মহাসড়ক ও ফেরিঘাটে কোনো প্রকার যানজট নেই। ঘরমুখী মানুষ স্বস্তিতেই বাড়ি ফিরছে।
সাভার ইপিজেড এলাকার গার্মেন্টস কর্মী রোকেয়া পারভীন নামে একজন বলেন, নবীনগর থেকে লোকাল বাসে এসে ফেরিতে পার হলাম। কোনো রকম ভোগান্তি নেই। ঘাটে আসা মাত্রই পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় কোনো রকম ভোগান্তি ছাড়াই পার হতে পারছে মানুষ। আশা করছি দ্রুতই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারব।
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারি ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ভোর থেকেই এ নৌরুটে যাত্রী ও পরিবহনের চাপ বেড়েছে। তবে পর্যাপ্ত ফেরি ও লঞ্চ থাকায় কোনো প্রকার যানজট এবং ভোগান্তি ছাড়াই পারাপার হচ্ছে মানুষ। ভোগান্তি নেই বললেই চলে। এই নৌরুটে পরিবহন ও যাত্রী পারাপারে ছোট-বড় মিলে ১৭ টি ফেরি চলাচল করছে।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, এবার ঈদে এই নৌরুটে কোনো প্রকার ভোগান্তি নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঈদ যাত্রাই যাত্রিদের নিরাপদে বাড়ি পৌঁছনোর জন্য সর্বদা কাজ করছে। গাড়িগুলো যাত্রিদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া যাতে না দিতে পারে সেক্ষেত্রে প্রতিটি কাউন্টারের ভাড়ার চার্ট লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। নদী পার হতে আসা যাত্রীদের জন্য বিআইডব্লিউটিসি তিনটি ফেরি রেখেছে। যাতে করে যাত্রীরা স্বস্তিতে নদী পার হতে পারে। তিনি আরও বলেন, যাত্রীদের হয়রানি করার দায়ে আজও তিনজন নেশাখোর ব্যক্তিকে ৬ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।