গোয়ালন্দের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি, উপজেলাবাসীর নিরপত্তা রক্ষা, বাজারের দ্রব্য মূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা, দেলে চলমান বন্যা পরিস্থিতি এবং উপজেলায় বন্যা পূর্ব প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে উপজেলার সরকারি কর্মকর্তা, প্রলাসন ও স্থানীয় প্রশাসন এবং সুধীজনের অংশগ্রহণে আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা অধুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্রের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন গোয়ালন্দ উপজেলা সহকারি কমিশনার(ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. শারমিন সুলতানা তিথি, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. খোকনুজ্জামান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো. রুহুল আমিন, গোয়ালন্দ ঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) উত্তম কুমার ঘোষ, উপজেলা মাধ্যমে শিক্ষা অফিসার মো. মাসুদুর রহমান, উজানচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা, ছোট ভাকলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আমজাদ হোসেন, দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মন্ডল, গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ আবুল হোসেন প্রমুখসহ সরকারি কর্মকর্তা, লিক্ষক, সুধীজন ও প্রিন্ট এবং ইলেট্রনিক্স মিডিয়ায় গণমাধ্যমকর্মীবৃন্দ।
সভায় দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান বলেন, গোয়ালন্দে একটি সরকার অনুমোদিত আফগারি আছে। সেখান থেকে নেশাদ্রব্য মদ তোলার আইনি নিয়মকানুন আছে। যাদের নেশা করার জন্য প্রতিদিন ১/২ লিটার মদ তোলার অনুমতি আছে তবে এমনো সময় দেখা যায় আফগারি থেকে দিনে দুপুরে গ্যালন ও বড় বড় ড্রফ ভর্তি মদ নিয়ে মহাসড়ক হয়ে দৌলতদিয়া যৌনপল্লীতে যায়। এব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কলেজ শিক্ষক মো. নাজির আহমেদ জানান, কলেজ প্রাঙ্গণে সম্প্রতি নেশাখোরদের আনাগোনা বেরেছে। শ্রেণি পাঠদানের সময় কলেজ প্রাঙ্গণে ধুমপানসহ আড্ডা চলে। কলেজের মসজিদের পাশে একটি পরিবারের গেইট থাকায় দিনে ক্লাস চলাকালীন সময় রিক্সা নিয়ে বাড়িতে যাতায়াত করে। এমনকি রাতেও তিনি কলেজ প্রাঙ্গণ ব্যবহার করেন। কলেজের পক্ষ হতে বারবার বিষয়টি ওই পরিবারকে বলার পরেও কোনো কর্ণপাত করেননি পরিবারটি। এক্ষেত্রে প্রশাসনের কাছে বিষয়টি প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন তিনি।
গোয়ালন্দ প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহাম্মদ আবুল হোসেন বলেন, বন্যার আগাম খবর শুনে দৌলতদিয়া বাজারে অনেকেই শুকনা খাবার কিনছেন আর এ সুযোগে অনেক ব্যবসায়ী পণ্যে দাম বেশি নিচ্ছেন। এজন্য বাজার মনিটরিং করার বিষয়ে তিনি প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বন্যা পূর্ববর্তী সময়ে বাজারের দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে জেনো থাকে সে বিষয়ে মনিটরিং করা হবে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার পরিদর্শক উত্তম কুমার ঘোষ বলেন, কলেজের বিষয়ে এর আগেও অনেকবার প্রাথমিকভাবে শাস্তি দিয়ে তাদের সতর্ক করা হয়েছে। নেশাখোর ছেলেরা কখন আসে ও চলে যায় সে বিষয়ে অনেক সময় আমরা অবগত হতে পারি না। এমন কিছু সম্প্রতি ঘটলে আমাদের অবগত করবেন আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, দেশের নতুন সরকার গঠনের পরপরই দেশের কয়েকটি জেলায় ইতিমধ্যে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গোয়ালন্দ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতিমধ্যে পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তুত বন্যা মোকাবেলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এমাসে যে সব সমস্যার কথা সকলে অবগত করেছে তা সমাধানের পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি।