রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪২ অপরাহ্ন

রাজবাড়ী সনাকের উদ্যোগে যুব দিবস পালন

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : সোমবার, ১২ আগস্ট, ২০২৪
  • ৬০ Time View

টিআইবি’র অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) রাজবাড়ী আয়োজিত আন্তর্জাতিক যুব দিবস শের ই বাংলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে ১২ আগস্ট সোমবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে আলোচনা সভায় সনাক সভাপতি প্রফেসর মো. নুরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সনাক সদস্য নুরুল হক আলম, সৌমিত্র শীল চন্দন, জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজাউল করিম, আবুল বাশার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন ইয়েস সদস্য রবিউল আওয়াল এবং সার্বিক সমন্বয় করেন টিআইবি’র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মাসুদ আহমেদ।

সভায় বক্তারা বলেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও পরবর্তী সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এদেশের তরুণ সমাজ সর্বদা অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে। শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন যার অতুলনীয় উদাহরণ। এ দেশের তারুণ্য চরম স্বেচ্ছাচারী ও অগণতান্ত্রিক শক্তিকে কীভাবে পরাভূত ও পরাজিত করতে হয়, তার ‘‘পাঠ্যবই’’ উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। নির্লোভ ও স্বার্থহীনভাবে কীভাবে নিজেকে উৎসর্গ করতে হয়, তার অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে তরুণ শিক্ষার্থীরা। যারা জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, যারা আহত ও বিভিন্নভাবে নির্যাতিত হয়েছেন তাঁদের প্রতি বিন শ্রদ্ধা। যারা এই বিজয়ের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং এখনও আন্দোলনের চেতনা সমুন্নত রাখতে ও বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় ভূমিকার পাশাপাশি নিরলস পরিশ্রম করে রাস্তায় রাস্তায় অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করছে তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। বাংলাদেশের তরুণদের এই দৃষ্টান্ত অনাগত দিনে বৈশ্বিক পর্যায়ের যে কোনো ন্যায়ভিত্তিক আন্দোলনের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। একইসঙ্গে ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে তারুণ্যের এই জয়রথ যেন সংকীর্ণ কোনো চোরাবালিতে আটকে না যায়, সেই লক্ষ্যে তাদের বাকস্বাধীনতা, চিন্তার স্বাধীনতা সর্বোপরি তাদের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি। তরুণদের আশা-আকাক্সক্ষার ভিত্তিতে বৈষম্যহীন, সাম্য ও মেধাভিত্তিক, গণতান্ত্রিক, জবাবদিহিমূলক, সুশাসিত নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণই হোক এ বছর ‘‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’’ পালনের মূলমন্ত্র।

বিশ্ব যখন তরুণদের ওপর নির্ভর করে একটি টেকসই উন্নত বিশ্বে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে, ঠিক সেই মুহূর্তে তারুণ্যের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে এক ইতিহাসের সাক্ষী হয়েছে বাংলাদেশ। একটি শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে প্রথমে উপেক্ষা ও পরবর্তীতে অপ্রয়োজনীয় ও নজিরবিহীন বলপ্রয়োগের মাধ্যমে রাষ্ট্রকাঠামোকে সংকটের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। নির্মম হত্যাকা-, নির্লজ্জ মিথ্যাচার, নিপীড়ন, নির্যাতন হামলা, মামলা, গণগ্রেফতার, মানবতাবিরোধী কর্মকা- থেকে শুরু করে জঘন্য সকল উপায় অবলম্বন করেও তারুণ্যকে বশ করতে পারেনি স্বৈরাচার। চলমান আন্দোলন প্রমাণ করেছে তরুণরা অদম্য, অপ্রতিরোধ্য। তারুণ্যকে উপেক্ষা বা নিপীড়নের মাধ্যমে টিকে থাকা যায় না। তরুণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো দায়বদ্ধতা, জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও সর্বোপরি সুশাসনের প্রকট ঘাটতিতে সৃষ্ট স্বৈরাচারকে চরম মূল্য দিতে হয়। রাজনৈতিক দলসহ সকল পক্ষকে এই আন্দোলন থেকে শিক্ষা নিতে হবেÑতারুণ্যের শক্তিকে দমন নয়, বরং তাদের প্রাপ্য অধিকার, মৌলিক চাহিদা পূরণ এবং তরুণরা তাদের কাক্সিক্ষত স্বপ্ন পূরণে, দাবি আদায়ের আন্দোলনে যাতে নির্ভার থাকতে পারেরাষ্ট্রকে তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। আন্তর্জাতিক যুব দিবস ও টিআইবি – ১৯৯১ সালে অষ্ট্রিয়ার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের বিশ্ব যুব ফোরামে অংশগ্রহণকারী তরুণদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালে পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের ‘‘ওয়ার্ল্ড কনফারেন্স অব মিনিস্টারস রেসপন্সিবল ফর ইয়ুথ’’এ ১২ আগস্ট দিনটিকে আন্তর্জাতিক যুব দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব করা হয়। ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ প্রস্তাবটির প্রতি সমর্থন জানায়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘের উদ্যোগে ১২ আগস্ট ‘‘আন্তর্জাতিক যুব দিবস’’ হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।

টিআইবির উদ্যোগে বাংলাদেশের দুর্নীতিবিরোধী চলমান সামাজিক আন্দোলন বিশেষ করে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টি কার্যক্রমের মূল শক্তি তরুণ ও যুব জনগোষ্ঠী। টিআইবি মনে করে, সুশাসিত, উন্নত ও টেকসই ভবিষ্যত বাংলাদেশ বিনির্মাণে দেশের যুব সমাজই মূল চালিকাশক্তি। টিআইবি কলেজ-বিশ্ব বিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তরুণ-যুবাদের সম্পৃক্ত করে দেশের ৪৫টি সনাক অঞ্চলে ও ঢাকার ১৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্ট (ইয়েস) প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে দুর্নীতিবিরোধী বিভিন্ন সচেতনতা ও প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও টিআইবি আন্তর্জাতিক যুব দিবস বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে উদ্যাপন করছে। জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সনাক, এসিজি ও ইয়েস সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অংশীজনদের অংশগ্রহণে নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে দিবসটি উদ্যাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে টিআইবি।

আন্তর্জাতিক যুব দিবস ২০২৪: তারুণ্যের দাবি, সম্ভাবনাময় যুব জনগোষ্ঠীকে জাতীয় অর্জনের মূল চালিকাশক্তি বিবেচনা করে দিবসটি উপলক্ষ্যে টিআইবি ও এর তরুণ অংশীজনরা নিযুক্ত ১১ দফা সুপারিশ উত্থাপন করে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com