টানা ৬ দিন কর্মবিরতির পর রাজবাড়ীর পাঁচ থানার কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে থানাগুলোতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন শুরু করেন। গত মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন পুলিশ সদস্যরা।
গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। ৬ আগস্ট থেকে কর্মবিরতির ঘোষণা দেয় বাংলাদেশ পুলিশ অধস্তন কর্মচারী সংগঠন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বেশির ভাগ থানার পুলিশসহ বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা কর্মবিরতিতে চলে যান। এতে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়। ঘটে অগ্নিসংযোগ, ডাকাতি, লুটপাট ও ছিনতাইসহ নানা অপরাধ। এ ছাড়া সাধারণ মানুষ থানায় বিভিন্ন ঘটনার অভিযোগ জানাতে এসে ফিরে যান।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পুলিশ ইউনিটের কর্মকর্তা ও ফোর্সকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশের নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মো. ময়নুল ইসলাম।
রাজবাড়ীর পুলিশ সদস্যরা থানায় যোগ না দিয়ে ১১ দফা দাবি জানিয়ে তাদের কর্মবিরতি চালিয়ে যেতে থাকেন। রোববার দুপুরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশকে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকের পর পুলিশে সংস্কারের দাবিতে কর্মবিরতিসহ সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন আন্দোলনকারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও কনস্টেবল শোয়াইব হাসান। সোমবার থেকে তারা সবাই কাজে যোগ দেয়ারও ঘোষণা দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সকালে রাজবাড়ী সদর থানা, গোয়ালন্দঘাট থানা, পাংশা থানা, কালুখালী থানা ও বালিয়াকান্দি থানার কর্মরত পুলিশ সদস্যরা কর্মস্থলে ফেরেন। এতে জনসাধারণের মনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ জানান, সোমবার সকাল থেকে জেলার পাঁচটি থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা যোগ দেন। এ ছাড়া পুলিশের টহলও চলছে। জনগণের জানমাল রক্ষায় পুলিশ সর্বদা নিয়োজিত রয়েছে।
প্রসঙ্গত ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে দেশে অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে অনেক পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার সদস্য নিহত হন। আহত হন কয়েক হাজার সদস্য। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।