রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে উজানচর ইউনিয়নের দফাদার, টিকটকার খ্যাত আইয়ুব আলী (৫০) তিন সন্তানের জননীকে বিয়ে করে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন।
ওই মহিলার হতভাগা তিন সন্তান তাদের মা’কে ফিরে পেতে আকুতি জানিয়েছেন। অসহায় স্বামী স্ত্রীকে ফিরে পেতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
স্থানীয়রা জানান, উজানচর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের হাজী আঃ গফুর মন্ডল পাড়ার বাসিন্দা দরিদ্র মিলন শেখ একজন ইটভাটা শ্রমিক। তাদের দুটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে অনিক শেখ (১৭), মেজো ছেলে সজীব (১৩) সবার ছোট মেয়ে মাহিয়া আক্তার (৮)। আসমা ও মিলন দম্পতি ঢাকার সাভারে থাকে। আসমা সেখানে একটি গার্মেন্টসে এবং মিলন ইটভাটায় কাজ করেন। সম্প্রতি তাদের মধ্যে কিছুটা পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়।
ঝামেলা মীমাংসার জন্য গ্রামের বাড়ি থেকে মিলনের বাবা আফতার শেখ সরল বিশ্বাসে আইয়ুব দফাদারকে সাভারে পাঠান। সেখান থেকেই শুরু হয় আসমার সাথে আইয়ুব দফাদারের প্রেমের সম্পর্ক। এর কিছুদিন পরেই আসমা মিলনকে তালাক দিয়ে আইয়ুব দফাদারকে বিয়ে করেন।
এর জের ধরে চলতি মাসের ৭ তারিখ আসমার সাবেক স্বামী মিলন আসমাকে কুপিয়েছে বলে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মিলন বর্তমানে সেই মামলা ঘাড়ে নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
মামলার ২ নং আসামি মিলনের দরিদ্র পিতা আদালত হতে জামিন লাভ করেন। কিন্তু আসমার তিন সন্তানকে নিয়ে তিনি বেশ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। তিনি মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে এবং তার ছেলের বৌ’কে ফেরত পেতে ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে।
আসমা বেগমের ছোট কন্যা মাহিয়া আক্তার বলে,”আমি আমার মা’কে ফেরত চাই। মা ছাড়া আমার ঘুম আসে না।”
অভিযুক্ত আইয়ুব দফাদার মুঠোফোনে জানান, তিনি ইসলামী শরিয়া মোতাবেক আসমা বেগমকে বিয়ে করেছেন।
৩ সন্তানের জননী আসমা বেগম বলেন, আমার আগের স্বামী মিলন আমাকে ঠিকমতো ভাত-কাপড় দিতে পারতো না। আমি সুখে থাকার জন্য আইয়ুব দফাদারকে বিয়ে করেছি। এজন্য মিলন আমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে আহত করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লিয়াকত হাসান লিপু মন্ডল জানান, আইয়ুব দফাদার আমাদের এলাকার একটি বিষফোঁড়া। বিদেশে লোক পাঠানোর নামে এর আগে সে এলাকার অনেককে নিঃস্ব করেছে। রাজবাড়ী আদালতে সে সম্পর্কিত মানব পাচার আইনে দুইটি মামলা চলমান রয়েছে। আমরাও তার অনেক শালিস-বিচার করেছি। সে নিয়মিত টিকটিক করে বেড়ায়।আরো বিভিন্ন অপরাধের সাথে সে জড়িত। এলাকাবাসী তার উপযুক্ত বিচার চায়।
উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা জানান, শুনেছি আইয়ুব দফাদার তিন সন্তানের জননীকে বিয়ে করেছে। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করব। প্রাথমিকভাবে তার বেতন স্থগিত করা হয়েছে।
গোয়ালন্দ ঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রানবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস জানান, আইয়ুব দফাদারের বিরুদ্ধে মানব পাচার মামলায় আদালতের দুইটি ওয়ারেন্ট রয়েছে। সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে। আমরা তাকে খুঁজছি।