অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে হয়তো পাঠকের কবিতা পড়ার মতো মেধা, মনন, মস্তিষ্ক নাই অথবা যারা কবিতা লিখছেন তারা লিখতে পারছেন না।
এটাও তো সত্য কবিতার নামে বইয়ের মোড়কে অন্য কিছু পাঠকের হাতে আমরা তুলে দিচ্ছি।এটাও তো সত্যি বন্দুকের নলের সামনে কবিতাই উচ্চারিত হয়। দেশপ্রেমিক ফাসিঁর আসামী মধ্যরাতে কবিতাকেই বেছেঁ নেয়। কবিতা পড়লে যুদ্ধে যাওয়া যায়। সম্প্রতিতে কবিতাই স্বর্গ তৈরি করে।
এমন নয়তো? আমরা কবিতাকে অযথাই কঠিন ও গম্ভীর করে ফেলছি। এটিও কবিতা বিমুখতার একটা কারণ বলা যায়। কবিতা মানুষের মন জয় করার শক্তিশালী হাতিয়ার। প্রেমিকার রাগ ভাঙ্গাতে বা মন রাঙ্গাতে কবিতার মতো আর উপাদান আছে? এমনও হতে পারে, কবিতা যারা গ্রহণ করবে তাদের উপযোগী কবিতা হয়তো সংখ্যায় কম।
কবিতা নিরাকার ব্রহ্ম নয়। শিল্পের মহত্তম শাখা হিসেবে পরিগণিত। এমন ভাবে কি বলা যায় কবিতা অসাধারণ নয়। কবিতা সাধারণ। আপনাদের মতো অসাধারণ মানুষের কবিতা বোঝার দরকারই বা কি। থাকুন আপনার ত্রিশ হাজার টাকার বেতনে পঞ্চাশ হাজার টাকার সংসার নিয়ে। সন্তান জন্মানো আর জাগতিক বিষয় নিয়ে।
একটি বই একজন লেখকের চিন্তাধারার ফসল। বইয়ের মধ্যে লিপিবদ্ধ থাকে সভ্যতার ইতিহাস। বই পড়ার অভ্যাস মানুষকে আলোর পথে টেনে নিয়ে যায়। পাঠ অভ্যাস চিন্তা জগতকে প্রসারিত করে। জ্ঞানের মহা সমুদ্রের সন্ধান পেতে হলে বই পড়ার বিকল্প নেই। বই একজন নিঃসঙ্গ ব্যক্তির জীবনে সবচে ভালো সঙ্গী। জীবনের অর্থ খুঁজে পেতে বইয়ের কোন বিকল্প নেই। জীবনে বইয়ের চেয়ে ভালো সঙ্গী আর হয় না। কিন্তু প্রযুক্তির আগমনে বই পড়ার অভ্যাসটা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
কবিতাও যেহেতু শুদ্ধতম শিল্প, সে কারণে এর মর্ম বুঝতে পাঠককে কিছুটা তৈরি তো হতে হবেই। গদ্যে তেমন কোনো রহস্যাভাস উপস্থিত নেই, যা আছে কবিতার লাবণ্যমাখা শরীরে-মননে। একেক পাঠে একেক প্রকার ব্যঞ্জনার স্বাদ পাওয়া যায় কবিতার। যেন এক নান্দনিক চিত্রকর্ম। আধখানা পাই তার, আধেক হারাই। আলো-আঁধারির শিহরণ, মাদকতায় মুগ্ধ হই। কবিতা বেদনার উপশম। গল্প-উপন্যাসের তুলনায় কবিতার পাঠক চিরকালই কম ছিল। হয়তো তা-ই থাকবে।