রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

আলো ছড়াচ্ছে রাজবাড়ীর রাবেয়া-কাদের স্মৃতি পাঠাগার

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
  • Update Time : শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৫৯ Time View

স্রোতের বিপরীতে গিয়ে সম্পতি লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে সাড়া জাগিয়েছেন রাজবাড়ীর নজরুল ইসলাম। বাবা-মায়ের নামে গড়া রাবেয়া-কাদের স্মৃতি পাঠাগারটি এখন আলোর দিশারী হয়ে উঠছে। সেখানে শুধু পাঠচর্চা নয়। শিশু-কিশোরদের সংস্কৃতি চর্চায় নিয়মিত শেখানো হচ্ছে সঙ্গীত, চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি। নজরুল ইসলাম পেশায় একজন মুদ্রণ ব্যবসায়ী।

রাজবাড়ীর নিভৃত পল্লী রামকান্তপুর ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামে নিজ জমিতে পাঠগারটি গড়ে তুলেছেন নজরুল ইসলাম। ২০২২ সালের ২৫ মার্চ শুরু হয় রাবেয়া- কাদের স্মৃতি পাঠাগারের যাত্রা। বর্তমানে পাঠাগারটি সপ্তাহের ছয়দিন দুপুর ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা থাকে। মাত্র দুই বছরে পাঠাগারে সাড়ে চার হাজার বই সংগৃহীত হয়েছে। শিশু সাহিত্য, রাজনীতি, বিভিন্ন লেখকের উপন্যাস, ভারতের প্রখ্যাত লেখকদের উপন্যাস, গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, নিবন্ধ, জীবনী থেকে সব ধরনেই বই শোভা পাচ্ছে পাঠাগারের শেলফে। রাখা হচ্ছে দুটি দৈনিক পত্রিকাও। পাঠাগারের উদ্যোগে সপ্তাহে দুই দিন শিশু-কিশোরদের শেখানো হয় সঙ্গীত, চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি। প্রশিক্ষিত এসব শিশুদের অনেকেই জেলা পর্যায়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে পুরষ্কারও পেয়েছে। ধীরে ধীরে আলো ছড়াচ্ছে পাঠাগারটি। এছাড়া পাঠাগারটির উদ্যোগে নানা সময়ে বিভিন্ন দিবসে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতাও। মানবিক কার্যক্রম হিসেবে দুস্থদের শীতবস্ত্র, ঈদে নতুন পোশাক ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। এভাবেই এগিয়ে চলেছে পাঠাগারটি।

পাঠাগারের তত্ত্বাবধায়ক রেজাউল করিম আরজু বলেন, মানুষের শরীরের জন্য যেমন খাদ্যের দরকার, তেমনি মনের খাদ্যও তার প্রয়োাজন। এই প্রয়োজন মেটাতে পারে পাঠাগার। পাঠাগার মানুষের ক্লান্ত, বুভুক্ষু মনকে আনন্দ দেয়। তার জ্ঞান প্রসারে রুচিবোধ জাগ্রত করে। মূলত এ চিন্তা চেতনা থেকেই রাবেয়া-কাদের স্মৃতি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। পাঠাগারটি বিকাশে তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। এলাকার শিশুদের সাংস্কৃতিক চর্চায় উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাঠাগারটিতে বইও আছে যথেষ্ট পরিমাণ। কিন্তু পাঠকের সংখ্যাটা একটু কম। পাঠকের সংখ্যা বেশি হলে মানসিকভাবে তাদের কাছে ভালো লাগতো। মানুষকে বই পড়ায় আগ্রহী করে তুলতে তারা উদ্যোগ নেবেন বলে জানান তিনি।

পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম জানান, তাদের পাঠাগারে এপর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার বই সংগ্রহ হয়েছে। এর অর্ধেক বই তার কয়েকন বন্ধু, লেখক, প্রকাশক, উপহার হিসেবে দিয়েছেন। বাকিটা তিনি ক্রয় কেেরছেন। তিনি বলেন, মানুষের অনন্ত জিজ্ঞাসা, অসীম কৌতুহল। তার এই অনন্ত জিজ্ঞাসা, অন্তহীন জ্ঞান ধরে রাখে বই। আর বই সংগৃহীত থাকে পাঠাগারে। পাঠাগার সাহিত্য, ইতিহাস, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান ইত্যাদির এক বিশাল সংগ্রহশালা। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে সমাজের প্রতি যেমন দায় আছে তেমন দায়িত্বও আছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই রাবেয়া-কাদের স্মৃতি পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেছেন। নতুন প্রজন্ম যেন বইমুখি হয়, উদার, নৈতিকতা সম্পন্ন মানবিক মানুষ হতে পারে। সমাজকে আলোকিত করতে পারে সেই আশা থেকেই পাঠাগারের প্রতিষ্ঠা। যে প্রত্যাশা নিয়ে পাঠাগারের যাত্রা শুরু করেছিলেন তার চেয়ে অনেক ভালো চলছে। পাঠকের সংখ্যা এখন হয়তো একটু কম। তবে ধীরে ধীরে অবশ্যই বাড়বে বলে আশাবাদী তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 daily Amader Rajbari
Theme Dwonload From ThemesBazar.Com