রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের আহ্লাদিপুর গ্রামে দুর্বৃত্তদের দেওয়া বিষাক্ত স্প্রেতে মারা গেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা রতন কুমার দাস। রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা কনিকা রানী দাস চিকিৎসাধীন রয়েছেন একই হাসপাতালে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। পেশায় ব্যবসায়ী মৃত রতন কুমার দাস শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, একদল দুর্বৃত্ত তাদের অজ্ঞান করে বাড়ি থেকে স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিয়েছে। তবে কী পরিমাণ মূল্যবান সামগ্রী লুট হয়েছে তা জানা যায়নি।
শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য মিরা বেগম জানান, রতন কুমার দাস-কনিকা দাস দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে মেয়ে ঢাকায় পড়াশোনা করছে। বাড়িতে তারা স্বামী-স্ত্রী থাকতেন। কনিকা দাস বাড়িতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইভেট পড়াতেন। শনিবার সকালে কনিকা দাসের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রাইভেট পড়তে তার বাড়িতে গিয়ে ম্যাডাম ম্যাডাম বলে ডাকাডাকি করে। দীর্ঘক্ষণেও দরজা না খোলায় তারা বারান্দায় থাকা মাদুর বিছিয়ে বসে পড়ে। ওই সময় একজন নারী তার ছেলেকে নিয়ে আসে পড়াতে। তিনিও কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করেন। দরজা না খোলায় পেছন দিকে গিয়ে দেখেন পেছনের দরজা খোলা। ভেতরে গিয়ে দেখেন রতন দাস ও কনিকা দাস অচেতন অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন। তারা শুধু গোঙরাচ্ছিলেন। ওই নারী প্রতিবেশিদের ডেকে আনেন। কনিকা দাসের চোখে মুখে পানির ছিটা দেওয়ার পর হুঁশ ফেরে। তবে তিনি কথা বলতে পারছিলেন না। রতন দাসের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। কনিকা দাসের কাছে জানতে চাওয়া হয় কী হয়েছিল। তিনি কথা বলতে পারেননি। ইশারায় হাত, নাক, কান, গলা দেখাচ্ছিলেন। এটা বোঝাচ্ছিলেন তাদের অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এরপর দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাত ১০টার দিকে ঢাকায় পাঠানো হয়। সকালে রতন দাস চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। কনিকা দাস ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ভুইয়া জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। বর্তমানে ঢাকায় আছেন। এজন্য বিস্তারিত বলতে পারছেন না।
রাজবাড়ীর সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) মো. ইফতেখারুজ্জামান জানান, ঠিক কী ঘটেছিল তা এ মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। ভুক্তভোগী দুজনের একজন মারা গেছেন। অন্যজনের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। তার জ্ঞান ফিরলে তার কাছে বিস্তারিত শুনে সব বোঝা যাবে। তবে, পুলিশের তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত আছে।