রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিভিল সার্জন প্রয়াত ডা. এ এফ এম শফিউদ্দিন পাতা’র স্বাক্ষর জালিয়াতি করে খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর একটি ডিভোর্স প্রত্যাহারের আবেদনের কপি দেখিয়ে পাংশা পৌরসভার মেয়র বরাবর একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন এফ এম শফিউদ্দিন পাতা’র সাবেক (তালাক প্রাপ্ত) স্ত্রী মিনজুয়ারা বেগম বেলী।
পাংশা পৌরসভার মেয়র মো. ওয়াজেদ আলী ডা. এ এফ এম শফিউদ্দিন পাতা জীবিত থাকাকালীন একটি ওয়ারিশ সনদপত্র প্রদান করেছিলেন। পরবর্তীতে ডা. পাতা’র ইন্তেকালের পর মিনজুয়ারা বেগম বেলীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আর একটি ওয়ারিশ নামা প্রদান করায় ডা. এ এফ এম শফিউদ্দিন পাতা’র স্ত্রী দিনা খোন্দকার একটি উকিল নোটিশ পাঠায় সেই সাথে মিনজুয়ারা বেগম বেলীর সাথে ডাক্তার পাতা’র বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার প্রমান পত্র দাখিল করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে পাংশা পৌরসভার মেয়র পূনরায় ১০ জুলাই ২০২৩ ইং তারিখে পাংশা পৌরসভার স্বারক নং- পা পৌ/২৩/সাধা/২১২ ১৮/৮/২০২১ দেওয়া যার স্বারক নং ২১২১-২০২২/১৫ ওয়ারিশ সনদ পত্রটি বাতিল করেন এবং সেখানে তিনি উল্লেখ করেন মিনজুয়ারা বেগম বেলীর সাথে ডাক্তার পাতা’র বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার প্রমান পত্র আমার কার্যালয়ে না থাকায় আগে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে বিবাহ বিচ্ছেদের কাগজপত্র জমা হওয়ায় ওই ওয়ারিশ পত্র বাতিল করা হয়। সেই সাথে ডা. এ এফ এম শফিউদ্দিন পাতা জীবিত থাকতে যে ওয়ারিশ নিয়েছিল সেটাই বহাল রয়েছে।
এ দিকে স্ত্রী দাবী করা মিনজুয়ারা বেগম বেলী যে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন তাতে উল্লেখ করেছেন পাতা সাহেব নাকি তাকে নিয়মিত খোরপোষ দিয়ে আসছিল। তা হলে কখন খোরপোষ দেয় তালাক হলে নাকি এ নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
প্রয়াত ডা. এ এফ এম শফিউদ্দিন পাতা’র স্ত্রী দিনা খন্দকার বলেন, গত ২৬ জুলাই বেলী যে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছে সেখানে খোকসা উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর একটি আবেদন দিয়েছে সেখানে পাতা সাহেবের স্বাক্ষর এডিট করে বসানো হয়েছে। যা সম্পূর্ণ জালিয়াতি। পাতা সাহেব পরপর ৩ টি তালাকের নোটিশ দিয়েছেন নিকাহ রেজিষ্টার মুহাম্মদ আশিক উল্লাহর মাধ্যমে। প্রথম নোটিশ দেওয়া হয় ২০০০ সালের ১৩ মার্চ, ২য় নোটিশ দেওয়া হয় ১৩ এপ্রিল ২০০০ ইং, এবং সর্বশেষ ৩য় নোটিশ দেওয়ার তারিখ ১৩ মে ২০০০ ইং তারিখ। ডাক্তার পাতা জীবিত থাকতে ওয়ারিস তুলেছিলো কলিমহর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তৎকালীন আব্দুল জলিল চেয়ারম্যানের নিকট থেকে।
ডাক্তার পাতা’র মৃত্যুর পরে সনদ দিয়েছিলেন পাংশা পৌর মেয়র। সেখানে পরিস্কার ভাবে উল্লেখ রয়েছে দীনা খন্দকার প্রয়াত ডা. পাতার স্ত্রী। পাতা ডাক্তারের মৃত্যুর পরে মিনজুয়ারা বেলী এসে বউ হিসেবে ওয়ারিস তুলেন পৌর মেয়র এর কার্যালয় থেকে। পরে মেয়র যখন ডিভোর্সের তিনটি নোটিশ পেয়েছেন তখনই ওয়ারিস বাতিল করেছে।দিনা খন্দকার বলেন, আমার পক্ষে বা সত্যি কথা যেই বলে তাকে জড়িয়েই নানা অপবাদ ছড়িয়ে বেড়ায় বেলী ও তার লোকজন, যা মানহানিকর।
এ ব্যাপারে পাংশা পৌর মেয়র ওয়াজেদ আলী’র সাথে কথা হলে তিনি বলেন আমার পৌরসভা কার্যালয় থেকে ডা. এ এফ এম শফিউদ্দিন পাতা’র মৃত্যু সনদ নিয়েছিলেন সেখা দিনা খন্দকার তার স্ত্রী হিসাবে রয়েছে। পাতা সাহেবের মৃত্যুর কিছুদিন পর পাতা সাহেবের অপর স্ত্রী দাবী করে মিনজুয়ারা বেলী একটি ওয়ারিশ সনদপত্র নিয়েছিল পরবর্তীতে বেলীকে তালাক দেওয়ার ৩টি নোটিশ আমার কার্যালয়ে জমা হওয়ারপর বিষয়টি পর্যালচনা করে পূর্বের দেওয়া ওয়ারিশ বাতিল করা হয়েছে। এখন পূনরায় মিনজুয়ারা বেলী লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন।