রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মৌরাট ইউনিয়নের মালঞ্চি গ্রামের প্রবাসী কাজী হাসিব পারিবারিক ভাবে বিয়ে করেছিল পার্শ্ববর্তী বালিয়াকান্দি উপজেলায়। বিয়ের ২ মাসের মধ্যে তার স্ত্রী গর্ভে ৬ মাসের সন্তানের সন্ধান মিলেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৮ মার্চ পারিবারিক ভাবে ওই মেয়ের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর আনুষ্ঠানিক ভাবে তারা বসবাস শুরু করে। তাদের বিয়ে কোন কাজী অফিসে রেজ্রিঃ হয়নি ৩ শত টাকার ষ্ট্যাম্পে নোটারী পাবলিকের কার্যালয় থেকে বিবাহ সংক্রান্ত একটি হলফ নামা রয়েছে তাদের। যার আইনি কোন ভিত্তি নেই বলে স্থানীয়রা মনে করেন। বিয়ের ২ মাসের মাথায় কাজী হাসিব জীবিকার তাগিদে পূনরায় প্রবাসে ফিরে যায়।
কিছুদিন পর ওই নারীর শারিরীক পরিবর্তন দেখা দেয় এবং সে কিছুটা অসুস্থ হলে গত ২৮ মে ২০২৩ তারিখে তাকে পাংশা লিজা হেলথ কেয়ারে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা নিরিক্ষা করলে তার গর্ভবতির ব্যাপারটা প্রকাশ্যে আসে। রিপোর্টে দেখা যায়, ওই নারীর গর্ভে ২৩ সপ্তাহের বাচ্চা রয়েছে।
ওই নারীর পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা তাদের মেয়েকে নিয়ে যায় এবং বালিয়াকান্দিতে মেয়ের ফুফু ও ফুফার হস্তক্ষেপে একটি ক্লিনিকে নিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। এ ঘটনায় উভয় পরিবারের মধ্যে অশান্তি বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে হাসিবের পরিবারের সাথে কথা হলে তারা বলেন. আমাদের সাথে কেন এমন প্রতারনা করল সে। বিষয়টি নিয়ে একাধিক বার রইচ মিয়ার সাথে কথা বললেও তিনি তা সমাধান করেননি। আমরা সমাজে মুখ দেখাতে পারছিনা। আমাদের ছেলে বিয়ে করেছে ২ মাস আর পেটে ৬ মাসের বাচ্চা এ নিয়ে লোকলজ্জার মধ্যে পড়েছি আমরা। এর একটি সঠিক সুরাহা হওয়া দরকার বলে মনে করেন হাসিব এর পরিবার।
ওই নারীর পিতার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ের গর্ভে সন্তান গর্ভপাত করা হয়েছে। ওই সংসারে আর আমার মেয়ের যাওয়ার কোন পথ নেই। আমি ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। এ ব্যাপারে রইচ উদ্দিন মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি, তার পরিচালিত ইট ভাটায় গিয়েও তাকে না পাওয়ায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেছেন ওই নারীর পিতা। বালিয়াকান্দি থানার মামলা নং-০ ৯ তারিখ-০৮/০৬/২০২৩। ধর্ষন মামলার আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন থানা পুলিশ। মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, ওই তরুনী অসুস্থ্য থাকায় পূর্ব পরিচিত কবিরাজ মমিন মন্ডলকে দিয়ে চিকিৎসা করান। চিকিৎসা করার সুযোগে চিকিৎসার নামে ঔষধ জাতীয় খাবার খাওয়াতো এবং তাৎক্ষনিক ভাবে সে অচেতন হয়ে পড়লে সুযোগ বুঝে ধর্ষন করতো। বাড়ীর সবার চোঁখের আড়ালে দীর্ঘদিন যাবৎ এমন কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলো কবিরাজ মমিন মন্ডল। গত ২ মাস পূর্বে তরুনীকে পাংশায় পারিবারিক ভাবে বিয়ে দেন। বিয়ের পর মাঝে মধ্যেই কবিরাজ মমিন মন্ডল তরুনীকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পুনরায় তার সাথে শারিরিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য ভয়ভীতি দেখিয়ে আসছে। বিষয়টি পরিবারের লোকদের জানালে এ ঘটনায় গত ৮ জুন তরুনীর পিতা বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বালিয়াকান্দি থানার এস আই মো. নাসির উদ্দিন বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।