রাজবাড়ীতে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ। তাও আবার সুস্বাদু- এটা ভাবাই কঠিন ছিল। এই কঠিনকে সহজ করেছেন সরোয়ার বিশ্বাস। তার নিজ জমিতে কমলার চাষ করে সাফল্যের পথে এগিয়ে গেছেন এক ধাপ। তার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন জাতের কমলা। কমলা বাগান দেখতে প্রতিদিন ভিড় জমাচ্ছে দর্শণার্থীরা। নিচ্ছেন কমলার স্বাদ। এতেই মহাখুশী উদ্যোক্তা সারোয়ার বিশ্বাস। তিনি রাজবাড়ী সদর উপজেলার রামকান্তপুর ইউনিয়নের চরবাগমারা গ্রামের বাসিন্দা।
জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ইউটিউব দেখে কমলা চাষে আগ্রহ জন্মায় রাজবাড়ীর ছরোয়ার হোসেন বিশ্বাসের। এরপর তিনি বিষমুক্ত ফল বাজারজাত করতে কমলা চাষ করেন। তার বাগানে এখন দার্জিলিংসহ চার জাতের কমলা চাষ হচ্ছে।
ছরোয়ার হোসেন বিশ্বাস বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে চুয়াডাঙ্গার জীবননগর থেকে ১৬০টি কমলার চারা সংগ্রহ করে বাড়ির পাশে বাঁশ ঝাড় পরিষ্কার করে এক একর জমিতে কয়েক জাতের কমলা চাষ শুরু করেন। তিন বছর পর ফলন পাওয়ার কথা থাকলেও দুই বছরেই প্রতিটি গাছে প্রচুর ফলন দেখা দেয়। কমলার আকার, রং, রস দেখে খুশী তিনি। প্রতিদিন তার বাগান দেখতে দূর থেকে আসছেন অনেকেই। কমলা সুস্বাদু হওয়ায় গাছ থেকেই ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। বর্তমানে বাগানে দার্জিলিং, চায়না ও নাগপুরি জাতের কমলা আছে। পাশাপাশি তার ভাইদের সঙ্গে যৌথভাবে আছে মাল্টা, ড্রাগন ও পেয়ারা বাগান। তাদের দেখাদেখি অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন ফল বাগানের প্রতি।
তিনি জানান, গাছগুলোয় প্রায় ১০ বছর ফল ধরবে। বাগানটি করতে প্রায় পৌনে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যা এবার কমলা ও চারা বিক্রিতে উঠে যাবে। ২শ টাকা কেজি দরে গাছে থাকতেই কমলা বিক্রি হচ্ছে। সুস্বাদু হওয়ায় এ কমলার অনেক চাহিদা। বর্তমানে অর্ধেক কমলা বিক্রি হয়ে গেছে। কমলার পাশাপাশি মোট ১০ বিঘা জমিতে মাল্টা, ড্রাগন ও পেয়ারার চাষ করা হয়েছে। বাগানে বিষমুক্ত ফল উৎপাদন হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘এ অঞ্চলে এ রকম কমলার বাগান এর আগে কখনও দেখিনি। প্রতিটি গাছই কমলায় পরিপূর্ণ। কমলা ছিড়ে খেয়ে দেখেছি অনেক মিষ্টি। যার কারণে একটি-দুটি গাছের কমলা কিনে নিয়েছি। নিজেরাও বাগানের কথা ভাবছি।’
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এসএম সহীদ নূর আকবর বলেন, ‘রাজবাড়ীতে বর্তমানে কমলা ও মাল্টাসহ মিশ্র ফল বাগানে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। এসব উদ্যমী চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে উপজেলা কৃষি অফিস। এ অঞ্চলে কমলা ও মাল্টা চাষ অনেক কঠিন। তারপরও বেশ কয়েকটি ভালো বাগান হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে।’