রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে খাদিজা নাজনীন পুনম নামে এক ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে জোর পূর্বক অন্যের জমি দখল, কর্তব্যে অবহেলা ও নিয়মিত বিএনপির সভা-সমাবেশে যোগদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাজবাড়ী সিভিল সার্জন ও উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও এসিল্যান্ডের কাছে নামে-বেনামে পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, খাদিজা নাজনীন পুনম গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের তেনাপঁচা কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) পদে দীর্ঘদিন ধরে কর্মরত আছেন।
তিনি ক্লিনিকের পাশে শরীফা বেগম নামে এক মহিলার ২৪.৩৭ শতাংশ দালিলিক সম্পত্তি জোর করে অপদখল, জমিতে থাকা বেশকিছু মূল্যবান গাছ কর্তন ও বিক্রি এবং জমিতে বেড়া দিয়ে শরীফা বেগমের পরিবারের চলাচলের পথটাও বন্ধ করে দিয়েছেন।
এছাড়া তিনি গত ১০ ও ১২ নভেম্বর অফিস ফাঁকি দিয়ে রাজবাড়ী ও ফরিদপুরে বিএনপির দুটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে যোগ দেন। এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিও অভিযোগ পত্রের সাথে সংযুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত খাদিজা নাজনীন পুনম মুঠোফোনে জানান, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। অভিযোগগুলো মিথ্যা। তিনি জোর করে জমি দখল করে রাখেননি। ওটা তার এক দাদীর জমি। শরীফা বেগম গোপনে জমিটা কিনে নিয়েছেন। সেখানে আমার ঘর রয়েছে। উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেলে তিনি উঠে যাবেন। চাকরিতে তিনি কখনো ফাঁকি দেননি। বিএনপির সভা-সমাবেশেও যোগ দেননি। অফিস সময়ের পর তার ঘনিষ্ঠ এক আপুর (বিএনপি নেত্রী) সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন। ছবি ও ভিডিওগুলো এডিট করা। তাছাড়া তিনি সরকারি চাকরি করেননা। প্রকল্পের চাকরি করেন। এই চাকরিতে থেকে অফিস সময়ের আগে-পরে রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যোগদান করলেও তাতে আইনগত কোন সমস্যা নেই।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাকির হোসেন বলেন, প্রাপ্ত অভিযোগ তদন্ত করে দেখা গেছে- খাদিজা নাজনীন পুনম অবৈধভাবে শরীফা বেগমের জমিতে অবস্থান করছেন। যা ফৌজদারি দন্ডবিধির অপরাধ। ওই জমিতে তার কোন স্বত্ত্বা নেই। শরীফা বেগম চাইলে আদালতে মামলা করতে পারেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সৈয়দ আমিরুল হক শামীম বলেন, দায়িত্বে অবহেলা ও রাজনৈতিক সভা-সমাবেশে যোগদানের ব্যাপারে সিএইচসিপি খাদিজা নাজনীন পুনমের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত চলছে। সত্য প্রমাণিত হলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকারি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সরকারী বা বিরোধী কোন দলের কোনরূপ রাজনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ার আইনগত কোন সুযোগ নেই। এটা চাকরি বিধির সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন।