রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে পদ্মা নদী বেষ্ঠিত দূর্গম কুশাহাটা চরের শিশুদের জন্য শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বেসরকারি সংগঠন ‘পায়াক্ট বাংলাদেশ’ ও অনলাইন ভিত্তিক সামাজিক সংগঠন ‘গোয়ালন্দ ফাউন্ডেশন’র পক্ষ হতে সরেজমিন গিয়ে এ উপকরণগুলো প্রদান করা হয়। উপকরণগুলোর মধ্যে রয়েছে ৫ টি কাঠের তৈরি বেঞ্চ,২’শ পিস কলম, ৬০ পিস কাঠ পেন্সিল, ১ রিম সাদা কাগজ ও দুই বয়ম চকোলেট।
উপকরণগুলো গ্রহন করেন চরের শিশুদের জন্য পায়াক্ট বাংলাদেশ পরিচালিত স্কুলের শিক্ষক মোঃ ওয়াজউদ্দিন সরদার।
এ সময় উপস্হিত ছিলেন গোয়ালন্দ রাবেয়া ইদ্রিস মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শেখ, দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ সহিদুল ইসলাম, গোয়ালন্দ ফাউন্ডেশনের এডমিন মোঃ আশরাফুল আলম, পায়াক্ট বাংলাদেশ এর দৌলতদিয়া শাখার ম্যানেজার মজিবর রহমান জুয়েল, সুপার ভাইজার শেখ রাজীব হোসেন, দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক ও যুগান্তরের গোয়ালন্দ প্রতিনিধি শামীম শেখ, সাংবাদিক আসজাদ হোসেন আজু শিকদার, সুমন বিশ্বাস, প্রমুখ।
পায়াক্ট বাংলাদেশ এর ম্যানেজার মজিবর রহমান জুয়েল বলেন, চারদিক উত্তাল পদ্মা-যমুনা নদী বেষ্ঠিত দূর্গম কুশাহাটা চরের শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে তারা ২০১৭ সাল থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ‘কুশাহাটা পায়াক্ট বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নাম দিয়ে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। স্থানীয় এসএসসি পাস যুবক মো. ওয়াজউদ্দিন সরদারকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। তবে এ বিষয়ে তাদের কোন প্রকল্প বা ডোনার নেই। অভিভাবকদের সহযোগিতা ও পায়াক্টের কর্মকর্তা -কর্মচারীদের ব্যাক্তিগত অনুদানে শিক্ষককে যৎসামান্য বেতন দেয়া হয়। এছাড়া সরকারিভাবে বই সংগ্রহ করে বিতরন ও বছরের প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরন তারা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১২২ জন। তবে ওদের জন্য অদ্যাবধি গড়ে ওঠেনি কোন স্কুল ঘর। মূলত শিক্ষক ওয়াজউদ্দিনের বাড়ির আঙ্গিনায় গাছতলাতেই চলে শিক্ষা কার্যক্রম।
শিক্ষক ওয়াজউদ্দিন বলেন, রোদ-ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছাত্রছাত্রী সংগ্রহ করে এনে আমি ও আমার স্ত্রী এখানে তাদেরকে পাঠদান করি। বিনিময়ে যে যা পারেন দেন, তাই গ্রহন করি। তাতে তার সংসারও চলেনা। খুব কষ্ট হয়। এখানে জরুরিভাবে একটি স্কুল ঘর নির্মাণ করা, আরো কিছু বেঞ্চ, ব্লাক বোর্ডসহ উপকরণ প্রদান ও শিক্ষকের সম্মানি বাড়ানো অতীব প্রয়োজন।
গোয়ালন্দ রাবেয়া ইদ্রিস মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের শেখ বলেন, পায়াক্টের মাধ্যমে শিক্ষক ওয়াজউদ্দিন ও তার স্ত্রী চরের শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যা খুবই প্রশংসনীয়। সেখানে সরকারিভাবে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করা অতীব জরুরি।