আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় উৎসবমূখর পরিবেশে রাজবাড়ী ও ফরিদপুর এলাকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবথেকে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হচ্ছে। অন্যান্য আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর পাশাপাশি পূজার শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তায় নিশ্চিতে এই এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব)।
আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপনে র্যাব-১০, সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্য ফরিদপুর জেলার ৭৫৭ টি এবং রাজবাড়ী জেলার ৪৪৪ টি পূজামন্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা টিম মোতায়েন করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুরে দুর্গাপূজার নিরাপত্তা পরিদর্শনে যান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক এ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। এদিন ফরিদপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ডে বাস মালিক সমিতির পূজা মন্ডপ পরিদর্শনকালে সবাইকে পূজার শুভেচ্ছা জানান তিনি। বলেন, ধর্মীয় সম্প্রীতি, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং নিরাপদ উৎসব নিশ্চিত করতে র্যাব-১০ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যাতে সকলে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে এবং আনন্দঘন পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারে।
এ্যাডিশনাল ডিআইজি বলেন, র্যাব-১০ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ইতোমধ্যে পূজাকে ঘিরে একটি বিস্তৃত নিরাপত্তা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। ফরিদপুর জেলার ৭৫৭ টি এবং রাজবাড়ী জেলার ৪৪৪ টি পূজামন্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা টিম মোতায়েন করা হয়েছে। সার্বক্ষনিকভাবে র্যাবের ৪ টি রোবাস্ট পেট্রোল, ৬ টি মোটরসাইকেল টহল ও সাদা পোশাকে র্যাবের টিম নিয়োজিত আছে। এছাড়াও র্যাবের প্রশিক্ষিত কমান্ডো, বোম ডিসপোজাল ইউনিট ও ড্রোন টিম এলাকাভিত্তিক সার্বক্ষণিক নজরদারি করছে। টহল ও চেকপোস্ট কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে, বিশেষ করে পূজামন্ডপের আশেপাশে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের চলাচলের ওপর কঠোর নজরদারি রাখা হচ্ছে। র্যাবের গোয়েন্দা শাখা স্থানীয় পূজা কমিটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সমন্বয় রেখে কাজ করছে এবং সম্ভাব্য হুমকি চিহ্নিত করে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো, সাম্প্রদায়িক উসকানি প্রদান বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করতে পারে এমন যেকোনো কর্মকান্ড প্রতিরোধে র্যাব-১০ এর সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করছে।
এবারের দুর্গাপূজায় র্যাব-১০ কেবল নিরাপত্তা নয়, বরং মানবিক সহায়তা ও জনসেবামূলক কর্মকান্ড পরিচালনার ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। পূজামন্ডপে আগত নারী, শিশু, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীদের সহায়তায় র্যাব -১০ এর পক্ষ থেকে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ডপ এলাকায় জরুরি চিকিৎসা সেবা, বিশুদ্ধ পানি, এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। র্যাবের সদস্যরা নিয়মিতভাবে মন্ডপ পরিদর্শন করছেন, দর্শনার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং যেকোনো প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক সহায়তা প্রদান করছেন। এছাড়াও, যানজট ও জনসমাগমকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা রোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে র্যাব -১০ সমন্বয় করে কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। পূজার সময়ে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেজন্য র্যাব-১০ এর ভ্রাম্যমাণ আদালত ও মোবাইল টিমও প্রস্তুত রয়েছে।