রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মৈশালা পালপাড়া গ্রামে দীপা রানী পাল (২২) নামের এক গৃহবধূ ঘরের সিলিংয়ের হুকের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, পরকীয়ার কারণে সে এই পথ বেছে নেয়। নিহত দীপা রানী পাংশা পৌর এলাকার মৈশালা (পালপাড়া) গ্রামের সিঙ্গাপুরপ্রবাসী মিঠুন পালের স্ত্রী। ছয় বছর আগে তাদের বিয়ে হয় এবং তাদের ঘরে পাঁচ বছর বয়সী যমজ দুইটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এ আত্মহত্যাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা রহস্য আর প্রশ্নের।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে দীপা কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। সারারাত খোঁজাখুঁজির পর বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দে তিন যুবক। সকাল সাতটার দিকে সবার অলক্ষ্যে সে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।

নিহতের শাশুড়ি সাধনা রানী বলেন, বুধবার রাতে তার বৌমা কাউকে কিছু না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। ভোর সাড়ে ৫টার দিকে তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয় তিন যুবক। ফেরার সময় তার কানের দুল, হাতের শাঁখা ও সিঁথিতে সিঁদুর ছিলো না। ফেরার পর তাদের সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে কথাবার্তাও বলে। সকাল ৭টার দিকে সে ঘরে ঘুমাতে যায়। তারপরই কোন একসময় এ ঘটনা ঘটায়।

স্বামী মিঠুন পাল অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী দীপার সঙ্গে ‘সাগর খান’ নামের একটি ফেসবুক আইডির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তির ডাকে সাড়া দিয়েই দীপা রাতে বাড়ি থেকে বের হয়। সকালে ফিরে এসে মোবাইলে একজনের সঙ্গে কথাও বলে। রাতে ওর সাথে হয়তো খারাপ কিছু হয়েছে। আর সে কারণেই আত্মহত্যা করেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছি।

প্রতিবেশিরা জানান, তাদের পরিবারে কোন ঝামেলা ছিলো না। অন্য পুরুষের সাথে মোবাইলে কথা বলা ও পরকীয়া সম্পর্কের কারণেই এমনটি করেছে বলে মনে হচ্ছে।

এদিকে দীপা পাল রাতে কার ডাকে সাড়া দিয়ে গেলেন? সারা রাত কোথায় ছিলেন? কারা কেন তাকে বাড়ি পৌছে দিয়ে গেল? তারা কারা? ভোর বেলায় কোথায় কী অবস্থায় পেয়েছিলেন দীপা পালকে? এসব নানা প্রশ্ন আর রহস্য জন্ম দিয়েছে। এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেলেই ভেদ হবে রহস্যের।

পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। এ বিষয়ে একটি ইউডি মামলা হয়েছে।