রাজবাড়ী জেলা পুলিশের নিরলস পরিশ্রমে আরও একটি হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে।বালিয়াকান্দি উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের সালমা হত্যার ঘটনায় অভিযুুক্ত আরিফকে ঢাকার সাভার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার শামিমা পারভীন প্রেস ব্রিফিং করে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, হত্যার ঘটনায় নিহতর বাবা বাদী হয়ে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা করেন। গত ২০০৭ সালে জনৈক আকামুদ্দিন সরদার (৪০) এর সাথে সালমার বিয়ে হয়। ওই সংসারে এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান আছে। গত ২০২১ সালে পারিবারিক কলহের জের ধরে বাদির মেয়ের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকেই সালমা তার বাবার বাড়ি পাশে ছেলে সন্তানসহ আলাদাভাবে বসবাস করে। গত ১ নভেম্বর তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ৬ টার সময় সালমা ঘাস ও কলাপাতা নেওয়ার জন্য বাদির বাড়ীতে আসে এবং কিছুক্ষন ঐ বাড়ীতে থাকার পর মাগরিব এর নামাজের সময় পুনরায় বাড়ীর উদ্দেশ্যে চলিয়া যায়। পরবর্তীতে সালমার ছেলে সালমা আক্তারকে খোঁজার জন্য নানা বাড়ীতে আসে। তখন বাদি তার নাতিসহ মেয়ে সালমাকে খুৃঁজতে থাকেন। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে রাত অনুমান সাড়ে ১০টার সময় সালমার বসতবাড়ীতে যাওয়ার রাস্তায় তার পড়নের সেন্ডেল পড়ে থাকতে দেখে বাদির নাতি বলে যে, “এইতো আমার মায়ের সেন্ডেল”। তখন বাদি তার নাতিকে নিয়ে হলুদ ক্ষেতসহ লেবু বাগানে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে দেখেন, তার মেয়ের মৃতদেহ গোবিন্দপুর গ্রামস্থ মেয়ের বসতবাড়ীর উত্তর-পশ্চিম কোনে জনৈক সায়েন্স উদ্দিন শেখ এর লেবু বাগানে একটি লেবু গাছের ডালার সহিত গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ফাঁস লেগে পড়ে আছে। বাদি তখন চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে এগিয়ে এসে পুলিশকে সংবাদ দেয়। থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সালমার লাশ উদ্ধার করে।
মামলার ঘটনা সম্পর্কে অবগত হয়ে রাজবাড়ী পুলিশ সুপার শামিমা পারভিন এর সার্বিক দিক-নির্দেশনায় বালিয়াকান্দি থানাসহ জেলা গোয়েন্দা শাখা নিবিড় তদন্ত শুরু করে। এক পর্যায়ে মামলার ঘটনার সাথে জড়িত আরিফ সেখ পিতা আলাউদ্দিন সেখ সাং গোবিন্দপুর থানা বালিয়াকান্দি জেলা রাজবাড়ীকে শুক্রবার ঢাকা জেলার সাভার থানার গেন্ডা এলাকা হতে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক আরিফ সালমা হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ডিসিস্ট সালমার আচার-আচরণ ছিল উগ্র। তার বাড়ির সীমানায় থাকা রাস্তায় কেউ চলাচল করলে তাকে বকাবকি করত, টিউবওয়েল এর পানি নিতে আসলেও খারাপ ব্যবহার করত। আসামির পরিবারে সবসময়ই অশান্তি লেগে থাকত। এজন্য সে হতাশাগ্রস্ত ছিল। ঘটনার দিন সালমার বাড়ির সীমানা দিয়ে হেঁটে আসার সময় সালমা আসামি আরিফকে গালি দেয়। পাল্টাপাল্টি গালিগালাজের এক পর্যায়ে আসামি বলপ্রয়োগ করে ডিসিস্ট এর গলা চেপে ধরে শ্বাসরুদ্ধ করে অজ্ঞান করে, পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে মহিলাকে তার পরনের ওড়না দিয়ে লেবু গাছের সাথে পেঁচিয়ে দেয়।